Advertisement

The Academy Of Fine Arts: পরিচালককে 'পার্সোনাল অ্যাটাক'এর হুমকি, 'দ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস' এখনই মুক্তি নয়

টলিউড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান স্লোগান এখন 'বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান'। সেখানে কোথাও কিন্তু উল্লেখ নেই বড় বাজেট নাকি ছোট বাজেট, নাকি স্বাধীন পরিচালকের ছবি। বাংলা ছবি তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে তাই দর্শকদের বেশি করে বাংলা ছবি দেখা উচিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই স্লোগানের বিপরীতে চলছে বাংলার তথাকথিত ইন্ডাস্ট্রির একাংশ।

ফেডারেশনের গেড়োঁয় আটকে ছবি মুক্তিফেডারেশনের গেড়োঁয় আটকে ছবি মুক্তি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 15 Nov 2025,
  • अपडेटेड 12:11 PM IST
  • টলিউড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান স্লোগান এখন 'বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান'।

টলিউড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান স্লোগান এখন 'বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান'। সেখানে কোথাও কিন্তু উল্লেখ নেই বড় বাজেট নাকি ছোট বাজেট, নাকি স্বাধীন পরিচালকের ছবি। বাংলা ছবি তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে তাই দর্শকদের বেশি করে বাংলা ছবি দেখা উচিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই স্লোগানের বিপরীতে চলছে বাংলার তথাকথিত ইন্ডাস্ট্রির একাংশ। একটি ছবি যা ইতিমধ্যেই সেন্সর বোর্ডের অনুমতি পেয়ে গিয়েছে, তারপরও বাধা পাচ্ছে মুক্তিতে। ছবির নাম 'দ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস'। যার পিছনে অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিউটের বেশ কিছু পড়ুয়াদের। 

এই ছবির প্রচার চলছিল কিন্তু জোর কদমে। কিন্তু তা সত্ত্বেও জয়ব্রত দাসের ছবি ১৪ নভেম্বর মুক্তি পেল না। ফেডারেশনের বাধার মুখে পড়ে আটকে গেল এই ছবি মুক্তি। ফেডারেশন দাবি করেছে, তাদের নিয়ম মানা হয়নি এই ছবির ক্ষেত্রে। আর তারপরেই যত সমস্যার সৃষ্টি হয়। শুক্রবার ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ছবির পরিচালক জয়ব্রত ও প্রযোজক মানব সাহা এবং সঙ্কেত মিশ্র। ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠকের পরই সবাই ভেবেছিলেন হয়তো কিছুটা সমাধান সূত্র মিলতে পারে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া মারফৎ ছবির পরিচালক জয়ব্রত স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে তাঁদের ছবি 'দ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস' মুক্তি পাচ্ছে না এখনই। 

জয়ব্রত শুক্রবার রাতেই তাঁর ফেসবুক পেজে দীর্ঘ পোস্ট করেন, যেখানে তাঁর ছবি মুক্তি নিয়ে হতাশাই নজরে এসেছে। নবাগত পরিচালক লেখেন, 'রিলিজ কবে করতে পারব, সেই ডেট জানি না। একটাই কথা বলতে চাই, আমার কাছে অলরেডি পার্সোনাল অ্যাটাকের থ্রেট আসতে শুরু করেছে। তবে যদিও সেই কল গুলো ফেডারেশনের তরফ থেকে নয়। অনেকেই মাঝখান থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টুডেন্ট টিমের কাছ থেকে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন।' এরপর পরিচালক জানিয়েছেন যে তাঁদের সঙ্গে ফেডারেশনের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। যদিও তাঁদের সঙ্গে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস ভালভাবে কথা বলেছেন। এরপর পরিচালক বলেন, 'কিন্তু কথা বলার পর বুঝলাম, খুব ভুল করে ফেলেছি। সবকিছুই ভুল করেছি। ফিল্ম স্টুডেন্টরা ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাজ করছে এটা ইন্ডাস্ট্রির কাছে প্রতারণার সমান। আমাদের গোটা টিম  প্রতারক। আমরা প্রতারণা করেছি সিনেমা বানিয়ে।'  

