এক সময় বাংলা ইতিহাস বা সাহিত্য নির্ভর বহু ছবি হত টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। মাঝে বেশ কিছু বছর, তা প্রায় উধাও হয়েছিল। তবে বর্তমান সময় ধীরে ধীরে ফিরে আসতে সাহিত্য নির্ভর ছবি। বাংলা সাহিত্যকে আশ্রয় করে টলিউডের বাইরে বলিউডেও তৈরি হয় ছবি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস 'দেবী চৌধুরানী' এবার বড় পর্দায়। পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন শুভ্রজিৎ মিত্র। ছবির কাস্টিংয়েও রয়েছে বিরাট চমক। সম্প্রতি শেষ হয়েছে ছবির শ্যুটিং।
ছবির চরিত্র লুক সামনে আসার পরে তা ব্যাপক সাড়া ফেলে। প্রফুল্ল অর্থাৎ দেবী চৌধুরানীর চরিত্রে দেখা যাবে শ্রাবন্তী গঙ্গোপাধ্যায়কে। অন্যদিকে ভবাণী পাঠকের ভূমিকায় থাকবেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এই ছবিতে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে হরবল্লভ রায়, অর্জুন চক্রবর্তীকে রঙ্গরাজ, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়কে নিশি, দর্শনা বণিককে সাগর, কিঞ্জল নন্দকে ব্রজেশ্বর রায় রূপে দেখা যাবে।
এবার সামনে এল ছবির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের লুক। ছবিতে ফকির বিদ্রোহের নেতা মজনু শাহ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে ভরত কলকে। শোনা যায়, এই যুদ্ধটি ছিল ভারতের স্বাধীনতার জন্য একটি প্রাথমিক যুদ্ধ। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে মজনুর দল অনেক লড়াইয়ে যোগ দিয়েছিল।
ভারত কল জানান, "মজনু এবং ভবানী পাঠক এই দুই ঐতিহাসিক চরিত্র বাস্তবে ছিল। আমি সত্যিই এমন কিছুর অংশ হতে চেয়েছিলাম যা, খুব বড়। মজনু শাহ এবং এই সমগ্র কনসেপ্টটা আজকের সময়ে খুবই প্রাসঙ্গিক। 'দেবী চৌধুরানী'-তে, একটি বিশাল কাস্টিং রয়েছে, যা আজকাল খুব একটা দেখা যায় না। এমন কঠিন একটা বিষয় বেছে নিয়ে অনেক সাহস দেখিয়েছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। একজন অভিনেতা হিসেবে এরকম চ্যালেঞ্জিং চরিত্র পেতে আমি খুবই ইচ্ছুক সবসময়। প্রযোজকদের অভিনন্দন এই সময়ে এমন একটি দুর্দান্ত কাজ করতে রাজি হওয়ার জন্য।"
প্রসঙ্গত, এর আগেও 'দেবী চৌধুরানি' নিয়ে কাজ হয়েছে বাংলা ছবিতে। দীনেন গুপ্তের পরিচালিত এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন এবং তাঁর স্বামী ব্রজেশ্বর হয়েছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। ভবানী পাঠক চরিত্রে দেখা গিয়েছিল বসন্ত চৌধুরীকে। সাহিত্য নির্ভর ছবি মানেই সেখানে অনেকটা ঝুঁকি থাকে। তার উপর 'অভিযাত্রিক' পরিচালনার পর শুভ্রজিৎ-র ছবি ঘিরে সকলের প্রত্যাশা আরও অনেকগুণ বেশি। এখন দেখার এই ছবি কতটা সফল হয়। শোনা যাচ্ছে, সব ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে 'দেবী চৌধুরানি'।