Advertisement

EXPLAINED: শুধুই কি অনির্বাণ? নাকি টলিউডে আরও অনেকে 'একঘরে'? ইন্ডাস্ট্রির 'কঠিন বাস্তব' জানুন

EXPLAINED: গত কয়েকদিন ধরেই টলিউড সরগরম একটা খবরেই, তা হল অনির্বাণ ভট্টাচার্যের হাতে নাকি কাজ নেই। সম্প্রতি মিউজিক ভিডিওর শ্যুটিং করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন অভিনেতা। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের খবর, বয়কটের মুখে পড়েছেন অভিনেতা। যদিও ফেডারেশন বলছে, এ সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না।

একঘরে কি বাকি ১২ জনও?একঘরে কি বাকি ১২ জনও?
মৌমিতা ভট্টাচার্য
  • কলকাতা,
  • 09 Jul 2025,
  • अपडेटेड 12:04 PM IST
  • গত কয়েকদিন ধরেই টলিউড সরগরম একটা খবরেই, তা হল অনির্বাণ ভট্টাচার্যের হাতে নাকি কাজ নেই।

গত কয়েকদিন ধরেই টলিউড সরগরম একটা খবরেই, তা হল অনির্বাণ ভট্টাচার্যের হাতে নাকি কাজ নেই। সম্প্রতি মিউজিক ভিডিওর শ্যুটিং করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন অভিনেতা। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের খবর, বয়কটের মুখে পড়েছেন অভিনেতা। যদিও ফেডারেশন বলছে, এ সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না। কিন্তু শুধুই কি অনির্বাণের ক্ষেত্রে এই দ্বিচারিতা নাকি যে ১৩ জন পরিচালক-প্রযোজক-অভিনেতারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই জুটছে এই ধরনের অন্যায় আচরণ?

বয়কট অনির্বাণ নাকি আরও অনেকে
আসল ব্যাপারটা হল, টলিউডের কিছু শিল্পীকে কলাকুশলীরা, বাংলায় যাঁদের আজকাল টেকনিশিয়ান বলা হয়ে থাকে, তাঁরা নাকি বয়কট করেছেন। কী করে জানা গেল বয়কট করা হয়েছে? কেউ ঘোষণা করেছে? না। কিন্তু ওই শিল্পীরা কোনও ফিল্মের বা ওয়েব সিরিজের নির্দেশক, চিত্রনাট্যকার, অভিনেতা, গীতিকার, গায়ক বা অন্য যে ভূমিকাতেই থাকুন না কেন – শ্যুটিংয়ের জন্য ডাকলে কোনও কলাকুশলী যাচ্ছেন না। এই বয়কটের আওতায় পড়ে যাওয়া শিল্পীদেরই একজন হলেন অনির্বাণ। একাধিক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা নিজেই জানিয়েছেন যে রঘু ডাকাতের পর তাঁর হাতে গত তিনমাস কোনও কাজ নেই। এমনকী তাঁর মিউজিক ভিডিও শ্যুটের জন্য কোনও টেকনিশিয়ান বা কলাকুশলীরা আসেননি। প্রশ্ন উঠতেই পারে এমন কী দোষ করলেন অনির্বাণ?

টার্গেটে রয়েছেন ১৩ জন
খুব স্পষ্টভাষায় যদি বলা হয়, তাহলে বলতে হয় অনির্বাণের একার ভাত মারার চেষ্টা চলছে না টলি পাড়ায়। বয়কট করার চেষ্টা করা হচ্ছে ১৩ জনকে। যে ১৩ জন কলকাতা হাইকোর্টের রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। কী রয়েছে সেই পিটিশনে? ভারতের একজন নাগরিকের এদেশে কাজ করে উপার্জন করার যে সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার রয়েছে, তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে তাঁদের বেলায়। কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এবার আসা যাক এই ১৩ জন কারা? সুদেষ্ণা রায়, সুব্রত সেন, কিংশুক দে, বিদুলা ভট্টাচার্য, আশিস সেন চৌধুরী, সুমিত দাম, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক সাহা, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, দেবাশীষ চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী, প্রসেনজিৎ মল্লিক, সৌরভ ভট্টাচার্য। এই নামগুলোর মধ্যে বেশ কিছু নাম অনেকের কাছেই অচেনা। কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে এই তালিকার কারোর কাজ করার অধিকার অন্যদের চেয়ে কম। সুতরাং বোঝা দরকার, একটা বিরাট অন্যায় ঘটে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা শিল্পে। সেটা হয়তো বা ঘটছে ফেডারেশনের মদতেই। 

