এমএন রাজ (MN Raj) পরিচালিত 'রাবণ' (Raavan) ছবিতে জিতের (Jeet) সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন নবাগতা লহমা ভট্টাচার্য (Lahoma Bhattacharya)। ছবিতে একেবারে নয়া লুকে দেখা যাচ্ছে জিতকে। অন্যদিকে লহমা অভিনয় করছেন রাই চরিত্রে। এই অ্যাকশনধর্মী ছবির ট্রেলার মুক্তির কিছুক্ষণেই দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। 'রাবণ' মুক্তি পাবে আগামী ২৯ এপ্রিল। তার আগে ছবির অজানা কথা নিয়ে আজতক বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিলেন লহমা।
আজতক বাংলা: জীবনের এই নতুন জার্নি, কেমন লাগছে?
লহমা: খুব ভাল। সবটা দারুণ এনজয় করছি। প্রচুর অভিজ্ঞতা হচ্ছে। ছবির প্রোমোশন চলছে তাই রোজই কিছু না কিছু থাকছে। প্রতিদিনই ঘুম থেকে উঠে মনে হচ্ছে, নতুন কিছু হতে চলেছে।
প্রশ্ন: সংবাদের শিরোনামে থাকছেন, শহর জুড়ে হোর্ডিং, এই অনুভূতিটা কতটা স্পেশাল?
লহমা: এটা খুব ভাল লাগছে। এই কাজের সূত্রেই এত জনের সঙ্গে আলাপ হচ্ছে, অনেক কিছু শেয়ার করতে পারছি। শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করতে হচ্ছে। সেই স্মৃতিচারণ করতেও মজা লাগছে।
প্রশ্ন: লন্ডন থেকে মিডিয়া নিয়ে পড়াশোনা করে, হঠাৎই অভিনয়? নাকি পূর্ব পরিকল্পনা ছিল সবটা?
লহমা: আমি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করছিলাম লন্ডনে। ভারতে এসে একই কোম্পানির জন্য রিমোট ওয়ার্কিং করছিলাম। এরপরই করোনা আসে...কোভিডের আগে অবধি মনে হয়েছিল চাকরির জগতেই থাকব। কিন্তু সেই সময়কালে হাতে অনেকটা সময় পেয়ে, অভিনয়ের কিছু ওয়ার্কশপ করি। এরপরই কথাবার্তা হয় এবং অডিশন দিয়ে এই সুযোগটা আসে। একেবারেই প্ল্যান ছিল না যে, অভিনয়ে আসব। প্রথম দিকে চাকরি করতে করতেই চেষ্টা করছিলাম। পরে এই ছবির অফার পেয়ে চাকরিটা ছাড়ি।
প্রশ্ন: ডেবিউ ছবিতেই টলিউড সুপারস্টার জিতের বিপরীতে? নিজেকে 'লাকি' মনে হয়?
লহমা: হ্যাঁ অবশ্যই! ভীষণ ভীষণ লাকি মনে হয় নিজেকে। আমায় অনেকেই বলে এই কথাটা। এত বড় একটা ব্রেক পাওয়া অনেকরই স্বপ্ন থাকে। আর সেটা যে নিজে অভিজ্ঞতা করতে পারছি, সত্যিই লাকি আমি।
প্রশ্ন: জিতের সঙ্গে দেওয়া প্রথম শট! নার্ভাস লেগেছে?
লহমা: একটু তো নার্ভাস ছিলামই। একদম প্রথম কাজ... কিন্তু জিৎ দা এত ভাল ভাবে গল্প করে, পুরো বন্ধুর মতো মিশেছেন যে, ওই সিনিয়র -জুনিয়র ব্যাপারটা ছিলই না। কাজ করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। মনে হচ্ছিল বন্ধুর সঙ্গে কাজ করছি।
প্রশ্ন: জিৎ কোনও বিশেষ টিপস দিয়েছিলেন?
লহমা: প্রতিটা দৃশ্যের আগেই ইনপুট দিতেন। কীভাবে করলে আরও ভাল হতে পারে সে সব বলতেন। শুধু অভিনয় নয়, সবকিছু নিয়েই জিৎ দা-র এত বছরের অভিজ্ঞতা। শুধু নিজের শট দিয়ে বেড়িয়ে যান না,সবটা নিয়ে ভাবেন। এমনকী ভুল হলে, রিটেক করতে গিয়েও আমার অসুবিধা হয়নি আমি জুনিয়র বলে।
প্রশ্ন: বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের সদস্যরা কী বলছেন?
