সোমবার থেকে হিংসার আগুনে জ্বলছে নেপাল। এই দেশের রাজধানী কাঠমান্ডু সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নেপাল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় এই দেশের যুব সমাজ। প্রতিবাদ ক্রমশঃ আন্দোলনে পরিণত হয়। আসলে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম সহ সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যার প্রতিবাদে Gen-Z-রা রাস্তায় নামে। শুধু রাজধানী নয়, বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যত্রও। নেপালের এরকম পরিস্থিতি দেখে আর চুপ করে থাকতে পারলেন না বলিউড অভিনেত্রী মণীষা কৈরালা, তিনি নিজেও এই দেশেরই বাসিন্দা।
মণীষা কৈরালার পোস্ট
মণীষা কৈরালা তাঁর ইনস্টাগ্রামে রক্তে মাখামাখি এক জুতোর আবেগঘন ছবি শেয়ার করেছেন। শুধু তাই নয়, দেশের এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে অভিনেত্রী তীক্ষ্ণ মন্তব্য করেন। নেপালি ভাষায় মণীষা লেখেন, আজ নেপালের জন্য একটি কালো দিন। যখন জনগণের কন্ঠস্বর, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং ন্যায়বিচারের দাবির জবাবগুলি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, এই দেশেরই বাসিন্দা মণীষা।
নেপালের বাসিন্দা মণীষা
১৯৭০ সালের ১৬ অগাস্ট মণীষা কৈরালা রাজধানী কাঠমান্ডুতে জন্মগ্রহণ করেন। অভিনেত্রীর দাদু বিশ্বেশ্বর প্রসাদ নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং বাবা প্রকাশ কৈরালা ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৯ সালে মণীষা নেপালি সিনেমা ফেরি ভেতৌলা দিয়ে অভিনয় জীবনে পা রাখেন। এরপর সুভাষ ঘাইয়ের ছবি সওদাগর-এর হাত ধরে বলিউডে ডেবিউ হয় মণীষার। এর পাশাপাশি নেপালের একাধিক সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত এই বলিউড অভিনেত্রী।
নেপালের বর্তমান পরিস্থিতি
চাপের মুখে অবশেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল কেপি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন নেপাল সরকার। সোমবার রাতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব সহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফের চালু হচ্ছে নেপালে।
কী হয়েছিল
সম্প্রতি নেপালের ওলি সরকার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার (এক্স) সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দিন তিনেক আগে এই প্ল্যাটফর্মগুলিকে রেজিস্ট্রেশনের নির্দেশ দিয়েছিল নেপাল সরকার। সময়সীমা শেষ হলেও কোনও সংস্থাই আবেদন না করায় নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে প্রতিবাদে নামেন ছাত্র-যুবরা। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি ক্রমশ পুলিশ-প্রশাসনের হাতের বাইরে চলে যায়। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহত ও ৩০০ রও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা নামাতে হয় কাঠমান্ডুতে। পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।