Advertisement

হাইকোর্টে রিট পিটিশন
আসলে রিট পিটিশন, যেটা ১৩ জন মিলে হাইকোর্টে দায়ের করেছেন, বস্তুত সেই পিটিশন সরকারের বিরুদ্ধেই দাখিল করা যায়। কারণ নাগরিকের যে কোনও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। ফলে এই শিল্পীদের কাজ করতে না দেওয়ার পিছনে টলিউডের কুখ্যাত ফেডারেশন – যার কর্তা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাস থাকলেও, পিটিশন কিন্তু করা হয়েছে সরকার পিটিশনারদের অধিকার রক্ষা করছে না, এই অভিযোগে। এর আগেও দেখা গিয়েছে, গত বছরের জুলাইতে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের এক ছবির শ্যুটিং ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয় ফেডারেশন ও পরিচালকের মধ্যে। সেই সময় কাজও বন্ধ হয়ে যায় টলিপাড়ায়। তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি স্বয়ং সব পক্ষকে ডেকেছিলেন। সেই সভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে সরকার একখানা কমিটি গঠন করে দেবে এবং সেই কমিটি সব মিটিয়ে দেবে। কিন্তু সে কমিটিও গঠন হল না আর তা নিয়ে বিস্তর ইমেল পাঠানোর পরেও কোনও জবাব পাওয়া গেল না দেখে পরিচালকরা আদালতে এই পিটিশন দাখিল করলেন। এই পিটিশন যখন দাখিল করা হয় তখন পিটিশনার ছিলেন ১৫ জন, এখন তা কমে ১৩।

ফেডারেশন বনাম পরিচালক দ্বন্দ্ব
ফেডারেশনের গা জোয়ারি এতটাই যে একসময় রাহুল মুখোপাধ্যায়ের অন্যায়ের বিরুদ্ধে যাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন, সেই রাহুলই উল্টে ফেডারেশনের জয়গান করছেন এবং দিব্যি নিজের নতুন ছবির শ্যুটিং চালিয়ে যাচ্ছেন। গত বছর যাঁদের (বলা চলে যে সব পরিচালকদের) ফেডারেশনের অন্যায় নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছিল, তাঁদের অধিকাংশই মাঝপথে ভেগে গিয়েছেন। তা হোক, সকলের মেরুদণ্ড কখনও সমান শক্ত হয় না। তাই হারাধনের ১০টি ছেলের মতো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে তালিকায় রয়ে গেলেন ১৩ জন। 

হাইকোর্টের নির্দেশ
আর এই ১৩ জনের মধ্যে অনির্বাণ ভট্টাচার্য অন্যতম। যাঁকে একাধিক সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে, নাটকের মঞ্চে তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হননি এরকম দর্শকের সংখ্যা নেহাতই কম। ফেডারেশনের কোপে পড়ে তাই এখন অভিনেতার হাতে কোনও কাজই নেই। ইন্ডাস্ট্র্রির খবর, আর্থিক অবস্থাও খুব একটা ঠিক যাচ্ছে না অভিনেতার। সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি চললেও সুরাহা কিছুই হচ্ছে না। আপাতত নজর ১৬ জুলাইয়ের দিকে। মঙ্গলবার রাজ্যের হাইকোর্ট আরও একবার ফেডারেশন বনাম পরিচালক গিল্ড মামলায় পরিচালকদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। পুরোনো রায় বলবৎ রেখেছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। এ দিন তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিবকে তাঁর নির্দেশ, ১৬ জুলাই পরিচালকদের সঙ্গে বসতে হবে সচিবকে। তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনে খসড়া তৈরি করতে হবে। সেই খসড়া আদালতে জমা দিতে হবে তাঁকে। আপাতত তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিবের সঙ্গে পরিচালকদের আলোচনা কোনদিকে মোড় নেয়, সেই অপেক্ষাতেই সবাই, হয়তো অনির্বাণও। 

 

Read more!
Advertisement
Advertisement