বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আকস্মিক মৃত্যুর পর মানসিক স্বাস্থ্য রীতিমতো লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছে। অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী কোনও না কোনও সময়ে মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। অনেকেই হয়ত জানেন না টলিউড অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও এই অবসাদের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। অভিনেত্রীর কথায়, মানসিক অবসাদ কোনও ট্যাবু নয় বরং এটাকে সাধারণ অসুস্থতার মতোই দেখা উচিত।
পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর হঠাৎই সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। রাজ বিয়ে করেন শুভশ্রীকে। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কষ্ট নিতে পারেননি মিমি। তিনি অবসাদে চলে যান। এমনকী সেই সময় মিমি নিজেকে অভিনয় জগৎ থেকেও গুটিয়ে নিয়েছিলেন। রীতিমতো ডুবতে বসেছিল তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার। সেই সময় নিজের অবসাদ কাটাতে মনোবিদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মিমি।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে মিমি তাঁর অবসাদের সময়কার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। অভিনেত্রী বলেন, 'প্রথমবার আমি যখন মনোবিদের কাছে গিয়েছিলাম তখন খুব চুপচাপ ছিলাম। এটা নিয়ে কখনও আমি আমার মা-বাবার কাছেও কোনও কথা বলিনি। আমি যখন মাকে এটা বলি তখন মাও বুঝতে পারিনি যে আমি ঠিক কী অনুভব করছি। আমাকে মনোবিদ জানিয়েছিলেন যে আমি যাতে আমার ভাবনাগুলি অন্যদিকে নিয়ে যাই এবং যেটা আমাকে ভালো রাখবে সেই কাজই যাতে করি।'
মিমি এও জানান যে সমাজ এখনও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হয়নি। অভিনেত্রী-সাংসদ বলেন অবসাদের সঙ্গে লড়াই করার সময় চোখের জল সহজে আসত না। তিনি নিজেকে আরও দমবন্ধ পরিস্থিতিতে অনুভব করছেন। মিমি এও বলেন, 'অবসাদে থাকার সময় আমি ঠিকমতো খাবার খেতাম না, ঠিকমতো ঘুমোতে পারতাম না। চিরকাল নিজেকে এমন চিন্তায় ডুবিয়ে রেখেছিলাম যা কখনই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। এরকমও মনে হত যে যদি বিছানা ছেড়ে আমি উঠি হয়ত সমস্যা আরও বাড়তে পারে। পুরো দিন আমি একাই কাটাতাম। আমার সবসম এটা মনে হত যে আমার একটা ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক ও ডুবতে থাকা কেরিয়ারের জন্য আমাকে মনোবিদের কাছে যেতে হচ্ছে শুনলে মানুষ কীভাবে আমাকে গ্রহণ করবে।' তবে মিমি এও জানান যে তিনি নিজের ইচ্ছার জোরে এবং মনোবিদদের সহায়তায় এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং এখন তিনি টলিউডের একজন সফল অভিনেত্রী।
মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগলে তার যত্নের প্রক্রিয়া হয় আলাদা বলেই মনে করেন মিমি। যেমন নিয়মিত ধ্যান করতে পারলে ভাল হয় বলেই মনে করেন অভিনেত্রী। তিনিও নিজেও সেটা করে থাকেন। এছাড়া মিমি তাঁর অবসর সময় কাটান তাঁর পোষ্যদের সঙ্গে।