
ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিতর্ক সভায় গিয়ে একেবারে ছয় হাঁকালেন জনপ্রিয় গীতিকার জাভেদ আখতার। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে আল্লাহর চেয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনেক ভাল। জাভেদের এই মন্তব্য রীতিমতো ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়। প্রসঙ্গত, ‘Does God Exits?’ বা ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে কী? এই বিষয়ের উপর শনিবার এক বিতর্কসভার আয়োজন করে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য লাল্লনটপ’। সেখানে অংশ নিয়েছিলে গীতিকার জাভেদ আখতার ও ইসলাম বিশেষজ্ঞ মুফতি শমাইল নদবী। ঈশ্বর ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস নিয়ে দুই পক্ষের তর্ক-বিতর্ক, স্বপক্ষে যুক্তি নিয়ে বেশ জোরদার প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলা এই বিতর্ক সভায় আস্থা, নৈতিকতা, মানবিকতার অবক্ষয়ের মতো একাধিক বিষয় উঠে আসে। এখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে গাজা যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন জাভেদ। তিনি বলেন, সেখানে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছে, আর এরকম অবস্থায় দয়ালু ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কথা বলা তাঁর বোঝার বাইরে, জানান জাভেদ। আসলে জাভেদ আখতার বরাবরই নাস্তিক প্রকৃতির মানুষ হিসাবেই পরিচিত। জাভেদ আখতার বলেন, যদি আপনি (ঈশ্বর) সর্বশক্তিমান হন, সর্বত্র আপনার উপস্থিতি হয়, তাহলে গাজাতেও আপনি রয়েছেন। সেখানে বোমার আঘাতে শিশুদের ছিন্নভিন্ন হওয়া শরীর দেখেছেন। তারপরও ঈশ্বর কিছুই করেননি। এরপরও আপনি (ঈশ্বর) চাইছেন আপনার উপর আমি বিশ্বাস রাখি?
এরপরই জাভেদ বলেন, আল্লাহর চেয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনেক ভালো। অন্তত তিনি কিছু তো খেয়াল রাখেন। এই তর্ক চলাকালীন জাভেদ আখতার বারংবার ধর্মকে সামনে রেখে হিংসার ঘটনাগুলি তুলে ধরছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেন, সব প্রশ্ন এসে কেন ঈশ্বরে থেমে যায়? এরপর আর প্রশ্ন কেন করা হয় না? এ কেমন ঈশ্বর যিনি শিশুদের বোমা হামলায় মরতে দেখেন? যদি তিনি থাকেন এবং এই সব কিছু হতে দেখেন তাহলে ওনার না থাকাটাই শ্রেয়। এর জবাবে মুফতি আল্লাহকে নির্দোষ বলে উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহ খারাপ সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু তিনি নিজে খারাপ নন। হিংসা, ধর্ষণ-সহ অন্যান্য অপরাধ মানুষের বেছে নেওয়া। তাঁর অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কে বিজ্ঞান এবং ধর্মগ্রন্থ কোনও মানদণ্ড হতে পারে না। বিজ্ঞান ভৌতজগতের মধ্যে সীমাবদ্ধ, কিন্তু ঈশ্বর এর বাইরে।
আলোচনার শুরুতে মুফতি শমাইল নদবী বলেন যে, বিজ্ঞান বা ধর্মীয় ধর্মগ্রন্থ কোনটিই ঈশ্বরের প্রশ্নে একটি সাধারণ মানদণ্ড হিসেবে কাজ করতে পারে না। বিজ্ঞান কেবল ভৌত জগতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, অন্যদিকে ঈশ্বর তার সংজ্ঞার বাইরে। এদিকে, ধর্মীয় ধর্মগ্রন্থগুলি তাদের বিশ্বাস করতে পারে না যারা ঐশ্বরিক প্রকাশকে জ্ঞানের উৎস হিসাবে গ্রহণ করে না। ঈশ্বরের অস্তিত্বকে ঝেড়ে ফেলে জাভেদ বলেন, প্রকৃতিতে ন্যায় বলে কিছু নেই। বাঘ হরিণ খেতে সেই হরিণ হত্যার ন্যায়বিচার পায় না। নৈতিকতা ট্র্যাফিক নিয়মের মতো। সমাজের জন্য প্রয়োজনীয়, ফলে মানুষ তা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু প্রকৃতিতে এর কোনও অস্তিত্ব নেই।