পরিচালক অরিন্দম শীলের ছবিতে অভিনয় করছেন সাংবাদিক-রাজনীতিক কুণাল ঘোষ, এই খবর আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। ‘কর্পূর’ ছবিতে কাজ করছেন তৃণমূল নেতা। এবার সামনে এল অভিনেতা কুণালের ফার্স্টলুক। মাথায় ঘন কালো চুল পাটে পাটে আঁচড়ানো। চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। হাতে ঘড়ি। পরনে সাদা ফতুয়া আর ধুতি। বুক পকেটে রাখা কলম। অরিন্দম শীলের রাজনৈতিক থ্রিলারে তৃণমূল মুখপাত্রকে দেখা যাবে রাজনৈতিক নেতার চরিত্রে। শোনা যাচ্ছে বিশিষ্ট বামনেতা অনিল বিশ্বাসের চরিত্রে অভিনয় করছেন কুণাল ঘোষ।
সাহিত্যিক দীপান্বিতা রায়ের ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা তৈরি করতে চলেছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। ছবির নাম রেখেছেন, ‘কর্পূর’। সেই ছবিতেই রাজনৈতিক নেতার চরিত্রে অভিনয় করছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। মঙ্গলবার প্রকাশ্যে আসে সেই ছবির লোগো ও অভিনেতা কুণালের প্রথম লুক। তবে একটা লুক নয়, দু'দুটো লুকে হাজির কুণাল ঘোষ। প্রথম লুকটির প্রেক্ষাপট ১৯৯৭ সাল। দ্বিতীয় লুকটির সময়কাল ২০১৯।
১৯৯০-এর দশকে সাড়া ফেলে দেওয়া মনীষা মুখোপাধ্যায় অন্তর্ধান কাণ্ডের উপর ভিত্তি করেই এই ছবি তৈরি হচ্ছে৷ ১৯৯৭-এর ৩ সেপ্টেম্বর। পশ্চিমবঙ্গে তখন বাম সরকার। হঠাৎ করেই একদিন নিখোঁজ হয়ে যান, মনীষা মুখোপাধ্য়ায়। সকাল ৯টায় ভবানীপুর থেকে ট্য়াক্সিতে উঠেছিলেন। তারপর আর তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ামক। তৎকালীন শাসকদল বামফ্রন্টের শীর্ষনেতাদের অত্য়ন্ত ঘনিষ্ঠ। মণীষা মুখোপাধ্য়ায়ের অন্তর্ধান রহস্য় তৎকালীন রাজ্য় রাজনীতিতে ঝড় ফেলে। এই ঘটনাই এবার সিনেমার পর্দায় তুলে ধরতে চলেছেন পরিচালক অরিন্দম শীল।
সত্য ঘটনা অবলম্বনেই এই ছবি তৈরি করছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। কিন্তু তাঁর তৈরি চরিত্রগুলি আদ্যোপান্ত কাল্পনিক। তেমনই এক চরিত্র শশাঙ্ক মল্লিক। যে চরিত্রে অভিনয় করছেন কুণাল ঘোষ। যদিও তাঁর চেহারায় বাম আমলের নেতা অনিল বিশ্বাসের ছাপ স্পষ্ট। তবে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘আপনারা বললেও আমি এই চরিত্রের সঙ্গে অনিল বিশ্বাসের কোনও মিল খু্ঁজে পাচ্ছি না। কেউ কোথাও কারও সঙ্গে মিল পেলে তা অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয়।'
নতুন এই জার্নি নিয়ে কুণাল ঘোষ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'এক একটা চরিত্রের এক এক রকম বৈশিষ্ট্য। আমি এই বিষয়ে একদম নতুন। আমি নবাগত। ফলত আমাকে আমার পরিচালক গড়ে পিঠে নিচ্ছেন। আর আমার বন্ধু ব্রাত্য, সেও খুব গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিচ্ছেন আমাকে। আমি সেইমতো নিজেও অনুশীলন করছি। ভালোভাবে বারবার স্ক্রিপ্টটা পড়ছি। পিডিএফ আকারেও ছবির স্ক্রিপ্টটা রেখেছি। কখনও গাড়িতে যেতে যেতে স্ক্রিপ্টটা পড়ে নিচ্ছি। এভাবেই চেষ্টা করছি।'
এছাড়াও কুণাল আরও বলেন, 'এই যে এতজন অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন, আমি এটাই দেখাতে চাই যে এদিক থেকেও ওদিকে যাওয়া যায়, পারফর্ম করা যায়। তবে এখানে আমার কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা নেই। আমি নবাগত। আমার পরিচালক যেন বলেন তিনি আমার কাজে সন্তুষ্ট। আমি নিজেও সন্তুষ্ট হতে চাই যে আমি ফাঁকিবাজি করিনি। আমি কখনও ফাঁকিবাজি করে কোনও কাজ করি না। আমার সাংবাদিকতা, রাজনীতি এগুলি নিয়ে জ্ঞান থাকলেও অভিনয় একেবারেই আমার কাছে নতুন। যাতে আমি অভ্যস্ত নই। তাতে আমাকে আমার বন্ধু ব্রাত্য ও পরিচালক অরিন্দম শীল সাহায্য করছেন। দর্শকের থেকেও ভালো প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি।'
রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার এই ছবিতে কুণাল ঘোষ ছাড়াও লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যাবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে৷ ছবিতে থাকছেন তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ তাঁকে দেখা যাবে একটি সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকের ভূমিকায়৷