চলছে উৎসবের মরসুম। বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ দুর্গাপুজোয় গা ভাসিয়েছে আট থেকে আশি। সাধারণ মানুষ থেকে তারকা, সকলে মেতে উঠেছে উৎসবের আনন্দে। পুজো মানেই খাওয়া- দাওয়া, আড্ডা, ঠাকুর দেখা, গান -বাজনা, প্রচুর সাজগোজ এবং ঢাকের আওয়াজ। টেলি বা টলিপাড়ার সেলেবরা কীভাবে পুজোর দিনগুলি কাটাচ্ছেন, সেদিকে নজর থাকে সকলের।
প্রতি বছর দুর্গাপুজো হয় তারকা দম্পতি অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় ও সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। দক্ষিণ কলকাতার বাড়ির মা দুর্গা খুব জাগ্রত বলেই বিশ্বাস করেন অনেকে। এই পুজো নিয়ে বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনাও ঘটেছে তাঁদের বাড়িতে। এমনকী এই প্রমাণ নাকি বারবার পেয়েছেন চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে আগত অতিথিরা।
অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি ঢাকা বিক্রমপুরে। ওপার বাংলায় পরিচালকের বাড়িতে পুজো হত। এরপর সুদীপা পরিবারের বউ হয়ে আসার পর পুজো শুরু হয় কলকাতার বাড়িতে। প্রায় ১৪ বছর ধরে বাড়িতে দুর্গার পুজো করছেন সুদীপা। চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর বিশেষ কিছু নিয়মকানুন- রীতিনীতি রয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে সুদীপা জানান, পুজোর সময় উমা তাঁদের বাড়িতে আসেন মেয়ে হয়ে।
সুদীপা বাড়িতে ত্রিবেণী মতে পুজো হয়। যার অর্থ, তিনটে মতে পুজো। ষষ্ঠী থেকে সপ্তমীর পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। সপ্তমীতে শিব আসেন। ওই দিন থেকে অষ্টমীর আগে পর্যন্ত শৈব মতে পুজো হয় এবং অষ্টমী পুরোটাই শৈব ও বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। এরপর বলিদান হলে সন্ধিপুজোর পর থেকেই তন্ত্র মতে পুজো হয়। নবমীর পর নারায়ণ তুলে নেওয়া হয়। তার পর মা দুর্গাকে মাছ-মুখ করানো হয়। দুর্গা যেহেতু সধবা, তাই মাছ না খাইয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয় না।
চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর একটি অন্যতম বিশেষত্ব হল মাকে রক্ত দিতে হয়। সুদীপার রক্তের সঙ্গে রং মিশিয়ে দেবীর মুখ রং করা হয়। নয়তো ফ্যাকাসে লাগে মাকে। সুদীপা জানান, এক বছর দেবী রাগ করেছিলেন তাঁদের উপর। মুখে কিছুতেই রং আসছিল না। তখন শিল্পী পশুপতি রুদ্র পাল তাঁকে বলেন, তিনি একটু রক্ত দিতে পারবেন কি না। সেসময় সুচ পুড়িয়ে কয়েক ফোঁটা রক্ত দিয়েছিলেন সুদীপা। এরপর থেকে এই ধারা মেনে আসছেন তাঁরা।