টলিপাড়ার অন্দরের এমন অনেক কাহিনী রয়েছে যা আজও সাধারণ মানুষের কাছে অজানা। তবে সেগুলো মাঝে মাঝেই প্রকাশ্যে চলে আসলে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। জনপ্রিয় গায়ক শ্যামল মিত্রের কন্য মনোবীণা মিত্রকে সম্প্রতি বাইপাসের ধারে অসহায়, বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এখন তিনি রয়েছেন ভবঘুরেদের আশ্রমে। তিনি অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম স্ত্রী। এখন কেমন আছেন শ্যামল মিত্রের মেয়ে?
ভবঘুরেদের আশ্রমে মনোবীণা থাকলেও তাঁর দেখভাল, চিকিৎসার পুরো খরচ বহন করেন প্রাক্তন স্বামী কৌশিক। যদিও মনোবীণার সঙ্গে তাঁর বিয়ে কেন ভাঙে তা এত বছর লোকচক্ষুর আড়ালেই রেখেছিলেন তিনি। অভিনেতা কৌশিক এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তাঁর সঙ্গে মনোবীণার বিয়েটা অনেক কিছু গোপন করেই দেওয়া হয়। অভিনেতার অভিযোগ, তাঁর প্রথম স্ত্রীর পরিবারে বংশগতভাবে মানসিক রোগের ধারা আছে তা তিনি জানতেন না। কৌশিক এও বলেন যে তাঁরা বেশ কিছু বছর ভালভাবে সংসার করলেও মনোবীণার সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে এরপর। ততদিনে তাঁদের ছেলের জন্ম হয়ে গিয়েছে।
কৌশিক এও জানান যে ছেলে সুস্নাত যাতে কোনওভাবে মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত না হন, তার জন্য তিনি দশ বছর শ্যামল মিত্রের মেয়ের সঙ্গে সংসার করে গিয়েছেন। অভিনয় সূত্রে তাঁকে বাইরে বাইরে থাকতে হত। একদিন ফিরে কৌশিক জানতে পারেন ছেলের মারধর করেছেন তাঁর স্ত্রী। তখনই অভিনেতা ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মনোবীণাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে খরপোশের টাকা ঠিকই পৌঁছে যেত অভিনেতার প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে। এরপর অভিনেত্রী লাবণি সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় কৌশিকের। তবে দ্বিতীয় বিয়ের পরও কৌশির তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন। যা খরপোশ পাঠাতেন তার চেয়ে তিনগুণ খরচ দেন কৌশিক।
অভিনেতা ওই সাক্ষাৎকারে এও বলেন যে মনোবীণার আমৃত্যু দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। যেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী ভাল থাকেন। আসলে কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় এই সব কথা এতদিন কাউকে জানাননি। যে কারণে বিভিন্ন সময়ে তাঁকে ট্রোল-কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এবার সবটা সকলের সামনে নিয়ে এলেন অভিনেতা। মনোবীণার ভাই গায়ক সৈকত মিত্র এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দুবার বাড়ি থেকে পালিয়েও যান মনোবীণা। দ্বিতীয়বার খোঁজ মেলে মানসিক হাসপাতালে। তারপরেই কৌশিক ঠিক করেন দিদিতে মানসিক রোগীদের আবাসনে রাখা দরকার। গায়ক বলেন, সে দিন থেকেই কৌশিকদার তত্ত্বাবধানে দিদি মানসিক রোগীদের আবাসনে আছেন। ভাল আছেন তিনি। নিয়মিত চিকিৎসা চলছে। আগের তুলনায় অনেক হাসিখুশি।