শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন। আর মাস খানেক পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। আশ্বিনের শারদ প্রাতে আলোকবেণু বাজতে আর কয়েকদিন অপেক্ষা। এবছর মহালয়া পড়েছে ৭ সেপ্টেম্বর। মহালয়ার দিন ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহিষাসুরমর্দিনীর শোনার রীতি বাঙালির যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে শুধু রেডিও না টেলিভিশনের পর্দায়, মহালয়া দেখার উৎসাহ কম থাকে না।
দেবীপক্ষের সূচনায় প্রতিবারই চ্যানেলগুলির মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা থাকে, কে হবেন দেবী দুর্গা এই নিয়ে কৌতূহল থাকে। আর সেরকমই থাকে একে অপরের সঙ্গে টক্কর ও চমক। আগে শুধু দূরদর্শনে সম্প্রচারিত হলেও, বর্তমানে প্রথম সারির চ্যানেলগুলিতে দেখা যায় মহালয়া।
এবছর সান বাংলাতে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে দেখা যাবে পায়েল দে-কে। এই চ্যানেলের মহালয়ার অনুষ্ঠানের নাম 'অকাল বোধন'। এই চ্যানেলের বিভিন্ন ধারাবাহিকের নায়িকাদের দেখা যাবে এই অনুষ্ঠানে, দেবীর বিভিন্ন অবতারে। 'পুতুল টিটিপি'- ধারাবাহিকের পুতুল অর্থাৎ অভিনেত্রী খেয়ালী মণ্ডলকে দেখা যাবে দেবী চামুণ্ডা রূপে।
খেয়ালী জানান, "এবার সান বাংলার মহালয়া 'অকাল বোধন'-এ আমি চামুণ্ডা রূপে থাকছি। দুই রাক্ষস চন্ড আর মুন্ড যখন দেবীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়,তখন দেবী চামুণ্ডা রূপ ধারণ করে তাদের বধ করে। চামুণ্ডার রূপের প্রস্তুতি একটা বিরাট বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেকটা সময় ধরে এই রূপ তৈরি করা হয়েছে। মহালয়ার ভোরে আপনারা দেখতে পাবেন অকাল বোধন। আশা করছি আপনাদের ভাল লাগবে।"
চামুণ্ডা হলেন একজন প্রধানা হিন্দু দেবী। চামুণ্ডা হলেন আদ্যাশক্তি,ভগবতী। তিনি সপ্ত মাতৃকার মধ্যে প্রধানা। তাঁর অপর নাম চামুণ্ডী, চামুণ্ডেশ্বরী, চামুণ্ডা চর্চিকা ও চর্চিকা। চামুণ্ডা হলেন আদ্যাশক্তি, আবার তিনিই ভগবতী দুর্গা। চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুরকে বধ করে তিনি ‘চামুণ্ডা’ নামে পরিচিত হন। চামুণ্ডাকে দেবী কালীর অপর রূপ মনে করা হয়। পার্বতী, চণ্ডী, দুর্গা, চামুণ্ডা ও কালী এক ও অভিন্ন। কথিত আছে, চামুণ্ডার আবাসস্থল হল শ্মশানভূমি বা ডুমুর গাছ।
আনুষ্ঠানিকভাবে পশুবলি দিয়ে ও মদ্য নিবেদন করে দেবী চামুণ্ডার পুজো করা হয়। প্রাচীনকালে চামুণ্ডার পুজোয় নরবলিও দেওয়া হত। চামুণ্ডা প্রকৃতপক্ষে একজন অনার্যা দেবী ছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁকে হিন্দুধর্মে গ্রহণ করা হয় এবং অষ্টমাতৃকা বা অষ্টশক্তির অন্যতমা রূপে চামুণ্ডা হিন্দু দেবমণ্ডলীতে স্থান পান। জৈনধর্মেও চামুণ্ডার পুজো প্রচলিত আছে। তবে জৈনরা মদ্য ও মাংসের পরিবর্তে নিরামিষ নৈবেদ্য নিবেদন করে তার পুজো করেন।