Advertisement

Aritra Dutta Banik: 'র‍্যাগিং নিয়ে বরাবরই উদাসীন যাদবপুর,' বিস্ফোরক JU-প্রাক্তনী টলিউডের অরিত্র

Aritra Dutta Banik: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘুম উড়িয়েছে সকলের। ভারতের অন্যতম নামী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্দরের অব্যবস্থা দেখে রীতিমতো তাজ্জব সবাই। বারবার উঠে আসছে র‌্যাগিং-সহ নানা প্রসঙ্গ। এবার সেই প্রসঙ্গে bangla.aajtak.in-এর কাছে মুখ খুললেন অরিত্র দত্ত বণিক।

অরিত্র দত্ত বণিকঅরিত্র দত্ত বণিক
মৌমিতা ভট্টাচার্য
  • কলকাতা,
  • 21 Aug 2023,
  • अपडेटेड 3:17 PM IST
  • যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘুম উড়িয়েছে সকলের।
  • ভারতের অন্যতম নামী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্দরের অব্যবস্থা দেখে রীতিমতো তাজ্জব সবাই। বারবার উঠে আসছে র‌্যাগিং-সহ নানা প্রসঙ্গ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘুম উড়িয়েছে সকলের। ভারতের অন্যতম নামী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্দরের অব্যবস্থা দেখে রীতিমতো তাজ্জব সবাই। বারবার উঠে আসছে র‌্যাগিং-সহ নানা প্রসঙ্গ। এবার সেই প্রসঙ্গে bangla.aajtak.in-এর কাছে মুখ খুললেন অরিত্র দত্ত বণিক। যাকে আমরা চিনি ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ থেকে শুরু করে ‘চ্যালেঞ্জ’ কিংবা ‘খোকাবাবু’-র মতো বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করা থেকেই। ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ জুনিয়র (২০০৭)-এ সঞ্চালনাও করেছিলেন অরিত্র। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়াও। যাদবপুরের অন্দরে কী কী ঘটে তারই হদিশ দিলেন তিনি। 

যাদবপুরে কী আগেও র‌্যাগিং সংস্কৃতি ছিল?

অরিত্র: ক্যাম্পাসে র‍্যাগিং হয়নি। আমি যে কটা বছর পড়েছি, ছাত্রদের দ্বারা আমি কোনওদিন র‍্যাগিং হইনি। আমি দেখিওনি আমার আশেপাশে যে ক্যাম্পাসে র‍্যাগিং হয়েছে বলে। এই ঘটনাটা যেটা ঘটেছে, সেটা হস্টেলে ঘটেছে, হস্টেলে আমি কোনওদিনই ছিলাম না। হস্টেলে আগে এ ধরনের ঘটনা যে হত তার অভিযোগ আগেও বহুবার এসেছে। আমার সঙ্গে কোনওদিন র‍্যাগিং হয়নি, কারণ হতে পারে আমি পরিচিত মুখ সেই কারণে। মেইন ক্যাম্পাসে র‍্যাগিং হচ্ছে এরকম আমি কোনওদিন দেখিনি। 


হস্টেলে যে র‍্যাগিং হত এটা কী কোনওদিন কানে এসেছিল?

অরিত্র: র‍্যাগিং হচ্ছে এটা শুধু কানে এসেছিল তা নয়, এই নিয়ে বহুবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়েছিল।  যাদবপুরের প্রশাসনিক বড় উদাসীন এই বিষয়ে। অর্থাৎ চিঠিটা চিঠির জায়গাতেই পড়ে থাকে পদক্ষেপ হয় না। এর আগেও বহু ছাত্র-ছাত্রী যাদবপুর কর্তৃপক্ষ, অ্যান্টি-র‍্যাগিং সেলে বহু চিঠি জমা দিয়েছে, কিন্তু আদপে কোনও লাভ হয়নি, ওই হলে দেখা যাবে এই মানসিকতা নিয়েই তো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চলে, তাই হলে দেখা তত্ত্বেই এরা কেউই কোনওদিন গা করেনি। ডেপুটেশন-চিঠি বহুবার বহু জায়গায় দেওয়া হলেও পদক্ষেপ বলতে কিছুই করা হয়নি। 

যাদবপুরে প্রাক্তনীদের দাদাগিরি নিয়ে কী বলবে?

Advertisement

অরিত্র: সবার আগে যেটা আমি বারবারই বলেছি যে কর্তৃপক্ষ যারা আছেন তাদের মধ্যে কড়াভাবে কাজ করার মানসিকতার প্রয়োজন। ইউজিসি বা কোর্ট তারা তো যা যা গাইডলাইন আছে বা রায় আছে তারা সেগুলি দেবে, অনেক আগে থেকেই ইউজিসির গাইডলাইনে ছিল যে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা হস্টেলে রাখতে হবে বা প্রাক্তনীরা আদৌও হস্টেলে প্রবেশ করবেন কিনা সেই সব নিয়ে বহু গাইডলাইন রয়েছে, কিন্তু গাইডলাইন যদি নাম কে ওয়াস্তে শুধু কাগজে লিখিত থাকল আর বাস্তব চিত্রটা যদি অন্যরকম হয় তাহলে তো সমস্যা যাবেই না। এই যে প্রাক্তনীরা হস্টেলে রয়েছে, তাদের পিছনে কোনও রাজনৈতিক শক্তি না থাকলে তারা কীভাবে রয়েছে। আমার কোনওদিন বুকের পাটা হবে না সরকারি ক্যাম্পাসে ঢুকে হুজ্জুতি করার, এগুলো সরকারের সম্পত্তি, এখানে ঢুকে আমি দিনের পর দিন দাদাগিরি করে যাব যদি না আমার পিছনে কোনও বিগ বসের হাত থাকে। এই বিগ বসেরা কারা সেটাকেই খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এটা কেন করতে চাইছে না যাদবপুর, এর পিছনে কী অভিসন্ধি রয়েছে তা সত্যিই জানা নেই। যে সব বহিরাগত বা প্রাক্তনীরা ঢুকে এইসব করছে তাদের পিছনে অবশ্যই বহিরাগত শক্তির প্রভাব রয়েছে। কোনও ছাত্রের সাহসই হবে না একা এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটাবে। 

আগেও তো সিসি ক্যামেরা বসানো সহ বেশ কিছু নিয়ম আনার চেষ্টা করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে...

