ইয়ট সফরে গিয়ে অঘটন। স্কুবা করতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গের। ঘটনা যেন এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না অনুরাগীরা। তাঁর মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেই নিয়ে একাধিক জল্পনা চলছে। এর মাঝেই এবার ঘটনার মুহূর্ত বর্ণনা করলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
ইন্ডিয়া টুডে এনই-কে সিঙ্গাপুরের অসম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অভিমন্যু তালুকদার বলেন, 'সিঙ্গাপুরের এক অসমিয়া তন্ময় ফুকান একটি ইয়ট পার্টির আয়োজন করেছিলেন। তিনি জুবিনের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের প্রধান উদ্যোক্তা শ্যানকানু মহন্ত এই পার্টিতে জুবিনকে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সন্ধ্যাতেই জুবিনের গানের অনুষ্ঠান ছিল, তাই এমনটা বলেছিলেন তিনি। যদিও জুবিন নিজের ইচ্ছেতেই এই ইয়ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন।'
জানা গিয়েছে, ইয়টে ছিলেন ১৮ জন। তার মধ্যে ছিলেন সিঙ্গাপুরের ১১ জন অসমিয়া এবং জুবিনের টিমের আরও ৫ জন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ২ জন ক্রু মেম্বার। সেন্ট জন্স এবং লাজারুস আইল্যান্ডের দিকে রওনা দিয়েছিল ইয়টটি। লাজারুস আইল্যান্ডে পৌঁছে অ্যাকোয়া অ্যাডভেঞ্চার শুরু করেন সকলে। ক্রুয়ের তত্ত্বাবধানেই শুরু হয় অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস।
প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, জুবিন লাইফ জ্যাকেট পরেই প্রথমে জলে ঝাঁপান এবং সাঁতার কাটতে শুরু করেন। আচমকাই ইয়টে ফিরে এসে তিনি অভিযোগ করেন, লাইফ জ্যাকেটটি বড্ড ঝিলে। বন্ধু এবং ক্রু মেম্বাররা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও জুবিন লাইফ জ্যাকেট এবং সেফটি গিয়ার খুলে জলে নামেন। হঠাৎ করেই জুবিনকে জলে উল্টো অবস্থায় ভাসতে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন অভিমন্যু। তিনি বলেন, 'আমি জুবিনের নাম ধরে চিৎকার করতে শুরু করি। ওকে লাইফ জ্যাকেট পরতে বলি। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উল্টো অবস্থায় জলে ভেসে থাকতে দেখা যায় ওকে।' ক্রু মেম্বাররা দ্রুত জলে নেমে তাঁকে উদ্ধার করেন। শরীর থেকে জল বের করার চেষ্টা করেন। CPR দেওয়া হয় ওকে। জরুরি সাহায্য চেয়ে ইয়টের ক্যাপ্টেন উপকূলরক্ষীকে অ্যালার্ট করেন।'
এরপর ইয়টটি ম্যারিনা বে-এর দিকে রওনা দেয়। সেখানে পৌঁছ উপকূলরক্ষীদের সাহায্যে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ICU-তে ভর্তিও করা হয় তাঁকে। তবে শেষরক্ষা হল না। শত চেষ্টাতেও চিকিৎসকরা সংগীতশিল্পীর প্রাণ রক্ষা করতে পারেননি।
অভিমন্যু তালুকদার বলেন, 'জুবিনকে এক পেগ মদ অফার করা হয়েছিল ঠিকই তবে ও খায়নি। ও মত্ত অবস্থায় ছিল না। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ছড়ানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়ো।'
এদিকে, ইতিমধ্যেই জুবিন গর্গের মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিক এবং জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা সহ তাঁর টিমের সদস্য জ্যোতি গোস্বামী এবং সন্দীপন গর্গের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অসমের উদ্দেশে আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই দেহ রওনা হবে।