
মৃত্যুর কয়েকদিন আগে একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, 'এই গল্পটি ১৯ বছর ধরে আমার বুকে রয়েছে।' ১৯ বছরের লালনপাল করা গল্পটিই যে তাঁর জীবনের শেষ গল্প হতে চলেছে, কে জানত! গায়ক জুবিন গর্গ যেন আবার দেখা দিচ্ছেন আজ। ঠিক যেমন যিশু খ্রিস্ট প্রয়াণের পরে আবির্ভাব হয়েছিলেন ভক্তদের জন্য। বাড়াবাড়ি উপমা? না। আসলে জুবিন গর্গ ব্যাপারটা অসমের কাছে ঈশ্বরসমই। আর সেই জুবিনের অভিনীত শেষ ছবি আজ মুক্তি পেল।
মুক্তি পেল জুবিন অভিনীত শেষ ছবি 'রৈ রৈ বিনালে'
অসমীয়াদের কাছে যেন ঈশ্বরের পুনরাবির্ভাব। আজ মুক্তি পেল জুবিন অভিনীত শেষ ছবি 'রই রই বিনালে'। এই ছবিটি কলকাতাতেও একাধিক মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পেল। ইতিমধ্যেই অসমে সব সিনেমাহল হাউসফুল। টিকিট পাওয়াই যাচ্ছে না। এমনকী দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা অসমের দুটি সিনেমাহলও খুলতে হল।
অসমের ইতিহাসে এই প্রথম ভোর সাড়ে ৪টেয় কোনও ছবি মুক্তি
অসমীয়া ভাষা 'রই রই বিনালে' মানে 'ধীরে ধীরে গাইতে গাইতে'। গত ১৯ সেপ্টেম্বরে সিঙ্গাপুরে স্কুবাডাইভিংয়ে মৃত্যু হয়েছে জুবিন গর্গের। তারপর থেকে গোটা অসম কাঁদছে। মাত্র ৫২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন জুবিন। মৃত্যুর আগে কয়েক দিন আগেও একাধিক ইন্টারভিউতে জুবিন বলেছেন, 'রৈ রৈ বিনালে আমার আত্মা ও হৃদয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত।' অসমজুড়ে ৮০টির বেশি হলে মুক্তি পেল রৈ রৈ বিনালে। অসমের ইতিহাসে এই প্রথম ভোর সাড়ে ৪টেয় কোনও ছবি মুক্তি পেল।
কলকাতাতেও একাধিক হলে জুবিনের শেষ সিনেমা
কলকাতাতেও জুবিনের এই সিনেমা একাধিক মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে। জুবিনের ভক্ত পশ্চিমবঙ্গেও নিছক কম নয়। বিশেষ করে বাংলায় বসবাসকারী অসমীয়াদের কাছে। জুবিনের ইচ্ছে ছিল, ছবিটি মুক্তি পাক ৩১ অক্টোবর। কলকাতার বেশ কিছু মাল্টিপ্লেক্সে ইতিমধ্যেই শো দেওয়া হয়েছে ‘রই রই বিনালে’র। জানা যাচ্ছে, কলকাতার বেশ কিছু মাল্টিপ্লেক্সে ছবির ইতিমধ্যেই শো ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সাউথ সিটির মতো জায়গায় দুটো করে শো রয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু মাল্টিপ্লেক্সে খুব ভাল সময়ে শো রয়েছে। মানুষ কতটা হলমুখী হচ্ছেন, সেটার উপর ভিত্তি করে শো বাড়ানোর কথা ভাববেন মাল্টিপ্লেক্সগুলির কর্তৃপক্ষ।
অসম কংগ্রেসের তরফে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, জুবিনের শেষ ছবিটি যেন করমুক্ত করা হয়। তবে অসমের বিজেপি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ছবিটি থেকে রাজ্য যে জিএসটি পাবে তা তুলে দেওয়া হবে জুবিনের ফাউন্ডেশনের হাতে।
টলিউডেও প্রচুর হিট গান গেয়েছেন জুবিন। নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে ভীষণ ভাল সম্পর্ক ছিল। সেই নচিকেতার একটি মন্তব্যেই মালুম হয়, জুবিন গর্গ অসমে কত জনপ্রিয়। bangla.aajtak.in কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে নচিকেতা বললেন, 'জুবিনের গাড়িতে কোনও নম্বর প্লেট থাকত না। শুধু লেখা থাকত, জুবিন।'