Advertisement

জয়ব্রত আরও জানিয়েছেন যে তাঁদের নিজস্ব ফান্ড শেষ হওয়ার পর প্রমোদ প্রযোজনা থেকে তাঁদের আর্থিক সাহায্য নেওয়া ভুল হয়েছে। ওদের ফেডারেশনের সঙ্গে অন্য সিনেমার, অন্য প্রোডাকশনের আর্থিক বকেয়ার হিসেব আমাদের আগেই করে নিতে হতো। জয়ব্রতদের জানানো হয়েছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে যে প্রমোদ ফিল্মসের কর্ণধার এসে কথা বললে ছবি মুক্তির অনুমতি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা যেতে পারে। অথবা, ওনাদের নাম পোস্টার, সিনেমা, ট্রেলার, সেন্সর সার্টিফিকেট সব কিছু থেকে নাম সরিয়ে নিতে হবে যেটার দুটোই যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

২০২১ থেকে তিলে তিলে টাকা জমিয়ে এই ছবি তৈরি হয়েছে। যখন যেমন টাকা এসেছে, শ্যুটিংও সেরকমভাবে হয়েছে। ছবির বাজেট ২৫ লক্ষ টাকা। ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রী রুদ্রনীল ঘোষ, সৌরভ দাস, পায়েল সরকার, দর্শনা বণিক কেউই পারিশ্রমিক নেননি। এ ভাবে কাজ করতে করতে যখন শেষ হয়েছে, তখন সেটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি। সেই ছবি দেখে ফিল্ম ইনস্টিটিউশনের পড়ুয়াদের মনে হয়েছে, ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিলাভের মতো। এই ভাবনা থেকেই জয়ব্রত প্রযোজনা সংস্থার প্রমোদ ফিল্মসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন। পরিচালকের দাবি, এই প্রযোজনা সংস্থাও কিছু লগ্নি করেছিল। সেন্সর বোর্ড, ছবির টাইটেল কার্ড ও পোস্টারে প্রযোজক প্রতীক চক্রবর্তী বা তাঁর প্রযোজনা সংস্থার নাম। এই জায়গা থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।

ফেডারেশনের দাবি, এই ছবি আসলে একটা বিশ্বাসঘাতকতার উদাহরণ তৈরি করেছে। একটি বাণিজ্যিক ছবিকে ‘স্টুডেন্ট ফিল্ম’ হিসাবে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যে কোনও বাণিজ্যিক ছবির মুক্তির ক্ষেত্রে তাদের থেকে অনুমতি নেওয়া জরুরি। যদি ছবিটি সত্যিই শুধু ছাত্রছাত্রীদের তৈরি হয়, তবে উল্টে ফেডারেশন তাদের সহায়তা করবে। ছবির সঙ্গে যুক্ত সকল কলাকুশলী এসআরএফটিআই-এর ছাত্রছাত্রী বলেও দাবি পরিচালকের। সেখানেই প্রশ্ন তুলেছেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘একটি ‘স্টুডেন্টস ফিল্ম’-এর নিবন্ধিকরণ কী করে এক জন প্রযোজক করতে পারেন? প্রমোদ ফিল্মসের নামে মুম্বইয়ে এই ছবির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। সিনেমাটা যেহেতু বাংলার, স্বাভাবিক ভাবে ‘ইম্পা’য় নিবন্ধিকরণ হওয়া উচিত ছিল।’ এছাড়াও কোনও টেকনিশিয়ান ছাড়াই এই ছবি করা হয়েছে, যা নিয়েও ঘোরতর আপত্তি তুলেছেন ফেডারেশন সভাপতি। 

দ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এর প্রচারও গত একমাস ধরে চলছে জোর কদমে। একাধিক পার্টিও হয়েছে এই ছবির প্রচার উপলক্ষ্যে। যার খরচ নিয়েও ফেডারেশনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ছবির পরিচালককে। স্বরূপের দাবি, এই ছবির প্রচারের স্বার্থে যা খরচ কিংবা পরিবেশনায় যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, সবটাই প্রমোদ ফিল্মসের করা। সেই কারণে তাঁরা ফের প্রমোদ ফিল্মসের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।  

Read more!
Advertisement
Advertisement