সিনেমা ও বাংলা ধারাবাহিকে চান্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণা, কুপ্রস্তাব ও নগ্নছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত কোঅর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। মেক-আপ আর্টিস্ট এভং অভিনেত্রী প্রিয়া হালদারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কোঅর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রিয়া নিজের বয়ানে জানিয়েছেন, তিনি পেশায় একজন মেক-আপ আর্টিস্ট। তবে অভিনয় করার ইচ্ছে ছিল ছোটবেলা থেকে। কিছু দিন আগে দুটি বাংলা ধারাবাহিকে ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন প্রিয়া। তবে ভালো চরিত্রের প্রত্যাশা ছিল। গত ৬ সেপ্টেম্বর বাংলা ধারাবাহিক অভিনেত্রী পায়েল সরকারের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ঋতুরাজ হালদার নামে ওই কোঅর্ডিনেটরের সঙ্গে আলাপ হয় প্রিয়ার। নিজেকে সহকারি পরিচালক বলে পরিচয় দেন ঋতুরাজ। ঋতুরাজ প্রিয়াকে বলেন, নগদ ১০ হাজার টাকা দিলে তাঁকে বাংলা ধারাবাহিক এবং সিনেমায় ভালো চরিত্র পাইয়ে দেবেন তিনি। সেই মতো ঋতুরাজকে ১০ হাজার টাকাও দেন।
এর দিন কয়েক পর যখন প্রিয়া তাঁকে ফোন করেন, তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বার বার ফোন করার পর ঋতুরাজ রাত কাটানোর প্রস্তাব দেয় প্রিয়াকে। তাঁর সঙ্গে দীঘা, মন্দারমণি বা শহরের ওয়ো হোটেলে যআওযার প্রসাতব দেন। স্বভাবতই সে প্রস্তাবে কোনও সাড়া দেননি প্রিয়া। এর পর শুরু হয় হুমকি দেওয়ার পালা। প্রিয়াকে হুমকি দেয়, তাঁর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেওয়া হবে যদি সে ঋতুরাজের প্রস্তাবে রাজি না হয়।
ঘটনার জেরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন প্রিয়া। এ ঘটনা চোখ এড়ায়নি অভিনেত্রী পায়েল সরকারের। তিনি প্রিয়াকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসেন, এমনটাই জানিয়েছেন পায়েল। বোনের এই অবস্থা দেখে তিনি প্রিয়াকে কারণ জিজ্ঞাসা করেন। অনেক চাপাচাপির পর পায়েলের কাছে সব ঘটনা প্রকাশ করেন প্রিয়া।
তাঁর মোবাইলে কুপ্রস্তাব দিয়ে নানা সময় বিভিন্ন ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছিলেন ঋতুরাজ। সে সমস্ত প্রমাণ এবং মেসেজের ডিলেটস নিয়ে পায়েলের উদ্যোগে কলকাতা পুলিশের দ্বারস্থ হন প্রিয়া। পুলিশ তাঁদের জানায়, নরেন্দ্রপুর থানায় এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে। সেই মতো গতকাল ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার অভিযোগ দায়ের করেন প্রিয়া। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার গভীর রাতে ঋতুরাজকে হরিদেবপুর এলাকা থেকে প্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হবে।