ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জনপ্রিয় শিল্পী ওস্তাদ রশিদ খান প্রয়াত হন মঙ্গলবার। দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মাত্র ৫৬ বছর বয়সেই রশিদ খান সুরের জগৎ ছেড়ে চিরতরে হারিয়ে গেলেন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি রশিদ খান জনপ্রিয় হয়েছিলেন বলিউডের একটি গানে। যে গানও আজও সমানভাবে সকলের হৃদয় জুড়ে রয়েছে। পরিচালক ইমতিয়াজ আলির যব উই মেট সিনেমার আওগে যব তুম সাজনা গানটি গেয়েছিলেন রশিদ খান। এই গানটি ওস্তাদজির কন্ঠে যেন প্রাণ খুঁজে পেয়েছিল। রশিদ খানের মৃত্যুর পর বারবার মনে পড়ছে এই গানটির কথাই।
যব উই মেট-ছবিতে সব গানেই সুর দিয়েছিলেন বাঙালি সুরকার প্রীতম চক্রবর্তী। এই ছবির সব গানে সুর দিয়েছিলেন তিনি। তবে আওগে যব তুম সাজনা গানের সুরকার প্রীতম ছিলেন না। ফৈয়জ আনওয়ারের লেখা এই গানে সুর দিয়েছিলেন সন্দেশ শান্ডিল্য। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে সন্দেশ শান্ডিল্য জানিয়েছিলে, ফৈয়জ আনওয়ারের ওই লেখা গান বলিউডের কোনও গায়ককে দিয়েই গাওয়ানো সম্ভব নয়। এই গানের জন্য যে কন্ঠস্বর দরকার তা হতে হবে ভারী, অথচ যিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গুলে খেয়েছেন। সেই হিসাবে রশিদ খানের কথআই সবার প্রথম মনে আসে তাঁর।
রশিদ খান এই গানের জন্য মোটা টাকা পারিশ্রমিক দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় পরিচালক ইমতিয়াজ ও প্রযোজকের অত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। পরে রশিদকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করানো হয়। সব শুনে হাসি মুখে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সৃষ্টি হয়েছিল বলিউডের এভারগ্রিন এই গান। প্রথমে গানের রিহার্সাল হয়েছিল মুম্বইতে। পরে গানটি কলকাতায় রেকর্ড করা হয়। সন্দেশ সুর দিলেও গানটি গাওয়ার সময়ে রশিদ নিজে থেকে কিছুটা ইম্প্রোভাইজও করেন বলে জানা যায়। তৈরি হয় অনবদ্য একটা গান।
আওগে যব তুম সাজনা গানটি কোনওদিন মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে যাবে না। এমনই এই গান। বর্তমানে বলিউড হোক বা টলিউড যে কোনও গানের স্থায়ীত্ব মানুষের মনে বেশিদিনের জন্য হয় না। তবে রশিদ খানের গাওয়া এই আওগে যব তুম সাজনা গানটি ব্যতিক্রম। বলিউডে অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে এই গান। সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলের যুগে আজও এই গান সমানভাবে প্রাধান্য পায়।