লহমা: ট্রেলারের প্রতিক্রিয়া খুব ভাল পেয়েছি। এরপর থেকে সকলে আরও বেশি উৎসাহিত। শুধু অপেক্ষা করে আছে কবে ছবিটা রিলিজ হবে, কবে প্রিমিয়ার হবে।
প্রশ্ন: সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন প্রশংসা মেলে, সেরকম নেতিবাচক কমেন্টও তো আসে... কীভাবে সামলাচ্ছেন?
লহমা: আমার মনে হয় সকলের ভিন্ন মতামত থাকে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো পারফর্ম করার চেষ্টা করি। এবার কে কীভাবে নেবে, সেটা সম্পূর্ণ তার ব্যাপার। আমার যেহেতু একদম নতুন কাজ, তাই কে কী বলছে সেটা দেখার জন্য বসে থাকি। যদি দেখি কারও কোনও জিনিস ভাল লাগেনি, সেক্ষেত্রে মাথায় রাখি পরেরবার চেষ্টা করব যাতে ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। তবে আমি সব সময় চেষ্টা করি প্রতিটা জিনিসের ইতিবাচক দিকটা খুঁজে বের করার। প্রথম কাজ একশো শতাংশ পারফেক্ট হবে, এটা তো হতে পারে না। এখন শেখার সময়। তাই যে যা বলছে, সেখান থেকে যতটুকু শিখতে পারি, সেটাই আমার পাওনা।
প্রশ্ন: ছবির গানে জিৎ- লহমা জুটির দারুণ রসায়ন চোখে পড়ছে। কীভাবে গড়ে উঠল?
লহমা: কিছুটা তো ভাল বন্ধুত্ব হওয়ার কারণে। এছাড়া সত্যি বলতে, জিৎ দা এত ভাল করে একজন মহিলার সঙ্গে আচরণ করেন... সৌজন্যবোধ এবং রোম্যান্টিসিজম একসঙ্গে আছে, এরকম পুরুষ খুব কম দেখা যায়। একেবারে 'রোম্যান্স কিং' যাকে বলে (হেসে)। পরিচালক ও কোরিওগ্রাফারের নির্দেশনায় আমরা কাজ করেছি। বাকিটা আমাদের দু'জনের রসায়নট এমনীই ফুটে উঠেছে, এত মজা করে কাজটা করেছি বলে।
প্রশ্ন: রোম্যান্টিক দৃশ্যে আপনি কতটা সাবলীল? ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে করবেন?
লহমা: অবশ্যই। এই ছবির কিছু গানে যেন, রোম্যান্টিক স্বপ্নের মতো সিকোয়েন্স রয়েছে। ভবিষ্যতেও এরকম আরও কাজ পেলে, আনন্দের সঙ্গে করব।
প্রশ্ন: রাইয়ের সঙ্গে লহমার মিল বা অমিল কতটা?
লহমা: মিল এটাই যে দু'জনেই সংবাদিকতার ছাত্রী। রাই খুব ফুটফুটে হাসিখুশি, উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে ওর। আমি সেই তুলনায় কিছুটা চুপচাপ। এটা এমন একটা চরিত্র যার সঙ্গে এই যুগের ছেলে-মেয়েরা মিল পাবে।
প্রশ্ন: এরপর কোন ঘরানার ছবিতে কাজ করতে আগ্রহী আপনি?
লহমা: আমার মনে হয় একজন অভিনেতা হিসাবে যত ধরনের কাজ করতে পারব, সেটাই আমার জন্য ভাল। আমি তো সবে শুরু করছি, তাই কোনও নির্দিষ্ট জঁনরে নিজেকে আটকে রাখতে চাই না।
প্রশ্ন: 'রাবণ'-র সঙ্গে একই দিনে মুক্তি পাচ্ছে আরও এক সুপারস্টার- দেবের 'কিশমিশ'। কী মনে হচ্ছে, দর্শক ভাগ হতে পারে?
লহমা: করোনা পরিস্থতির প্রায় দু'বছর পরে এতগুলো ছবি মুক্তি পাচ্ছে, আমার মনে হয় এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আমি চাই সকলে সিনেমা হলে গিয়ে সব বাংলা ছবি দেখুক। এটাই ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় জয় হবে।