Dadagiri: বাংলা টিভি দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান 'দাদাগিরি'। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঞ্চালনা তাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে, সন্দেহ নেই। সেখানে মাঝে মাঝে এমন মুহূর্ত তৈরি হয় যা সত্যি ভোলার নয়। যেমন দিন কয়েক আগে হয়েছিল। এসেছিলেন অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
দাদাগিরি-তে কত রকমের মানুষ যে যোগ দেন, ভাবলেও বিস্মিত হতে হয়। শত সমস্যার মাঝেও তাঁরা লড়াই চালিয়ে যান, গেয়ে যান জীবনের জয়গান। তাঁরা নিজেরা অন্যকে প্রেরণা দিতে পারেন। এমনই লড়াকু তাঁদের জীবনযাত্রা।
রাহুলের কবিতা তুমুল আলোড়ন ফেলে দিয়েছে বললে কম বলা হবে। কবিতাটি সৌরভকে উদ্দেশ্য করে লেখা। তিনি সেটি পড়ে শোনান। আর তখন থ হয়ে গিয়েছিল সেখানে উপস্থিত সকলে। সৌরভও প্রশংসা করেন। এটা কোনও স্তুতি নয়। ধরা রয়েছে ইতিহাস। শুনে সৌরভ বলেন, 'আরে বাহ! দারুণ!'
অভিষেক ম্যাচে লর্ডসের মাঠে সেঞ্চুরি বলে কথা। সে গাঁথা মনে হলে আজও বাঙালির হৃদয় হিল্লোল ওঠে। রাহুলের কবিতায় লড়াইয়ের কথা, স্পর্ধার কথাই ফিরে ফিরে এসেছে। বিশ্বের মঞ্চে চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের সাহস যুগিয়েছে ওই একটি ইনিংস।
দিনটি ছিল ২২ জুন, ১৯৯৬। রাহুলের কথায়, সেটি 'বাঙালির কলজের জন্মদিন।' বিলেতের মাঠ কাঁপিয়ে এক বাঙালি যুবকের আগমনের নির্ঘোষ জানতে পেরেছিল সকলে।
সেই কবিতায় তাঁর জীবনযাপন-দর্শন ধরা পড়েছে।
তিনি লিখেছেন, 'জুনের ২২ তারিখ কলকাতায় বৃষ্টি হবে এ তো জানা কথা
কিছুটা স্বভাব আর বাকিটা মৌসুমি বায়ুর চক্রান্তে একঘেয়ে বৃষ্টি পড়ছিল সেদিনও
আমাদের ড্য়াম্প পড়া কলোনির ঘরে বৃষ্টি চুইঁয়ে ঢুকছিল রোজকার মতো
অমি, দাদা, মা, বাবা এক-একজন নিঁখুত ফিল্ডারের মতো পেতে রাখছিলাম'
এমনই যেন চলছিল যে সবার জীবন। বঞ্চনা, না-পাওয়ার জ্বালা, হতাশা।
'হঠাৎ খবর এল বেহালা ট্রাম ডিপো থেকে একটা ট্রাম ছেড়েছে।' সেই ট্রাম তো এখনও এগিয়ে চলেছে।
সবাইকে এক করে দিয়েছেন তিনি। রাহুল লিখছেন, 'সেদিন ক্লাবের মধ্যে কোনও ঘঁটি-বাঙাল তর্ক ছিল না। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ঝামেলা ছিপি খোলার কোনও অবকাশ পাইনি।'
তারপর জীবন এগিয়েছে। অনেকে ওঠানামা দেখেছে। ধাক্কা খেলেও থেমে যায়নি।
তিনি লিখেছেন, 'শুধু একটা জিনিস বদলায়নি
কলজের জোর
সেই কলজের জোর যা জন্মেছিল বাইশে জুন, ১৯৯৬-এ
বাইশে জুন, ১৯৯৬, বাঙালির কলজের জন্মদিন।'