'রিশতে মে তো হাম তুমহারে বাপ লাগতে হ্যায়...।' মিস্টার ব্যারিটোন, বলিউডের শাহেনশা, টল অ্যান্ড হ্যান্ডসম অমিতাভ বচ্চন এখন অশীতিপর। তা সত্ত্বেও দিব্যি স্টারডম সামলাচ্ছেন বিগ বি। রুপোলি পর্দায় তাঁকে দেখে কে বলবে, ৮২-তে পা দিয়েছেন। তবে সম্প্রতি নিজের ব্লগে অকপটে অমিতাভ বচ্চন জানালেন, বয়সের ভারে ন্যুব্জ তিনি। শরীরে পড়েছে বয়সের ছাপ। রোজকার যে কাজগুলি আগে সহজেই করে ফেলতে পারতেন, বর্তমানে সেগুলি তাঁর জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত সতর্ক এবং বারবার প্রচেষ্টা চালিয়ে নিত্যদিনের ছোটখাটো কাজ করতে হচ্ছে বলিউডের শাহেনশাকে।
১৭ অগাস্ট, রবিবার 'মিট অ্যান্ড গ্রিট' অনুষ্ঠানে অমিতাভ নিজের যে হেলথ আপডেট দিয়েছেন, তা শুনে মন ভারাক্রান্ত ফ্যানেদের। প্রতিদিনের রুটিনে বয়সজনিত কারণে নানা পরিবর্তন আনতে হয়েছে তাঁকে, জানিয়েছেন অমিতাভ।
বিগ বি-র অকপট স্বীকারোক্তি, 'আমার শরীর ধীরে ধীরে ব্যালান্স হারাচ্ছে। ফলে তা ঠিক করার জন্য ঘরের চতুর্দিকে সাপোর্ট বার লাগানো হয়েছে।' তবে শরীরের হাল বিগড়েছে, সেকথা বলতে গিয়েও হাস্যরস ছিল অমিতাভের গলায়।
অ্যাক্টিভ থাকার জন্য কী কী করেন অমিতাভ? অভিনেতা বলেন, 'রোজকার এমন অনেক রুটিন ওয়ার্ক রয়েছে যা কিছু বছর আগেও নিমেষে করে ফেলতাম, ভেবেছিলাম বয়স বাড়লেও তা সহজেই করে ফেলতে পারব। ভেবেছিলাম কোনও সমস্যা হবে না। বাট নৌ বেবি! একদিন এদিন-ওদিক হলেও ব্যাথা-বেদনা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আর ত দীর্ঘদিন ধরে চলতেই থাকে। অনেক এমন কাজই আগে সহজেই করে ফেলতাম কিন্তু এখন ১০ বার ভাবতে বসি।'
কোন কোন কাজের ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হন বর্ষীয়ান অভিনেতা? অকপট স্বীকারোক্তিতে অমিতাভ বলেন, 'প্যান্ট পরতে গেলে কষ্ট হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে দাঁড়িয়ে নয়, বসে বসে প্যান্ট পরি। না হলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যেতে পারি।'
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে এবং মনে কী প্রভাব পড়ে, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন মিস্টার বচ্চন। তিনি বলেন, 'মাঝে মাঝে নিজেই বিশ্বাস করতে পারি না। মনে মনে হাসি। তখন বুঝতে পারি ডাক্তাররাই সঠিক বলছেন। আগে যে কাজ সহজেই করতে পারতাম, তা এখন করতে গেলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করতে হয়। শারীরিক কোনও কাজ করতে গেলেই হ্যান্ড বারের উপর ভরসা করত হয়। ঘরের চতুর্দিকে তা লাগানো হয়েছে।' উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, 'ধরুন হাওয়ায় টেবিল থেকে কাগজ উড়ে মাটিতে পড়েছে। নীচু হয়ে তা কুড়িয়ে নিতে গেলেও হ্যান্ড বারের উপর ভরসা করতে হয়। সত্যিই এমনটা হচ্ছে আমার সঙ্গে। ফলে এই ধরনের শারীরিক কষ্টসাধ্য কাজ আজকাল কমিয়ে ফেলেছি আমি।'
৮২ বছরের অমিতাভ বচ্চন আরও বলেন, 'আমাদের সকলের সঙ্গেই এমনটা ঘটবে। আমি চাই এমনটা যেন কারও সঙ্গে না হয় তবে এটাই বাস্তব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটাই সকলের সঙ্গে হবে। আমাদের সকলেই একদিন ফুরিয়ে যেতে হবে। যেদিন প্রথম আমাদের পৃথিবীর আলো দেখানো হয়েছিল, সেদিন থেকেই বিষয়টি নির্ধারিত হয়ে রয়েছে।'
বয়সজনিত কারণে শারীরিক একাধিক সমস্যা তৈরি হলেও অভিনয় ছাড়তে রাজি নন অশীতিপর এই অভিনেতা। ঋভু দাশগুপ্তের 'সেকশন-৮৪' তাঁর আগামী ছবি। এরপর তাঁকে দেখা যাবে নাগ অশ্বীনের 'কলকি ২৮৯৮ এডি'-র সিকুয়েলে। 'কৌন বনেগা ক্রোড়পতি' শোটিও আপাতত চালিয়ে যেতে চান বিগ-বি। নিজের ট্রেডমার্ক ক্যারিশ্মা দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বিন্দুমাত্র সুযোগও ছাড়তে নারাজ শাহেনশা।