Advertisement

Mahua Roy Choudhury: পুড়ে মারা গেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী, দুর্ঘটনা না ষড়যন্ত্র; আজও রহস্য

Mahua Roy Choudhury: 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' সিনেমায় ঘোড়সওয়ার হয়ে যে মেয়েটা বাংলা সিনেমায় এসেছিল, সে যে তাঁর প্রতিভা দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সকলের মন জয় করবে সেটা অনেকেই ভাবতে পারিনি। এক্কেবারে আসা, দেখা, জয় করা। তবে কিনা নিজস্বতা বজায় রেখে। তার পরই দ্রুত প্রস্থান।

মহুয়া রায় চৌধুরীমহুয়া রায় চৌধুরী
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 22 Jul 2023,
  • अपडेटेड 1:41 PM IST
  • 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' সিনেমায় ঘোড়সওয়ার হয়ে যে মেয়েটা বাংলা সিনেমায় এসেছিল, সে যে তাঁর প্রতিভা দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সকলের মন জয় করবে সেটা অনেকেই ভাবতে পারিনি।

'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' সিনেমায় ঘোড়সওয়ার হয়ে যে মেয়েটা বাংলা সিনেমায় এসেছিল, সে যে তাঁর প্রতিভা দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে সকলের মন জয় করবে সেটা অনেকেই ভাবতে পারিনি। এক্কেবারে আসা, দেখা, জয় করা। তবে কিনা নিজস্বতা বজায় রেখে। তার পরই দ্রুত প্রস্থান। এরকমই এক বর্ষামুখর রাতে ভয়ঙ্করভাবে আগুনে পুড়ে এগারোটা দিন মৃত্যুর সঙ্গে দ্বন্দ্বযুদ্ধ শেষ করে অগুনতি মানুষকে চোখের জলে ভাসিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন সেই অভিনেত্রী। কথা হচ্ছে মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে। ২২ জুলাই এইদিনেই তিনি মারা যান। তবে তাঁর মৃত্যু আজও রহস্য হয়ে রয়েছে। 

টলিউড অভিনেত্রীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাঁদের প্রাণ গিয়েছে অকালে। তবে মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যুটা এখনও রহস্যের গভীর অন্ধকারেই থেকে গিয়েছে। আজ থেকে ৩৬ বছর আগের রাতে ঠিক কী ঘটেছিল তার উত্তর নেই টলিউডের কাছে। তবে মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যু সে সময় অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল যার উত্তর মেলেনি আজও।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে শুরু হয়েছিল মহুয়ার অভিনয় কেরিয়ার। তার বাবা অর্ধেন্দু চট্টোপাধ্যায় ছিলেন নামকরা এডিটর‌। তবে মহুয়া মানুষ হয়েছিলেন অর্ধেন্দুর অধস্তন কর্মচারী নীলাঞ্জন রায় চৌধুরীর কাছে। ৭ বছর বয়সে পাড়ার জলসায় তিনি সুচিত্রা সেন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়দের মত শিল্পীদের সামনে নৃত্য পরিবেশনা করেছিলেন। তখন তার নাম ছিল শিপ্রা রায়চৌধুরী। তরুণ মজুমদারের নজরে পড়ে ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ এর নায়িকা হয়ে উঠলেন শিপ্রা। তার নতুন নাম হল মহুয়া রায়চৌধুরী। সন্ধ্যা রায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়রা নিজের হাতে তাকে অভিনয় শিখিয়েছিলেন। প্রথম ছবির পর ‘দাদার কীর্তি’তে এল অভিনয়ের সুযোগ। এরপর আর মহুয়াকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘বাঘ বন্দী খেলা’, ‘সেই চোখ’, ‘বেহুলা লখিন্দর’, ‘পাকা দেখা’, ‘সুবর্ণলতা’, ‘সাহেব’, ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘প্রায়শ্চিত্ত’ থেকে অঞ্জন চৌধুরীর ‘শত্রু’, ৯০ টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।  

