Sahitya Aajtak Kolkata 2023: 'সাহিত্য আজ তক কলকাতা'-র (Sahitya Aajtak Kolkata 2023) মহাকুম্ভের মঞ্চে আজ উপস্থিত হন বাংলা টলিউড জগতের জনপ্রিয় তিন অভিনেতা-পরিচালকেরা। 'সিনেমার রাজনীতি, রাজনীতির সিনেমা' প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ, পরিচালক-প্রযোজক তথা অভিনেতা অরিন্দম শীল (Arindam Sil) এবং পরিচালক তথা অভিনেতা কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। পরিচালক অরিন্দম শীলের বিস্ফোরক দাবি, রং না বেছে নিলে, রং আপনাকে বেছে নেবে।
'রুদ্র রাজনীতিকে বেছে নিয়েছে, ও পারে, আমরা পারি না'
পরিচালক অরিন্দম শীলের দাবি, আলোচনাটা কোথায় যেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি এই মঞ্চে এসে সিনেমার স্বার্থে কথা বলব। আমরা যে যে কাজ করি, সেই কাজটা যদি আমরা প্যাশন দিয়ে করি। ভারতবর্ষের আঙ্গিকে দাঁড়িয়ে সত্যি বলুন তো, কোথায় রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে পারেন? যেটা সত্যি বা মিথ্যে বলা যায়? লাল, সবুজ বা গেরুয়া বেছে নিতে হবে। রুদ্র রাজনীতিকে বেছে নিয়েছে। ও পারে, আমরা পারি না।
'রাজনীতির বাইরে বাঁচতে পারবেন না, রাজনীতি আপনাকে বাঁচতে দেবে না'
বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতি প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, এখন রাজনীতির বাইরে বাঁচতে পারবেন না। রাজনীতি আপনাকে বাঁচতে দেবে না। আপনাকে রং বেছে নিতে হবে, নাহলে রং আপনাকে বেছে নেবে। আমি কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেই সময় অন্য সরকার ছিল। একটি ছবি এসেছিল, 'গুডবাই লেনিন', তখন ভিতরে কথা হচ্ছিল, এই ছবিটা কি দেখাব? কারণ, লেনিনের মূর্তি ভেঙে পড়ার ছবি, লাল পতাকা নামানো হচ্ছে.... তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ছবিটা দেখানো প্রয়োজন। এমন সাহস থাকলে, সিনেমা নিজস্ব ক্ষেত্রে বিচরণ করতে পারে। সিনেমা, খেলাধুলায় রাজনীতি থাকা উচিত না।
'আমি বলেছিলাম ধনঞ্জয় মিডিয়ার ট্রায়াল ছিল'
ধনঞ্জয় ছবি প্রসঙ্গে পরিচালকের দাবি, আমার ছবি 'মহানন্দা' নন্দনে দেখানো হয়নি। তখন কে প্রশ্ন তুলেছে? কিন্তু আরেকটা ছবি তার রাজনৈতিক রং আলাদা, সেসময় কেন তার ছবি দেখানো হল না সেই নিয়ে সবাই ফেটে পড়ল। ভারতে রাজনৈতিক ছবি তৈরি হয় না। এখানে সেই বাতাবরণ নেই। ভারতবর্ষে রাজনৈতিক ছবি তৈরি হয় না বলে সত্যজিৎ রায়কে স্যাটায়ার করে হীরক রাজার দেশে করতে হয়েছে। আমার ধনঞ্জয় মুক্তি পাওয়ার পর এর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছিল। কারণ, আমি বলেছিলাম ধনঞ্জয় মিডিয়ার ট্রায়াল ছিল। আমরা সততাকে নিজের চোখে দেখতে ভুলে গেছি।
বয়কট, রং দেখে সিনেমা চলতে দেওয়া হয় না এই বিষয়গুলি বর্তমান ছবির জগতকে অশান্ত করে তুলছে। সেই প্রসঙ্গেই অরিন্দম শীল জানান, এখন ভাষার নিম্নগামিতা হয়ে গেছে। তার প্রতিফলন সবজায়গায় দেখছি। চলচ্চিত্র নির্ধারণ করে দেবে না যে এটাই পথ, বা মার্গদর্শন করবে না। ছবি কথা বলবে, সমাজকে আয়নার মত দাঁড় করাবে। আক্ষেপ নিয়েই তাঁর মন্তব্য, সৎভাবে কথা বলা কমে আসছে। মুক্তকণ্ঠে কথা বলার জায়গাটাই আর নেই।