আলুথালু বেশ, ময়লা পোশাক, উদভ্রান্তের মতো পূর্ব বর্ধমানের রাস্তায় ঘুরছিলেন এক তরুণী। এদিকে গড়গড়িয়ে ইংরেজিতে নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। পরনে কালো রঙের একটি শার্ট ও হাফ প্যান্ট। সোমবার সকালে বর্ধমান-আরামবাগ সাত নম্বর রাজ্য সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। বৃষ্টি শুরু হওয়ায়, ঢুকে পড়েন খণ্ডঘোষ ব্লকের আমিলা বাজারের বিশ্রামাগারে। এলাকায় অচেনা মুখ দেখে স্থানীয়রা তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। বুঝতে পারেন, মানসিক ভারসাম্যহীন।
এদিকে তরুণী দাবি করেন, তিনি অভিনেত্রী। প্রথমে বিশ্বাস না হলেও, পরে ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ সকলের। তিনি সত্যিই অভিনেত্রী। কয়েকবছর আগেও টেলিভিশনের পর্দায় জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়ালে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এদিন স্থানীয়রা তাঁকে প্রশ্ন করায়, তিনি জানান, "আমার নাম সৌমী ধর চৌধুরী। আমি বাংলা সিলিয়ালে অভিনয় করি।" তিনি প্রথমে বলেন, "আমি বেহালার মেয়ে।” তার পর বলেন, "আমি বোলপুর থেকে এখানে এসেছি।" নানা প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসতেই তিনি আরও বলেন, "সবই ভাগ্যের ফের। সব মানুষকে এই চক্রের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।"
কোথা থেকে তিনি এসেছেন? কেন এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন? এসব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হলেও, সেই উত্তর এড়িয়ে যান সৌমি। তবে তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ির বাইরে রয়েছেন। কয়েকদিন ধরেই নাকি বর্ধমান-আরামবাগ রোড ধরে ঘোরাফেরা করছেন। সোমবার খন্ডঘোষ এলাকায় পৌঁছন। তাঁর কাছে থাকা একটি নম্বরে স্থানীয়রা ফোন করে জানতে পারেন, সেটি এক গাড়ি চালকের। তিনি অভিনেত্রীকে শেষ বোলপুরে ছেড়েছিলেন। সৌমী জানান, তিনি বোলপুরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি বর্ধমানে এসেছেন। কলকাতার বেহালায় তাঁর বাড়ি রয়েছে। বাড়িতে কে কে রয়েছে সেই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু তিনি জানাতে চাননি।
প্রসঙ্গত, বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ সৌমী ধর চৌধুরী। 'তুমি আশে পাশে থাকলে' ধারাবাহিকে 'রাঙা কাম্মা' রূপে সকলে দেখেছিলেন তাঁকে। খন্ডঘোষ থানার পুলিশ অভিনেত্রীকে উদ্ধার করে বর্ধমানের একটি হোমে নিয়ে যায়। আপাতত সেখানেই রয়েছেন তিনি। অভিনেত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে পুলিশ। অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই মনে হয় স্থানীয়দের।