সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে যাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়াল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গের। অ্যাডভেঞ্চারের লক্ষ্যে জলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, তাতেই বাঁধে বিপত্তি। জলের নীচে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অগুন্তি ফ্যানেদের কাঁদিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন উত্তর পূর্ব ভারতের এই রকস্টার। কীভাবে মৃত্যু হল তাঁর? ঠিক কী হয়েছিল জলের নীচে? শেষ মুহুর্তের একটি ভিডিওতে কী দেখা গিয়েছে?
জনপ্রিয় এই তারকা শিল্পীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে একাধিক জল্পনা ছড়িয়েছে নেটপাড়ায়। একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলিই ভুয়ো। যা নিয়ে সতর্কও করেছে অসম প্রশাসন। তবে একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ইয়ট থেকে লাইফ জ্যাকেট পরে জলে ঝাঁপ দিচ্ছেন জুবিন। প্রথমটায় জলে সাঁতার কাটা উপভোগ করলেও পরবর্তীতে তিনি লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই জলে নামেন। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। এরপরই অসুস্থবোধ করতে শুরু করেন জুবিন। এই ভিডিওটিই সম্ভবত জুবিনের জীবনের শেষ কয়েকটি মুহূর্ত। তবে এর সত্যতা যাচাই করেনি bangla.aajtak.in.
ইয়ট থেকে জুবিনের জলে ঝাঁপ দেওয়ার ভিডিওর ভিত্তিতেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা তাঁর লাইফ জ্যাকেট ছাড়া সমুদ্রে সাঁতার কাটার তত্ত্বের কথা সামনে আনেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, শুরুতে দেখা যাচ্ছে লাইফ জ্যাকেট পরেই সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছেন জুবিন। কিন্তু ওই ভিডিয়োর ১.২৬ সেকেন্ড পর দেখা যাচ্ছে, শিল্পী ইয়টে ফিরে আসছেন এবং দ্বিতীয়বার লাইফ জ্যাকেট খুলেই সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছেন। লাইফ জ্যাকেট পরে সাঁতার কাটতে অস্বস্তি হওয়ার কারণেই নাকি জুবিন এমনটা করেছিলেন। তবে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালের চিকিৎসকদের তরফে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিয়ে এখনও কোনও অফিশিয়াল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালে গান গাইতেই সিঙ্গাপুর সফরে গিয়েছিলেন জুবিন গর্গ। অনুষ্ঠান উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, কোনও আগাম সূচনা ছাড়াই স্থানীয় অসমিয়া গোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে ইয়ট সফরে বেরিয়ে পড়েছিলেন জুবিন।
নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের প্রধান উদ্যোক্তা শ্যামকানু মোহন্ত সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে বলেন, '৩ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে বুধবার সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছিলেন জুবিন গর্গ। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানস্থলেই দর্শকদের সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য উপস্থিত থাকার কথা ছিল তাঁর। তবে স্থানীয় অসমিয়া কমিউনিটির কয়েকজন তাঁকে ইয়ট সফরে নিয়ে যান। আমাদের কাছে সে সম্পর্কিত কোনও আগাম তথ্য ছিল না।' তিনি জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের শিল্পপতিদের সঙ্গে মিটিং চলাকালীনই জুবিনের ম্যানেজারের থেকে একটি জরুরি ফোন পান তিনি। জানানো হয়, জুবিন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন এবং তাঁকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বর্তমানে জুবিনের মরদেহ সেই হাসপাতালেই ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর অসমের বাড়িতে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হবে।