বছরভর আপামর বাঙালি ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষে মুখিয়ে থাকেন, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (Kolkata International Film Festival) দিকে। আসছে ৩০ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (30th KIFF)। তবে এবার কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার (Kolkata International Book Fair) ছায়া পড়ল চলচ্চিত্র উৎসবেও। প্রতিবেশী দেশ- বাংলাদেশের কোনও ছবি প্রদর্শিত হবে না এবারের সিনেমার পার্বণে (Film Festival)।
জানা যাচ্ছে এবছর মাত্র একটি বাংলাদেশী ছবির (Bangladeshi Film) আবেদন জমা পড়েছিল, কিন্তু তা প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়নি। এবছর ঢাকার শঙ্খ দাশগুপ্ত তাঁর 'ডিয়ার মালতি' (Dear Maloti) ছবিটি পাঠিয়েছিলেন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতার জন্যে। যদিও ছবিটি ভারতের ৫৫ তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (IFFI) প্রদর্শিত হবে।
টানা পাঁচ বছর ধরে, বাংলাদেশী ছবি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে প্রদর্শিত হয়েছে। যার মধ্যে দুটি বাংলাদেশী ছবি পুরস্কৃত হয়েছিল। ২০২০ সালে, রেজওয়া শাহরিয়ার সুমিতের 'নোনাজলের কাব্বো' (The Salt In Our Waters) ছবিটি এশিয়ান বিভাগে নির্বাচিত হয়ে NETPAC পুরস্কার পান।
২০২২ সালে, ২৮ তম চলচ্চিত্র উৎসবে, মুহাম্মদ কাইয়ুমের 'কুড়া পাখির শূন্যে উড়া' (The Golden Wings of Watercocks) গোল্ডেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার পুরস্কার পেয়েছে, সেরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে। এরপর এশিয়ান সিলেক্ট বিভাগে আরও বেশ কিছু বাংলাদেশী ছবি মনোনয়ন পায়। যার মধ্যে রয়েছে এন রাশেদ চৌধুরীর 'চন্দ্রাবতী কথা' (২৫ তম KIFF), শবনম ফেরদৌসির 'আজব কারবানা' (২৭ তম KIFF), ফাখরুল আরেফিন খানের 'জেকে ১৯৭১' (২৮ তম KIFF) এবং সৈয়দা নিগার বানুর 'নোনা পানি' (২৯ তম KIFF)।
সিনে দুনিয়ার সূত্র বলছে, চলচ্চিত্র উৎসব সিনেমা প্রদর্শনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, ওপার বাংলার ছবির স্ক্রিনিংয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। এছাড়া যেহেতু, IFFI-তে এই ছবিটির এশিয়ান প্রিমিয়ার হবে, কিফ-র প্রতিযোগিতায় এমন কোনও ছবি মনোনীত হয় না, যা আগে কোথাও প্রিমিয়ার হয়েছে। এজন্যে নাকি এই ছবি মনোনীত হয়নি।
৩০ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হবে ৪ থেকে ১১ ডিসেম্বর অবধি। প্রতিবারের মতো এবছরও থাকছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন উন্নতমানের চলচ্চিত্র। এবছর চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপার্সন রূপে দেখা যাবে গৌতম ঘোষকে এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থাকছেন কো-চেয়ারম্যান হিসাবে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরেই আওয়ামি লিগ সরকারের পতন ঘটে। তারপরে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলাদেশে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার চলছে। বাংলাদেশে পুরোপুরি শান্ত বলা যাবে না, এখনও বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি লেগেই আছে।