চিনে করোনা-হাহাকার। কোভিড চিন্তা বাড়িয়েছে সরকার থেকে প্রশাসন, সমস্তমহলের। এরই মাঝে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের কি দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ লাগবে? চিনের স্টেট কাউন্সিলের যৌথ মহামারী দল এই প্রশ্নের উত্তরে 'হ্যাঁ' বলেছে। মহামারী দলটি দ্বিতীয় বুস্টার শট হিসাবে আগের তিনটি ডোজের থেকে একটি ভিন্ন ভ্যাকসিন বেছে নেওয়ার জন্য মানুষের কাছে আবেদন করেছে। বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের মানুষদের দ্রুত চতুর্থ শট নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
চিনের স্টেট কাউন্সিলের জয়েন্ট প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগের বিশেষজ্ঞরা রবিবার টিকা নিয়ে জনসাধারণের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবং বলেছেন যে COVID-19 সংক্রামিত ব্যক্তিদের নিজেদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দ্বিতীয় বুস্টার শট নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। যৌথ দল আরও বলেছে যে, যাঁরা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের সংক্রমণের অন্তত ছয় মাস পর চতুর্থ শট নেওয়া উচিত।
চতুর্থ ডোজ নিষ্ক্রিয় হওয়া উচিত নয়
চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (CDC) প্রাক্তন প্রধান মহামারী বিশেষজ্ঞ ঝেং গুয়াং সংক্রমণের কারণ এবং সমাধান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, যদি মানুষ আগের ভ্যাকসিন হিসাবে ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন নিয়ে থাকেন, তাহলে চতুর্থ টিকাটি নেওয়া উচিত নয়। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ঝুয়াং শিলিহে রবিবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু বিদেশী গবেষণাও সামনে এসেছে, যেখানে পাওয়া গিয়েছে যে ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিনের চার ডোজ শুধুমাত্র সীমিত সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী ভ্যাকসিন
যৌথ দল জানাচ্ছে যে, বুস্টার ডোজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে এবং গুরুতর অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি জোগাবে। সেই সঙ্গে অ্যান্টিবডির মাত্রাও বাড়বে। যেহেতু শেষ টিকা দেওয়ার পর থেকে অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে, ফলে অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে গিয়েছে। আর তার জেরে ভাইরাসের মিউটেশনের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাও কমে গিয়েছে।
ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন কী?
ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিনগুলিতে মৃত প্যাথোজেন (যে ভাইরাল রোগ সৃষ্টি করে) থাকে। এই মৃত প্যাথোজেনগুলি শরীরে প্রবেশ করে তাদের সংখ্যা বাড়াতে পারে না। তবে শরীর সেগুলিকে বাহ্যিক আক্রমণ হিসাবে ধরে নেয় এবং সেগুলির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডিগুলি বিকাশ শুরু করে। নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থেকে রোগের কোন ঝুঁকি নেই। এতে জেনেটিক উপাদান তাপ, রাসায়নিক বা বিকিরণ দ্বারা ধ্বংস হয়ে যায় যাতে তারা কোষকে সংক্রমিত করতে না পারে। এমতাবস্থায় শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডিতে আসল ভাইরাস আসলেও রোগ ছড়ায় না। এটিকে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন - একলাফে অনেকটা বাড়ল তাপমাত্রা, আর কি শীত ফিরবে?