নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় রইল ফেডারেশন। শনিবার টেকনিশিয়ান বনাম পরিচালকদের সংঘাতের মাঝেই ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হল এসভিএফ প্রযোজিত পুজোর ছবির পরিচালক সৌমিক হালদার হলে তবেই কাজ করবেন টেকনিশিয়ানরা। অর্থাৎ ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাহুল মুখোপাধ্যায়কে এই ছবির পরিচালক কিছুতেই মানা হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, শনিবার সেটে রাহুল মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বলে টেকনিশিয়ানরা কাজ করেননি। আর এই নিয়ে সকাল থেকেই টেকনিশিয়ান স্টুডিডওতে এক এক করে পরিচালকরা জড়ো হতে শুরু করে। তারই মাঝে সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে ফেডারেশনের বৈঠক হয়। তবে এই বৈঠকেও কোনও সমাধন সূত্র পাওয়া যায়নি।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রথমেই বলা হয় যে টেকনিশিয়ানরা কাজ না করে চলে এসেছেন এই কথা কিন্তু সত্য নয়। আজকে যে ছবিটিকে কেন্দ্র করে এইসব প্রশ্ন উঠেছে, নানান রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সামনে আসছে, সকলের সেই সত্যটা জানা উচিত। ফেডারেশন তথা টেকনিশিয়ানদের একটাই লক্ষ্য কোনও গুপি শ্যুটিং হবে না। গুপি কথাটাতেও অনেকের আপত্তি আছে তবে ফেডারেশন সেটারও ব্যাখা করে। যে সমস্ত কনভেনশন অর্থাৎ শ্রমিক, কলাকুশলী, প্রযোজক সকলের ক্ষেত্রে কাজ করার একটা নিয়ম জারি আছে কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করছিলাম যে ফেডারেশনকে না জানিয়ে অনেকেই অনেক কাজ করছেন। তাই ফেডারেশন সম্মিলিতভাবে ফেডারেশনের যে সর্বোচ্চ কমিটি অর্থাৎ ফেডারেশনের এক্সিকিউটিভ কমিটি যেখানে কিনা গিল্ডের সভাপতি এবং সম্পাদকা যুক্ত আছেন এবং তার উপরে পাঁচজন কাউন্সিল সদস্য আছেন। আরও বলা হয় যে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে গত ৫ মে মিটিং করা হয় এবং সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে কোথাও কোনও গুপি শ্যুটিং হলে সেটার সঙ্গে যে কোনও কলাকুশলী যুক্ত থাকলে তাঁদের আমরা সাময়িকভাবে কাজ থেকে বিরত থাকতে বলব।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে এও বলা হয় যে ফেডারেশন কাউকে সাসপেন্ড করতে পারে না। গিল্ড এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। টেকনিশিয়ানরা কার সঙ্গে কাজ করবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা তাঁদের রয়েছে কারণ তাঁরা কিন্তু ফ্রিল্যান্স। প্রসঙ্গত, রাহুল মুখোপাধ্যায় লঘু নামের একটি ছবি কলকাতায় শ্যুটিংয়ের কাজ শুরু করেন এবং চারদিন শহরে শ্যুটিং করার পর সেই শ্যুটিং বন্ধ হয়ে যায়। ইম্পাতে এই ছবিটি রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। পরে গিল্ড ও ফেডারেশন জানতে পারেন যে রাহুল বাংলাদেশে গিয়ে সেই শ্যুটিং সম্পূর্ণ করেছেন। আর তারপর থেকেই এই ঝামেলার সূত্রপাত।
এর আগেই bangla.aajtak.in-এর কাছে মুখ খুলেছিলেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেছিলেন, মাসখানেক আগে ওপার বাংলায় ‘গুপি শুট’ করেন ‘দিলখুশ’ ছবির পরিচালক। যা ফেডারেশনের নিয়মবিরুদ্ধ। কারণ, এতে গিল্ডের হাতেগোনা সদস্য থাকে। বাকিরা বাইরের। খবর জানাজানি হতেই ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ডিএইআই)-এর সভাপতি সুব্রত সেন এবং সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় মেল করেন পরিচালককে। বারংবার পরিচালক রাহুলের মিথ্যে কথা বলাটাই নাকি কাল হল বলে মনে করছে ফেডারেশন। রাহুলের ওপর থেকে সাসপেনশন উঠে গেলেও তিনি পুজোর এই ছবিতে ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার নাকি পরিচালক হিসাবে থাকছেন সেই প্রশ্নে এখন তোলপাড় টলিপাড়া। আর যার জেরে এখন বিশ বাঁও জলে অনির্বাণ-প্রসেনজিৎ জুটির আগামী ছবি।