অনেক তাবড় তাবড় অভিনেত্রীদের পর অন্যতম সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী বলা হত মহুয়াকে। দর্শকেরা তাঁর জন্য হলে আসতেন ছবি দেখতে। মহুয়ার পারিশ্রমিকও ছিল বেশ মোটা অঙ্কের। মহুয়া রায়চৌধুরীর সঙ্গে যখন সেই দুর্ঘটনা ঘটলো তখনও তার হাতে ছিল ১৫ টি ছবি।

Advertisement

যখন সবে ডানা মেলতে শুরু করেছে মহুয়ার ছবিজীবন, তখনই বিয়ে করে নিলেন প্রেমিক তিলক চক্রবর্তীকে৷ তাঁদের কৈশোরের প্রেম পরিণয়ে রূপান্তরিত হয় কৈশোরেই৷ ১৯৭৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে পরিবারের অমতে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন মহুয়া৷ বাংলা ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করা তিলক পরে চাকরি করতেন ব্যাঙ্কে, কিশোরকণ্ঠী হয়ে গান গাইতেন মঞ্চে৷ বিয়ের পরের বছর নিজের জন্মদিন ২৪ সেপ্টেম্বরেই মা হলেন মহুয়া৷ গোঁড়া ইস্টবেঙ্গল ভক্ত ফুটবলপাগল মহুয়া ছেলের নাম রেখেছিলেন ‘গোলা’৷ ভাল নাম ‘তমাল’৷ তিলক ও মহুয়ার নাম মিলিয়ে। তবে তিক্ততা ঘিরে ধরে সেই সম্পর্ককে। শোনা যায়, সাংসারিক অশান্তিতে অবসাদে ভুগছিলেন অভিনেত্রী। আত্মহত্যার চেষ্টাও নাকি করেছিলেন। শোনা যায় সুরাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন মহুয়া ৷ জীবনে এসেছিলেন একাধিক পুরুষও৷ ধীরে ধীরে গ্রাস করছিল অবসাদ৷ তারপরই ঘটে গেল সেই অঘটন। পার্টি থেকে ফিরে ক্লান্ত শরীরের ছেলের জন্য দুধ গরম করতে গিয়েই স্টোভ ফেটে ঝলসে গেল তার শরীর! অন্তত এমনটাই বলে থাকেন তার পরিবারের লোকেরা।

এই নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। অগ্নিদগ্ধ অবস্যায় মহুয়াকে ভর্তি করা হয় শহরের এক নামজাদা হাসপাতালে। কিন্তু সত্যিই কি সেদিন স্টোভ বিস্ফোরণে মহিয়া আহত হয়েছিলেন? তাহলে রান্নাঘর অক্ষত থাকল কিভাবে? তদন্তে দেখা গেল স্টোভে এক ফোঁটাও কেরোসিন ছিল না। অথচ মহুয়ার সারা শরীরে ছিল কেরোসিনের গন্ধ। বাড়িতে একাধিক পরিচারক থাকা সত্ত্বেও ক্লান্ত শরীরে অভিনেত্রী কেনই বা দুধ গরম করতে যাবেন? মহুয়ার চোখের কোণে, পিঠে, শরীরে মুখে আঘাতের চিহ্ন তাহলে কিসের? দুর্ঘটনা যদি রান্নাঘরে ঘটে থাকে, তাহলে বেডরুম আর বিছানা পুড়ে গেল কীভাবে? উত্তর মেলেনি কোনও প্রশ্নের। তবে বিষয়টি একরকমভাবে ধামাচাপা পড়ে যায়। কারণ মহুয়ার চিকিৎসা চলাকালীন কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি তাঁর পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে এটা নিছকই দুর্ঘটনা বলে দাবি করা হয়। যদিও অভিনেত্রীর কাছের মানুষেরা এই তত্ত্ব মানতে চাননি। অভিনেত্রীর মৃত্যুর পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে তা আজও অধরা। 

Read more!
Advertisement
Advertisement