মাথায় লম্বা উশকো খুশকো চুল, মুখ ভর্তি লম্বা দাড়ি, কাঁধে তীর ধনুক, অন্যদিকে হাতে ধরা রক্ত মাখা কুড়ুল। এভাবেই নয়া লুকে সামনে এলেন দেব। এবার রঘু ডাকাত রূপে সামনে আসছেন দেব। একথা এখন সকলেরই জানা। ২০২৫-র দুর্গা পুজোয় আসছে বহু প্রতীক্ষিত ছবি 'রঘু ডাকাত'। তারই নতুন পোস্টার প্রকাশ্যে।
প্রথম পর্যায়ের শ্যুটিং শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে। ছবির জন্যে ঘোড়া সওয়ারি শিখেছেন দেব। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে আরও অনেক কিছুর। সে ছবিও নিজেই সোশ্যাল পেজে শেয়ার করেছিলেন অভিনেতা- প্রযোজক তথা সাংসদ। চুল- দাড়িও কাটেননি বহু দিন। প্রস্তুতি বা লুকে এক ফোঁটাও খামতি রাখতে চান না তিনি।
বছর চারেক আগে প্রথম শোনা যায়, রঘু ডাকাত রূপে সামনে আসবেন দেব। বারবার বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে গিয়েছিল ছবির শ্যুটিং। এরপর নানা জট কেটে, শুরু হয় ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ছবির শ্যুট। এসভিএফ ও দেব এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চার্সের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হচ্ছে ছবিটি। দেবের ছবিতে ফের জায়গা পাকা করেছেন ইধিকা পাল। শুধু তাই নয়, ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন সোহিনী সরকার। এই প্রথম দেবের ছবিতে কাজ করবেন নায়িকা। এছাড়াও 'রঘু ডাকাত'-এ দেখা যাবে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও রূপা গঙ্গপাধ্যায়কে।
অষ্টাদশ শতাব্দীর সময়কালে বাংলার সাধারণ মানুষের নিপীড়ন ও অবিচারের বিরুদ্ধে 'মসিহা' হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রঘু ডাকাত। 'লার্জার দ্যান লাইফ' এই কাল্পনিক গল্পের নায়ক রঘু আজও বাঙালিদের মনে বেঁচে আছেন। এত গুরুত্বপূর্ণ একটা চরিত্র, তাই সেরা অভিনয় দক্ষতাটুকু দিয়েই নিজেকে উজার করে দেবেন দেব। এমনটাই আশা পর্দার নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী- দেবের। 'গোলন্দাজ' -এর চূড়ান্ত বক্স অফিস সাফল্যের ফর ফের জুটিতে কাজ করবেন ধ্রুব -দেব। বলাই বাহুল্য দর্শকদের প্রত্যাশাও থাকবে তুঙ্গে।
মা কালীর সঙ্গে রঘু ডাকাতের নাম বার বার উঠে আসে। কারণ তিনি ছিলেন কালীর একনিষ্ঠ উপাসক। এমনকী ডাকাতি করতে বেড়ানোর আগেও কালিকার পুজোই করতেন তিনি। এই রঘু ডাকাতকে ঘিরে রয়েছে নানা জল্পনা, গল্পকথা। বলা ভাল তাঁকে নিয়ে বাঙালিদের কৌতূহলের শেষ নেই। এখন যেন তিনি 'রহস্য' হয়েই রয়েছেন বাঙালি মননে। শোনা যায়, হুগলি জেলার মগরায় বাসুদেবপুর গ্রামে এক সময় প্রতিষ্ঠিত ছিল এক ডাকাত কালী মন্দির। যা মূলত রঘু ডকাতের মন্দির নামেই পরিচিত।
প্রচলিত কথা অনুযায়ী, ইংরেজরাও ভয় পেতেন এই রঘুকে। অত্যাচারী জমিদারদের থেকে লুথ করে আনা ধন -সম্পদ তিনি মিলিয়ে দিতেন গরীবদের মধ্যে। তবে শুধু হুগলী না, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ সহ আরও একাধিক জায়গায় রঘু ডাকাতের প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরের কথা শোনা যায়। হাতেনাতে প্রমাণ না মিললেও, অনন্ত লোক মুখে শুনে যুগ যুগ ধরে এটাই বিশ্বাস করা হয় যে বাস্তবে তিনি ছিলেন।