পশ্চিমবঙ্গের একাধিক স্থানে চলছে ফসিলসের টানা কনসার্ট। তবু সময়টা হয়তো কিছুটা খারাপ যাচ্ছে রূপমের। বছরের শুরুতেই ফের শিরোনামে তিনি। এর আগেও তাঁর কনসার্টে ঝামেলা, অশান্তির জেরে তিনি খবরে ছিলেন বহুবার। সম্প্রতি বর্ধমানের কনসার্টে রুপমের করা মন্তব্য ঘিরে জোর চর্চা চলছে বিভিন্ন মহলে। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়াতেও আলোচনার বিষয়বস্তু হতে দাঁড়িয়েছেন রূপম।
এদিনের কনসার্টে, টলিউডের পরিচালকদের উদ্দেশ্য করে তাঁকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ তোলেন রূপম। শিল্পী বলেন, "আমাদের ওই অশোকস্তম্ভের নিচে লেখা আছে 'সত্যমেব জয়তে'। এটা একটু মাথায় রাখতে হবে। আমরা কিন্তু সেই দেশের নাগরিক। এখানে ফেসবুক রিল জেতে না। এখানে সত্য কথা জেতে। এই যে আমার মতো একটা লোক এতদিন ধরে আমার গান কেউ শুনবে না ভেবেও, বারবার মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া অতিক্রম করেও এই যে গান লিখে গেল, গান গেয়ে গেল, সিনেমার কৃপাপ্রার্থী না হয়েও...।"
তিনি আরও বলেন, "আমাকে পরিচালকদের কৃপাপ্রার্থী হতে হয়নি। তাঁরা আমাকে নিয়েছে আমার নামটা ব্যবহার করার জন্য। আমার জনপ্রিয়তা ব্যবহার করার জন্য তাঁরা নিয়েছে আমাকে। আমি অতিরিক্ত কোনও সুবিধা সেখান থেকে পাইনি। এরপরই রূপমের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন, "লাভবান কারা হয়েছে? যাদের বুদ্ধি আছে, বিবেচনা আছে, তারা জানে।" এরপর থেকেই ফের শিরোনামে রূপম ইসলাম।
এরপর নেতিবাচক মন্তব্যের জেরে বেজায় চটলেন রূপম। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বললেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। রূপম লেখেন, "অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী। ঠিক তেমনই আজকের যুগের অল্প ভিডিও বা বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত 'রিলস'— কারণ তাতে অর্ধ সত্য প্রকাশিত হয়, বাকি অর্ধেক মানুষের সামনে এসে পৌঁছয় না। বা পৌঁছতে দেওয়া হয় না। অ্যাটেনশন স্প্যান কমছে, নাকি আমরা কমাতে বাধ্য করছি- এটা ভেবে দেখা যেতেই পারে...।"
রূপম আরও লেখেন, "আমি যে মঞ্চে গান গাই- তা কারুর কৃপাপ্রার্থী হয়ে আমায় অর্জন করতে হয়নি। এ তো অল্টারনেটিভ গান বাজনারই জয়। যেখানে আমি জিতলাম, জিতলেন আমার দর্শক-শ্রোতা, আমার জনপ্রিয়তা অন্য কেউ সার্থকভাবে ব্যবহার করলেন, তা তাঁদের কাজে লাগল- এতে ক্ষোভের কী আছে রে বাবা! এ তো আনন্দের বিষয়। সেটাই তো বলেছি! আর এসব কথা আমি জানলাম কী করে? চিত্রপরিচালক, সঙ্গীত পরিচালকরাই তো আমায় এটা বারবার বলেছেন। বানিয়ে তো বলছি না। এটা তো আমার নন-ফিল্ম ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে নিজের তৈরি করা গান নিয়ে, দামি নায়কের ভিডিও না পেয়েও, বিরাট প্রযোজনা সংস্থার সাহায্য এবং অংশগ্রহণ না পেয়েও, গানগুলিকে, অ্যালবামগুলিকে জনপ্রিয় করা, একটা নতুন ধারাকে সঙ্গীত বাজারে প্রতিষ্ঠিত করবার সাফল্য। এর মধ্যে ক্ষোভ কোথায়, আক্রমণ কোথায়- আমি তো বুঝছি না। কৃপাপ্রার্থী হলে খুশি হতাম, কৃপাপ্রার্থী না হতে হয়ে ক্ষুব্ধ- এ কথা আমি কখন বললাম। বরং গর্বই তো করলাম স্বাধীন বাংলা মৌলিক গানের মঞ্চ নিয়ে"
প্রসঙ্গত, 'ফসিলস্'-র প্রধান কণ্ঠশিল্পী রূপম ইসলাম একাধারে গায়ক, সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার এবং লেখক। তবু বারবার তিনি শিরোনামে আসেন বেফাঁস মন্তব্যে জেরে। বাংলা রক ব্যান্ড ফসিলস্ কিংবা রুপমের ফ্যানেরা সংখ্যা বিপুল। তাই নেতিবাচক মন্তব্য সত্ত্বেও তাঁকে শুভেচ্ছা, ভালোবাসায় ভরান অনুগামীরা।