২০০৯ সালে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন প্রজন্মের মধ্যে আলোড়ন ফেলেছিল অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ম্যাডলি বাঙালি সিনেমাটি। বাংলা রক মিউজিক নিয়ে একদল তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন কীভাবে বাস্তবে পরিণত হয়, সেটাই দেখানো হয়েছিল এই ছবিতে। ছবিতে নতুন মুখের পাশাপাশি ছিল কিছু পুরনো মুখও। ছিলেন অঞ্জন দত্ত নিজেও। সেই নতুন মুখের ভিড়ে ছিলেন অনুসূয়া সেনগুপ্ত। ম্যাডলি বাঙালি ছবির পর যাঁকে দর্শকেরা ভুলেই গিয়েছিলেন। তবে অঞ্জনের সেই ম্যাডলি বাঙালির তানিয়া আবার নতুন করে খবরের শিরোনাম এসেছেন। প্রায় ভুলতে বসা সেই অভিনেত্রী কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করে এসেছেন।
৭৭তম কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে অঞ্জন দত্তের ছবির নায়িকা অনুসূয়া সেনগুপ্ত। ‘দ্য শেমলেস’ ছবিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্যই অনসূয়ার ঝুলিতে এসেছে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। উল্লেখ্য, অনসূয়াই প্রথম ভারতীয় যিনি ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে প্রথমবার সেরা অভিনেত্রী হিসাবে সম্মানিত হলেন। অথচ ১৫ বছর আগে ম্যাডলি বাঙালিতে প্রথমবার দেখা গিয়েছিল অনুসূয়াকে। কলকাতাতেই জন্ম অনুসূয়ার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক পাশ করার পর অনুসূয়া পা রাখেন গ্ল্যামার দুনিয়ায়।
২০০৯ সালে অঞ্জন দত্তের ম্যাডলি বাঙালি ছবিতে প্রথম ব্রেক পান অনুসূয়া। পার্শ্ব চরিত্র তানিয়া-র ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অনুসূয়াকে। পরিচালক অঞ্জন দত্তের কথায় অভিনয়টা খুব ভালোবেসে করেন অনুসূয়াষ এটাই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। এরপর ২০১৩ সালে অনুসূয়া মুম্বই পাড়ি দেন। এরপরে তিনি নেটফ্লিক্সের শো মাসাবা মাসাবা-তে প্রোডাকশন ডিজাইনিং টিমে কাজ করেন। অনুসূয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে ২০২০ সালে তাঁর কাছে সুযোগ আসে দ্য শেমলেস-এর। এটার জন্য অডিশন দিয়েছিলেন তিনি। অনুসূয়া ছিলেন এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে। এই ছবির পরিচালক ছিলেন বুলগেরিয়ার কনস্ট্যানটিন বোজানোভা।
দ্য শেমলেস ছবিতে অনুসূয়া যৌন কর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যিনি এক পুলিশকর্মীকে ছুরি মেরে দিল্লির যৌনপল্লী থেকে পালিয়ে যায়। কানে পাওয়া এই সম্মান অনুসূয়া সমকামী সম্প্রদায়ের সাহসিকতার জন্য উৎসর্গ করেছেন। রবিবার কান থেকে ফিরে দিল্লি বিমানবন্দরে এএনআইকে অনুসূয়া বলেন, খুব ভাল লাগছে এই পুরস্কার জিতে। এখন তো আমি নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে চাই। ২ দিন বিশ্রাম নেওয়ার পর আবার আমি কাজে ফিরব। সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।