
উৎসব-পার্বনের মরশুমে পাড়ায় পাড়ায় সঙ্গীতের আসর জমার দৃশ্য নতুন নয়। শীত আসার আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন ধরনের গানের অনুষ্ঠান, মাচা ইত্যাদি। আর এই সঙ্গীতানুষ্ঠানকে ঘিরেই দুই প্রজন্মের জনপ্রিয় দুই গায়িকার মনোমালিন্য চলে এল প্রকাশ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুজনেই ভিডিও করে নিজেদের ক্ষোভ উগরালেন। কথা হচ্ছে জোজো মুখোপাধ্যায় ও পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। শহর কলকাতার এক জায়গায় তাঁদের দুজনের অনুষ্ঠান নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে এল প্রকাশ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল দুই গায়িকার এই ভিডিও।
শনিবার, ১ নভেম্বর টালিগঞ্জের বিজয়গড় সংলগ্ন একটি ক্লাবের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই দুই গায়িকার অনুষ্ঠান ছিল। ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকে। অনুষ্ঠানের জায়গাতেই তাঁদের দ্বন্দ্ব চরম জায়গায় পৌঁছে যায়। বাড়ি ফিরে এসে ক্ষোভ উগরে দেন জোজো। পরে পাল্টা অভিযোগ করেন পৌষালীও। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল বিজয়গড়ের ক্লাবের অনুষ্ঠানে? শনিবার জোজো তাঁর ফেসবুক লাইভে এসে জানিয়েছেন যে তিনি বহু জায়গায় অনুষ্ঠান করেছেন কিন্তু বিজয়গড়ে যেটা হয়েছে সেই ঘটনার জেরে তিনি ভীষণভাবে রেগে গিয়েছেন। জোজো এও জানান যে জুনিয়র আর্টিস্টদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই ভাল তবে কিছু ব্যতিক্রমীও আছেন।
জোজো এরপর পৌষালীর ওপর অভিযোগ এনে বলেন যে সকলকেই কমবেশি অ্যাডজাস্ট করতে হয়। তাঁর টিমের সদস্যরা আগে গিয়ে সাউন্ড চেক করে রেস্টরুমে চলে যায়। আর এরপরই পৌষালী ও তাঁর টিমের সদস্যরা এসে জোজো এবং তাঁর টিমের সদস্যদের অনুমতি ছাড়াই বাদ্যযন্ত্র সরিয়ে দেন। জোজো লাইভেই বলেন, এটা একপ্রকার অসভ্যতা। ওদের উচিত ছিল আমাদের বলা। এই অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। এমনকী এটাও বলে রাখি আমি আজকের এই অসম্মানের পর আমি শোটা করতাম না। কিন্তু ওখানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের জন্য আমি শুধু শোটা করেছি। এভাবে কারও অনুমতি ছাড়া মঞ্চ থেকে বাদ্যযন্ত্র সরানো যায় না।
এই লাইভের পর পৌষালীর পক্ষ থেকেও লাইভ করা হয় ফেসবুকে। পৌষালী জানিয়েছেন যে তাঁদের অনুষ্ঠানের পর জোজোদির অনুষ্ঠান ছিল। সাধারণত, যাঁদের পরে অনুষ্ঠান থাকে তাঁরা আগে সাউন্ড চেক করেন। সেভাবেই জোজোদি’র টিমের আগে সেসব করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ও তাঁর টিম আগে সময়মতো পৌঁছতে পারেনি। প্রায় এক ঘণ্টা পরে পৌঁছয়। গায়িকা বলেন যে এইসব করতে অনেকটা সময় লাগে। মঞ্চে জায়গা এতটাই কম ছিল যে জোজোদি’র টিম সমস্ত বাদ্যযন্ত্র রাখার পর আমাদের আর দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। গায়িকা জানিয়েছেন যে তাঁদের পক্ষ থেকে অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছিল জোজোর টিমকে যে ড্রামকিটটা সরানোর জন্য। কিন্তু সেই অনুরোধ শোনেন না জোজোর টিম। যে কারণে একটু বচসা হয় সেই সময়। এরপরই বাধ্য হয়ে পৌষালীর টিম ক্লাবের সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই বাদ্যযন্ত্রটি দেড় থেকে দুফুট মতো সরিয়ে দেন। সেই সময় জোজোর টিমের পক্ষ থেকে কেউ আসেননি এবং পরে জোজোকে ভুলভাবে ঘটনার ব্যাখা দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন পৌষালী। গায়িকা বলেন, আমার অনুষ্ঠান শেষে জোজোদি মঞ্চে উঠে মাইকে সকলের সামনে এটা নিয়ে বলেন। তারপরেও উনি থামেননি। বাড়ি ফিরে লাইভ করে উনি আবারো ওনার কথাগুলো বলেছেন। পৌষালী তাঁর লাইভে এও বলেন যে তিনি বা তাঁর টিমের সদস্যরা জোজোকে ঔদ্ধত্য দেখাবে এটা হতে পারে না।