দেবস্মিতা দাস
সংবাদ কী? তা যখন খুশি যেভাবে খুশি ব্যবহার করা যায়? শিরোনাম কেবল অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই! এই সমস্ত প্রশ্ন আরও একবার উস্কে দেবে পরিচালক ইন্দ্রনীল ঘোষের প্রথম ছবি 'শিরোনাম'। এখনও পর্যন্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ১২টি পুরস্কার পেয়েছে এই ছবি। প্রথম দেখানো হয়েছিল হায়দরাবাদ বেঙ্গলি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। প্রায় পাঁচ বছর পর মুক্তি পাচ্ছে 'শিরোনাম'।
স্বভাবতই খুশি পরিচালক। আজতক বাংলাকে বললেন, ''উত্তেজনার থেকে বেশি ভাল লাগা যে ছবিটা অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে। অন্য কাজ করতে অসুবিধে হত, সেটা থেকে মুক্ত হব। অন্যেরা যখন একই লোকেশনে শুট করত তখন মনখারাপ হত। কিন্তু মুক্তি পাচ্ছে এটাই আনন্দের।''
কিন্তু প্রথম ছবিতেই এত কঠিন চিত্রনাট্য? পরিচালকের জবাব, ''সত্যি কথা বলতে এটা আমায় সবাই বলে। দাদাও (ঋতুপর্ণ ঘোষ) বলেছিল, 'এই ছবিটা খুব শক্ত এটা তুমি কেন করছ প্রথমে? একটু সহজ কিছু কর তোমার তো এত স্ক্রিপ্ট'। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল একটা কিছু বলি। সিনেমা এত শক্তিশালী মাধ্যম সেখানে সুন্দর দেখতে ছবি করার থেকে এই সময়টা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।''
''অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ছবিটা করতে হয়েছে। পরিচালক অতনু ঘোষ, অভিনেতা সংঘশ্রী প্রত্যেকে অনেক চেষ্টা করেছে আমায় দিয়ে ছবিটা তৈরি করানোর জন্য'', নস্টালজিয়ায় ডুব দিলেন পরিচালক। এক দুর্গম জায়গায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে নিঁখোজ হন সাংবাদিক অভিন রায় (যিশু সেনগুপ্ত)। সেই ঘটনাটিকে তারই নিউজ চ্যানেলের এগজিকিউটিভ এডিটর রজত (অঞ্জন দত্ত) অপহরণের মোড়কে পেশ করে। ব্রেকিং নিউজের জাঁতাকলে আসল খবর পাওয়া হয় না স্ত্রী আনন্দীর (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়)। শেষপর্যন্ত কোনদিকে যাবে তাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন।
ছবিতে যিশু-স্বস্তিকা ছাড়াও রয়েছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অঙ্কিতা চট্টোপাধ্যায়, শ্রীলা মজুমজার, কাঞ্চনা মৈত্র, সুজন মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। শিরোনাম-এর সিনেমাটোগ্রাফার শীর্ষ রায়, সম্পাদনা করেছেন সঞ্জীব দত্ত এবং সঙ্গীত পরিচালনায় দায়িত্বে ছিলেন রাজা নারায়ণ দেব।
পুজোয় বেশকয়েকটি ছবির ভিড়েই মুক্তি পাবে 'শিরোনাম'। প্রসঙ্গত, এটি পরিচালক হিসাবে ইন্দ্রনীল ঘোষের প্রথম ছবি হলেও 'চোখের বালি' ও 'নৌকাডুবি'-র জন্য শিল্প নির্দেশক রূপে জাতীয় পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এ ছবিও প্রশংসা কুড়োবে সিনেপ্রেমীদের তা বলাই বাহুল্য।