Advertisement

EXCLUSIVE: 'নক্ষত্র' পতনে শোকস্তব্ধ বাংলার নাট্যজগৎ

বিভাস চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত থেকে ব্রাত্য বসু, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

মঞ্চে সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়
অদিতি কুন্ডু
  • কলকাতা,
  • 15 Nov 2020,
  • अपडेटेड 8:17 PM IST
  • সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রয়াণে নাট্য়জগতে শোকের ছায়া
  • স্মৃতিরোমন্থনে বিভাস চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত
  • ''বাংলা থিয়েটারে অবিস্মরণীয হয়ে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়।'' বললেন ব্রাত্য় বসু, দেবেশ চট্টোপাধ্য়ায়।

রবিবার দুপুরে গল্ফগ্রিনের বাড়িতে যখন পৌঁছলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তখন পাশের বাড়ির জানলা থেকে ঝুঁকে দেখছেন বিভাস চক্রবর্তী। প্রায় এক মাসের কাছাকাছি সন্ধের আড্ডাটা আর বসত না। নাটক পড়া হত না। আদান-প্রদান হত না। 

সেই প্রতিবেশী, বন্ধু, দাদা আজ যখন কাঁচের বাক্সবন্দী গাড়িতে এলেন। বিভাস চক্রবর্তীর চোখের কোনে জল। চল্লিশটা বছর একসঙ্গে থাকা। 'পাশের বাড়ির স্টার'কে নিয়ে লিখলেও, স্টার যে এত কাছের জানা ছিল না। বিয়োগের প্রতিক্রিয়ায় বললেন,  ''ছবিতে, নাটকে তিনি যতটা পেশাদার, আসলে কিন্তু খুব স্বাভাবিক। নিপাট ভাল মানুষ। তাঁর উচ্চতা তিনি অন্যকে টের পেতে দিতেন না। যেকোনও মানুষের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দে কথা বলতেন।'' সৌমিত্র সম্পর্কে নিজের লেথা থেকে বললেন, ''একজীবনে এত গুণ। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বুঝতে চাওয়া মানে অন্ধের হস্তী দর্শন।  নিচ থেকে চিৎকার করে আর ডাকবেন না। বলবেন না... বিভাস... এসো বসি, একটু আড্ডা দিই।''

নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তর সঙ্গে বহুদিনের আলাপ। প্রায় কলেজ জীবন থেকেই। তারপর কফিহাউস। তিনি বললেন, ''আর পাঁচটা শিল্পীর মত একেবারেই নয়। একসঙ্গে অনেক কিছু পারতেন। কোনও স্পেশালাইজেশন ছিল না। নাটক, সিনেমা, গল্প লেখা, ছবি আঁকা, কবিতা, ভাষ্যপাঠের পাশাপাশি পত্রিকার সম্পাদনা। একইসঙ্গে বন্ধুবৎসল, আড্ডাবাজ, খেতে ভালবাসা, হই হই করে বাঁচা। এসবকিছুর মিশ্রণ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অপূরণীয় ক্ষতি।'' 

শুধু ওই প্রজন্মই নয়, এ প্রজন্মের নাটকের কাছেও তিনি বহু মূল্যবাণ রত্ন। নাট্যকার ব্রাত্য বসু বললেন, ''শুধুমাত্র সিনেমার অভিনয়ের জায়গা থেকে নয়, সত্যজিৎ রায় ভারতবর্ষকে সারা পৃথিবীর কাছে এবং বিকল্প সিনেমার যে পথ তিনি খোদাই করেছিলেন তার সব থেকে বড় মুখ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ফলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সারাজীবন মহীয়ান হয়ে থেকেছেন। উজ্জ্বল হয়ে থেকেছেন। পরবর্তীকালে নায়ক থেকে তাঁর যখন বয়স বেড়েছে, তিনি ক্যারেক্টার রোল করেছেন, তখনও তিনি অনেক চরিত্রে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।'' তিনি আরও বলেন ''সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে পেশাদারী মঞ্চে। তাঁর থিয়েটার কর্ম। যেভাবে তিনি একের পর এক থিয়েটার করে গেছেন এবং সে থিয়েটারে সারা পৃথিবীর নাটক। সেটা একটা অকল্পনীয় ঘটনা। পেশাদারী মঞ্চে ব্যবসাভিত্তিক বা বিপণন ভিত্তিক যে স্থূলতা ছিল সেখানে সৌমিত্র বাবু যে ধরনের কাজ পরপর করে গেছেন তা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। ফলে দুদিক থেকেই তিনি বাঙালির জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।'' 

Advertisement

দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণা এমনটা, ''শিশির ভাদুড়ীর ছাত্র ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা থিয়েটারের যে ঐতিহ্য, সেই ঐতিহ্যকে আমাদের এই প্রজন্মের আধুনিকতায় পুনর্নিমাণ করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শিশির ভাদুড়ীর উত্তরসুরী হিসেবে বাংলার অভিনয়ের আধুনিক ভাষা নিমার্ণ করেছিলেন তিনি।''

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement