এই নববর্ষেই (Noboborsho 1429) বড় পর্দায় আসছে 'দ্য একেন' (The Eken)। বাঙালির প্রিয় গোয়েন্দা (Detective) একেন্দ্র সেন ওরফে একেন বাবু (Eken Babu), এবার শৈল শহরের এক ভয়ঙ্কর রহস্যের সমাধান করবেন।
এসভিএফ (SVF)-র প্রযোজনায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের (Joydeep Mukherjee) পরিচালনায়, রুপোলী পর্দাতেও চমক দেবেন একেন বাবু -অনির্বাণ চক্রবর্তী (Anirban Chakrabarti)। ছবি মুক্তির আগে আজতক বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিলেন এই 'মাছে ভাতে বাঙালি গোয়েন্দা'।
আজতক বাংলা: ছবি মুক্তির আগে ব্যস্ততা রয়েছে, প্রিমিয়ারের কোনও প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
অনির্বাণ: এখন আর প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু নেই। শ্যুট করে যা যা আমাদের করার, সব করে ফেলেছি। এবার দর্শকেরা দেখলে, জানার অপেক্ষায় আছি যে তাঁদের কেমন লাগল।
প্রশ্ন: আপনি 'জটায়ু' চরিত্রেও অভিনয় করছেন। একদিকে গোয়েন্দা এবং একদিকে তার সঙ্গী...
অনির্বাণ: আমার খুবই মজা লাগে। আমি তো 'একেন বাবু' চরিত্রে আগেও অভিনয় করেছি। তার সঙ্গে দু'জন সঙ্গী থাকে- বাপি বাবু ও প্রমোথ। কিন্তু ফেলুদার ক্ষেত্রে, তার দু'জন সঙ্গীর মধ্যে একজন আমি। 'একেন বাবু' করার সময় যেহেতু একেবারে মূল ফোকাস এই চরিত্রটা থাকে, আমি আলাদা করে অন্য কিছু ভাবতে পারি না। কিন্তু যখন 'জটায়ু'-র মতো কোনও পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করি এবং ফেলুদাকে দেখি এগুলো করতে, তখন বুঝি সাগরেদদের কেমন লাগে আমি যখন কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করি (হেসে)।
প্রশ্ন: কখনও মনে হয় না, আমি থাকলে আরও ভাল কাজ করতাম?
অনির্বাণ: অনেক সময় মনটা কিছুটা উশখুশ করে। এগিয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা থাকে, কিন্তু সেটা একেবারে ভেতরে থাকে। একদিক দিয়ে এটা খুবই মজার ব্যাপার। দু'ধরনের অভিজ্ঞতা হচ্ছে। গোয়েন্দা ও তার সাগরেদ - দুটো চরিত্রই করার সৌভাগ্য, আমার মনে হয় খুব কম লোকেরই হয়।
প্রশ্ন: তাহলে কি বলা যায় বর্তমানে অনির্বাণ চক্রবর্তীর জীবন 'গোয়েন্দায়' ঘেরা?
অনির্বাণ: না সম্পূর্ণ তা নয়। অনেকগুলো থ্রিলার আছে, বড় পর্দা -ওটিটি মিলিয়ে। তবে শুধু গোয়েন্দা সম্পর্কিত এই দুটো ফ্র্যাঞ্চাইজির কাজ রয়েছে এই মুহূর্তে।
প্রশ্ন: একেন বাবুকে বাদ দিয়ে, আপনার প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র কোনটা?
অনির্বাণ: সেভাবে বলতে গেলে 'ফেলুদা'। তার একটা কারণও আছে। ফেলুদার গল্পই আমি প্রথম পড়েছি। ছোটবেলায় ফেলুদা আর পাণ্ডব গোয়েন্দা পড়তাম। পরে অবশ্য যখন আরেকটু বয়স হয়েছে ব্যোমকেশ, কিরিটি, শার্লক হোমস সবই পড়েছি। তবে প্রথম পড়ে ভাল লাগা ফেলুদা।
প্রশ্ন: একেন্দ্র সেনও তো বাকি গোয়েন্দাদের মতো সত্যের অনুসন্ধান করে। তাহলে বাকিদের থেকে আলাদা কোথায়?
অনির্বাণ: সাহিত্য হোক কিংবা চলচ্চিত্র, আমরা দেখেছি বেশীরভাগ গোয়েন্দা চরিত্র রাশভারী বা গম্ভীর স্বভাবের। তাদের এক রকমের বুদ্ধি - রসবোধ আছে ঠিকই, কিন্তু তারা মূলত হিরোর মতো।
প্রশ্ন: আর একেন বাবু?
অনির্বাণ: একেন বাবুর গোয়েন্দা সত্ত্বা বাদ দিলে, সে খুব মজাদার চরিত্র এবং পাশের বাড়ির দাদা বা কাকার মতো। সে চিন্তিত থাকলেও কোনও সময় গোমরামুখো দেখা যায় না। একেন, খুবই হাসিখুশি থাকে, খেতে ভালোবাসে, ভুল ভাল মজা করে... তবে কাজের জায়গায় সে খুব সিরিয়াস। এই যে একটা বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য বা কম্বিনেশন, তা বাকি গোয়েন্দাদের থেকে একেনকে অনেক আলাদা করে দেয়।
প্রশ্ন: নিজেকে একেন বাবু হিসাবে দশে কত নম্বর দেবেন?
অনির্বাণ: এই রে... এই প্রশ্নটা না আসলেই ভাল হত। (অনেক্ষণ ভেবে, হেসে উত্তর) নিজেকে দশে ছয় দেবো।
প্রশ্ন: ওটিটি এবং বড় পর্দার একেন-র পার্থক্য কতটা?
অনির্বাণ: একেন বাবুকে যেভাবে দর্শকেরা দেখে অভ্যস্ত, অর্থাৎ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি একই থাকছে। কিন্তু ছবির ক্ষেত্রে জাঁকজমক অনেক বেশি। বড় পর্দায় দেখার মতো করেই শ্যুট করা হয়েছে। দর্শকদের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা যেন 'লার্জার দ্যান লাইফ' হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে। এখানে একেবারে নতুন একটা গল্পে, একেন বাবুর মজা, রহস্য সব ফ্লেবার থাকবে।
প্রশ্ন: অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে একেন্দ্র সেনের মিল বা অমিল কোনগুলো?
অনির্বাণ: মিল খুব কমই আছে। একেন বাবু যেমন জীবনকে খুব সহজ ভাবে দেখে, আমি নিজের ক্ষেত্রেও সেটায় বিশ্বাসী। কোনও চাপ না নিয়ে, যতটা কম জটিলভাবে জীবন কাটানো যায় আরকী... আমিও মজা করতে, খেতে খুব ভালোবাসি।এগুলো মিল আছে দু'জনের।
প্রশ্ন: অমিল?
অনির্বাণ: আমি হয়তো একেন বাবুর মতো মারপিট করতে পারব না। গুলি চালানোর দক্ষতাও আমার নেই, কারণ আমার বাস্তবে সেই প্রশিক্ষণ নেই। একেন বাবুর মধ্যে যে একটা বুদ্ধিমান মানুষ রয়েছে, সে কাজটা খুব সুন্দরভাবে যেভাবে গুছিয়ে করতে পারে, সেটার আমি খুব প্রশংসা করি।
প্রশ্ন: নববর্ষে বাঙালিকে 'দ্য একেন' উপহার দিচ্ছেন, নিশ্চয় এবারের পয়লা বৈশাখ আপনার জন্য বাড়তি স্পেশাল?
অনির্বাণ: অবশ্যই। নববর্ষে যেমন উৎসবের একটা সুন্দর মেজাজ থাকে, তার সঙ্গে একেন বাবু ফ্র্যাঞ্চাইজির খুব মিল আছে। খাওয়া -দাওয়া, বাঙালিয়ানা, ঘুরতে যাওয়া, মজা, রহস্য সবটা আছে। এজন্যেই দর্শকদের বলব, আপনাদের এবারের নববর্ষ উদযাপনের একটা অংশ হোক 'দ্য একেন' ছবিটি। মজা করতে করতে তাড়াতাড়ি সকলে দেখে ফেলুন।