অরিত্র: সিসি ক্যামেরা-ফ্ল্যাশ লাইট বসানো হলেও পরবর্তীকালে নতুন ভিসি এসে সেগুলি খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এখনও তো বহু পড়ুয়ারাই এগুলি চাইছে না। হয়ত এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে।  তবে কড়া নিরাপত্তা দরকার বলেই আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, একটা বুক অফ রেকর্ডস অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। বাইরে থেকে কারা আসছেন, কেন আসছেন তার রেকর্ড অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। কারণ কোনও বিশৃঙ্খলা হলে ওই ৫৫ একর জমির মধ্যে আমি ধরব কাকে। সবাইকে ধরে সাসপেন্ড করে দিতে তো পারি না। তবে পড়ুয়ারা যারা এখন বোঝাচ্ছেন যে এটা করা উচিত নয়, ওটা করা উচিত নয়, যারা মাদক ক্যাম্পাসে ঢোকাচ্ছেন তাদের কী অভিসন্ধি আছে আমি তো জানি না। যদিও এটা অধিকাংশ পড়ুয়ার মত নয়, কিছু অল্প সংখ্যক পড়ুয়াই এটা চাইছেন। তা বলে এটাও নয় যে প্রযুক্তি বসিয়ে দিয়ে ছাত্র সমাজের গলা চিপে ধরলাম, ছাত্র ও প্রশাসনের বোঝাপড়ার মাধ্যমেই যাদবপুরে সুস্থ পরিবেশ গড়ে উঠতে পারে। যাদবপুর যদি কোনও রাজনৈতিক উস্কানিতে পা না দিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছাত্রদের স্বার্থে এবং অপরাধমূলক কাজকর্মকে বাগে আনার জন্য সম্পূর্ণ একটি মনিটরিং প্রয়োগ করে তবে সবদিক দিয়েই সুরক্ষা ব্যবস্থা কড়া থাকবে। কিন্তু যখনই কোনও রাজনৈতিক প্রভাব চলে আসবে এর মধ্যে তখনই কিন্তু এই ধরনের কাজকে রোখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। 

যাদবপুরে সিসি ক্যামেরা বসছে, প্রাক্তন সেনাকর্মীরা হস্টেল পাহারা দেবেন, তাতেও কি র‍্যাগিং কমবে? কী মনে হয়?

অরিত্র: র‍্যাগিং-এর দুটো দিক আছে। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব আইআইটিতে পড়েছেন, সেখানকার র‍্যাগিং আরও ভয়ানক র‍্যাগিং। কলকাতার বুকে স্বপ্নদীপের ঘটনা ঘটেছে বলে মিডিয়া কথা বলতে পারছে। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় আত্মহত্যার সংখ্যাটা আরও বেশি। তাই আমার মতে র‍্যাগিং-এর দুটো দিক, অন্তত আমার অভিজ্ঞতা থেকে। এক হলো আমার সঙ্গে র‍্যাগিং হয়েছে, সেটা আমার মাথায় অবসাদ-ক্রোধের মতো বসে রইল, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষে যখন যাচ্ছি তখন আমারও র‍্যাগ করার অধিকার রয়েছে, আমিও করব এটা মাথায় ঢুকে থাকছে। কোনও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বা কড়া পদক্ষেপ যেহেতু করা হয় না, তাই ধরেই নেওয়া হয় যে এটা হবেই। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্টও করছে যে একটু র‍্যাগ হলে কী হয়েছে। র‍্যাগিংকে সমাজে যে গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে এসেছি, আমাদের বাবা-জ্যাঠাদের সঙ্গে কথা বললেও বলবে যে এটা নিয়ে কথা বলার কী আছে এটা তো হয়, একটু সয়ে নিতে হয়। এই যে সয়ে নেব না এটা রাতারাতি সম্ভব নয়। মিলিটারি বসিয়ে দিলেও হবে না, হয়ত শারীরিক র‍্যাগিং বন্ধ হবে মানসিক র‍্যাগিং চলবে। আসলে কুশিক্ষাটা হঠাৎ আসেনি, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এসেছে, তাই কুশিক্ষার বিপক্ষে যদি সুশিক্ষা তৈরি করতে হয় তবে সেটাও প্রজন্ম ধরেই করতে হবে। কুশিক্ষাকে বদলাতে হলে একটু সময় লাগবে। সিসি ক্যামেরা বসিয়ে দিলাম মানেই দুধর্ষ হয়ে গেল এরকমটা নয়। আমি এরকম অনেকের থেকে শুনেছি যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহু বছর আগে পাশ করে যাওয়ার পর তারা হস্টেলে আসে, র‍্যাগ করে , কান ভাঙানি দেয় চলে যায়। তাই এগুলো বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে কঠোর থেকে কঠোরতম হতে হবে। অভিযোগ পাওয়ার পর ও দোষ প্রমাণ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীকে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ যদি করা হয় তবেই কাজ হবে। এছাড়া অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি, কাউন্সেলিং এই ধরনের গর্ভনর বডিকে আরও সক্রিয় থাকতে হবে এইসব বিষয়ে।  

Advertisement

Read more!
Advertisement
Advertisement