কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে যুগলের প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া নিয়ে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। নতুন প্রজন্ম এই চুমু খাওয়াকে সমর্থন করলেও অনেকেই এটাকে বাঁকা নজরে দেখেছেন। প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া নিয়ে সমাজের অনেকেই রে রে করে ছুটেও এসেছেন। তাঁদেরই একজন হলেন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর। মেট্রো স্টেশনে চুমু খাওয়ার বিরোধিতা করেছেন তিনি। মমতাশঙ্করের মতে, এইসব ঘটনার জন্যই সমাজে ধর্ষণ বেড়েছে। জন্তুরাও মানুষের চেয়ে বোধহয় ভাল বলে জানিয়েছেন। মমতা শঙ্করের এই মন্তব্যে আবারও সরব হয়েছে টলিপাড়া। যাঁদের মধ্যে অন্যতম ঋদ্ধি সেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো গর্জে উঠেছেন।
ঋদ্ধি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে দীর্ঘ এক লেখার মাধ্যমে মমতা শঙ্করের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি অভিনেত্রীর এই মনোভাবকে পচা ভাবনা বলে যেমন উল্লেখ করেছেন তেমনি বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে দিয়েছেন উপদেশও। মমতা শঙ্করকে একহাত নিতে গিয়ে ঋদ্ধি তুলে ধরেছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নতুন শব্দ তৈরি করে তা সকলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়টিকেও। ঋদ্ধি বলেছেন, 'কাউকে কোনোরকম কোনো আঘাত না করে বা কারুর পাকা ধানে মই না দিয়ে যে যুবক যুবতী স্রেফ একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করেছিলেন তাদের সেই মুহূর্তেকে ভিডিও করে ছেড়ে দিলেন যে ব্যক্তি,তার আচরণ শ্রদ্ধেয় মমতা শঙ্করের মূল্যবোধে আঘাত করলো না। ওনার মতে শিশুদের মন বিষিয়ে যাবে প্রকাশ্যে ভালোবাসা দেখলে আর শিশু মন মূল্যবোধ শিখবে ভালোবাসাকে গোপনে প্রকাশ করে হিংসাকে বুকে বাজিয়ে ভরা আলোয় প্রকাশ করা যায় দেখে।'
এরপর ঋদ্ধি বলেন, 'প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার জন্য সমাজে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে, এই বক্তব্য প্রকাশ্যে বলে নিজের মানসিকতার পরিচয় দিয়ে উনি বুঝিয়ে দিলেন যে নিরাপত্তা দখলের লড়াইয়ে ‘রিক্ল্যাইম দ্য নাইট’-এর সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন ‘রিক্লেইম দ্য মাইন্ড’-এর, প্রয়োজন এই পচা ভাবনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো।' এখানেই থামেননি কৌশিক-পুত্র। তিনি আরও বলেছেন, 'উনি বলেছে জন্তুরা আমাদের থেকে অনেক ভাল। এটা একদম সঠিক, মানুষ প্রকাশ্যে খুন করে আর জন্তুরা প্রকাশ্যে একে অপরকে আদর করে। খুব ভাল হয় যদি ওনার টিভিতে কেউ ডিসকভারি বা অ্যানিমাল প্ল্যানেট চ্যানেল ইনস্টল করে দিতে পারে, না হলে ভালোবেসে কেউ জিম করবেট ঘুরতে যাওয়ার একটা টিকিটও পাঠাতে পারেন। আশাকরি আপনি আরও মমতাশীল হবেন।' ঋদ্ধি তাঁর এই লেখার সঙ্গে দুটি চুমুর ছবি পোস্ট করেছেন।
তবে এই প্রথমবার নয়, এর আগেও মমতাশঙ্করের একাধিক মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। মাসখানেক আগে শাড়ি পরার ধরন নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচিত হন মমতা শঙ্কর। সেই সময় তিনি শাড়ির আঁচল নামিয়ে পরা মেয়েদের সঙ্গে ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়ানো মেয়েদের তুলনা করেন। সেটা নিয়ে টলিপাড়ায় কম বিতর্কের সৃষ্টি হয়নি। এ বার মেট্রোয় চুমু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বিষয়টাকে মোটেও ভাল চোখে দেখছি না। আমি এর বিরুদ্ধে। কারণ এর পর তো সমস্ত কিছু করার সাহস হয়ে যাবে। স্থান, কাল, পাত্রের কোনও জ্ঞান থাকবে না? জন্তুরাও বোধহয় আমাদের থেকে অনেক ভাল। এই জন্যই তো আজকাল এ সব হচ্ছে, এত ধর্ষণ হচ্ছে। বাচ্চাদের হাতে ফোন যাচ্ছে, ছোট থেকেই ওরা এ সব দেখছে। ওদের মূল্যবোধ কোথায় যাবে।