চলছে 'ডান্স বাংলা ডান্স' -র সিজন ১৩। আলোচনায় নাচের এই রিয়্যালিটি শো। সম্প্রতি 'ডিবিডি' এক বিশেষ পর্ব নিয়ে চলছে জোর চর্চা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরাট ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। এদিন অতিথি বিচারক রূপে হাজির ছিলেন মমতা শঙ্কর। আর তার পর থেকেই অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পীর দিকে ধেয়ে আসছে কটাক্ষ। অবশেষে মঙ্গলবার এপ্রসঙ্গে মুখ খুললেন তিনি। নেটমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিলেন। ঠিক কী ঘটেছে?
'ডান্স বাংলা ডান্স'-র একটি বিশেষ পর্বে প্রতিযোগীদের সঙ্গে পারফর্ম করেছেন টলিপাড়ার বহু শিল্পী। তার মধ্যে ছিলেন দেবলীনা দত্ত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য 'চণ্ডালিকা' উপস্থাপনা করেন দেবলীনা ও 'ডিবিডি'-র প্রতিযোগী অনুষ্কা। অভিনেত্রী উপস্থাপনাকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে বিস্তর বিতর্ক। চণ্ডালিকার সঙ্গে হিন্দি ছবির গানে পারফর্ম করেন তাঁরা। এই উপস্থাপনায় চণ্ডালিকার কোনও গান বা সংলাপ ছিল না। বলিউডের গান 'তেরে বিনা জিন্দেগি সে কয়ি'-র সঙ্গে একটি নাচ ছিল। যা দেখে বিরক্ত দর্শক থেকে টলিপাড়ার অনেকেই। এমনকী সেখানে বসেই বিরক্তি প্রকাশ করেন খোদ মমতা শঙ্কর। তবে অভিনেত্রীর দাবি, তাঁর সব কথাগুলো কেটে দেওয়া হয়েছে উল্টে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন মমতা শঙ্কর। তিনি বলেন, "আমি কিছুদিন আগে ডান্স বাংলা ডান্সে প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি প্রথম থেকেই দিই যে, আমি বিচারক হয়ে যাব না। কারণ প্রতিযোগিতা বিষয়টাই আমার মতে সঙ্গে মেলে না। কিন্তু কয়েকটা জায়গায় এমন হয় যে, আমাদের নিজেদের কাজের সূত্রে সেখানে যেতে হয়। বলা যায় নিজেদের স্বার্থে যেতে হয়। তবে টাকা পয়সা লেনদেন বা নাম কেনার জন্য নয়। না গেলে অনেক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়, যেটা বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্তু ডান্স বাংলা ডান্সের সেদিনের পর্ব দেখে আপনারা যতটা বিরক্ত হয়েছেন। যতটা আমার উপর হতাশ হয়েছেন, তার থেকে বেশি বিরক্ত কিন্তু আমি।"
অভিনেত্রীর কথায়, "আমি ভাবতে পারছি না কীভাবে আপনাদের সামনে প্রমাণ করব যে, সেখানে ওই চণ্ডালিকা দেখে আমি কী বলেছিলাম। সেখানে সবাই ছিলেন। সবার সামনে আমি বলে ছিলাম, 'এটা আমার একেবারেই পছন্দ হচ্ছে না। এটা ঠিক নয়। এই গানের সঙ্গে চণ্ডালিকার কোনও সম্পর্ক নেই। এটার পিছনে কোনও যুক্তি হয় না।' এমন কী ওখানে যাঁরা ছিলেন তাঁরাও অনেকেই আমার সঙ্গে সহমত হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে আমার কথাটা পুরো বাদ দেওয়া হয়।"
তিনি আরও বলেন, "আপনারা আমাকে দেখেছেন। আপনারা যাঁরা আমাকে একটু হলেও বিশ্বাস করেন, আমার উপর আস্থা রাখেন তাঁরা জানেন, আমি নিজের বিশ্বাস থেকে কথা বলি। আমি সেটা নিয়ে ভাবি না যে, এটা শুনে কে কী মনে করবেন। যদিও ডান্স বাংলা ডান্সে বলা আছে যে, বাচ্ছাদের সেভাবে কিছু বলা যাবে না। এক্ষেত্রে বাচ্ছাদের কোনও দোষ নেই। কিন্তু যাঁরা কোরিওগ্রাফার, তাঁদের কিন্তু আমরা বলতেই পারি। আমি প্রথম চণ্ডালিকা দিয়েই শুরু করেছিলাম ১৯৭৮ সালে। আপনারা এত ভালোবাসা দিয়েছিলেন, এখনও সমাদৃত। সেখানে আমি এটাকে ভাল বলব? এখানে আমার কথাটা পুরো বাদ দেওয়া হয়। এখানে আমি কী করে সকলকে বোঝাবো যে, এটাকে আমি সমর্থন করিনি। আমার স্কুলের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা জানে আমি কী পছন্দ করি আর করি না। সেখানে যদি তাঁদের অভিভাবকরাও এটা বিশ্বাস করেন যে, আমি এই সব বলেছি তাহলে খুব ভুল হবে... আমি নিজের এত বড় ক্ষতি কীভাবে করব? আমি সব সময় বলি যে আমার কথাগুলো কাটবেন না। সেটা বলার পরও ওঁরা এটা করলেন। অন্য ভাবে এডিট করে দেওয়া হল।"
প্রসঙ্গত, 'ডান্স বাংলা ডান্স'-র এই সিজনে বিচারকের আসনে বসেছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত ও কৌশানী মুখোপাধ্যায়। এবারও সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করছেন অঙ্কুশ হাজরা। এছাড়া ডিবিডি'-তে মহাগুরু আসনে ফিরেছেন মিঠুন চক্রবর্তী।