বসন্ত দরজায় কড়া নাড়লেই প্রথমেই যে গানটার কথা মনে আসে, তা হল বসন্ত এসে গেছে। আর এই গানে যিনি কন্ঠ দিয়েছেন, তিনি ভাল গান তো গেয়েই থাকেন তার পাশাপাশি সমাজের একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁকে সরব হতেও দেখা যায়। আরজি কর কাণ্ড হোক বা কোনও শিল্পীর অপমান, তিনি মুখ বুজে সহ্য করার পাত্রী নন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবর সুর চড়িয়েছেন এই গায়িকা। আর আবার নারীদিবস ও ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতে দেখা গেল গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পরই গায়িকা ফের মুখ খুললেন। সকলকে মনে করিয়ে দিলেন মহিলারা এখনও সেই জায়গাতেই রয়েছে, যেখানে তাঁরা এতদিন ছিল। পরিবর্তন বা বদল এতটুকুও হয়নি। আর লগ্নজিতার পোস্টে এও স্পষ্ট যে বেশিরভাগ বাধাই আসে মহিলাদের পক্ষ থেকেই। লগ্নজিতা সোমবার তাঁর ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন। যেখানে তিনি তাঁর ৩ বান্ধবীর কথা তুলে ধরেছেন। তারই মধ্যে এক বান্ধবীর কথা বলতে গিয়ে লগ্নজিতা বলেন যে তাঁর ওই বান্ধবীর বাড়িতে শনিবার রক্ষে কালীপুজো ছিল। কিন্তু সেই বান্ধবীর পিরিয়ডস শুরু হয়ে গিয়েছিল। গায়িকার কথায়, সেই বান্ধবী নিজে এইসব বিশ্বাস না করলেও তাঁর বাড়ির লোক বিশ্বাস করে বলে বাড়ির বড়দের সেটা জানায়। আর সবাই তাঁকে একবাক্যে এটাই জানিয়ে দেয় যে পুজোর কোনও কাজে সে যেন হাত না দেয়।
এরপর লগ্নজিতা জানান যে এখানে বাড়ির লোকের কোনও দোষ ছিল না। কারণ তাঁরাও ওইভাবেই শিখে এসেছেন যে ঋতুস্রাবের সময় ঠাকুরঘরে ঢোকা যাবে না বা পুজোর কোনও কাজ করা যাবে না। অথচ কালী ঠাকুর নিজে একজন নারী আর ওইদিন নারীদিবসও ছিল। এরপর লগ্নজিতা আরও দুই বান্ধবীর কথা বলেন। যেখানে এক বান্ধবীকে তাঁর শাশুড়ি বরের জন্য নির্দিষ্ট মাছের পিস তুলে রাখার কথা জানান। এই পোস্টের নীচে লগ্নজিতা লেখেন, হ্যাঁ, আমি ২০২৫ সালের কলকাতার কথা বলছি। দেরি করে শুভেচ্ছা জানালাম আন্তর্জাতিক নারী দিবসের।
প্রসঙ্গত, ঋতুস্রাব নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা চলছে। ঋতুস্রাব চলাকালীন মহিলাদের ছুটি পাওয়া উচিত কি না, এই নিয়ে তরজা চলছে। এক সংবাদমাধ্যমকে লগ্নজিতা বলেন, 'একটা সময় পর্যন্ত ব্যক্তিগত ভাবে ঋতুস্রাব চলাকালীন সমস্যা বোধ করিনি। পেটে যন্ত্রণার মতো সমস্যা আমার হত না। কিন্তু বহু বন্ধুবান্ধব রয়েছে, যারা ঋতুস্রাবের সময় যন্ত্রণায় উঠতে পারে না। ওদের এমনও শুনতে হয়েছে, ‘ন্যাকামো করছে’।' গায়িকা বলেন যে ঋতুস্রাবে সব মহিলাদের শরীরে সমান প্রভাব থাকে না। গায়িকার ৩০ বছরের পর পিরিয়ডসের সময় পেটে ব্যথা শুরু হয় আর সেটা বেশ অসহনীয়। লগ্নজিতা বলেন, 'একজন পুরুষকে তো তিন দিন পেটে যন্ত্রণা নিয়ে অফিস যেতে হয় না। তাই এই সময়টা যে মহিলাদের অতিরিক্ত কষ্ট হয়, তা অস্বীকার করার জায়গা নেই।'