কবে কাটবে কোভিড অতিমারি (Covid-19 pandemic)? প্রশ্নটি গোটা ২০২০ সালে সবচেয়ে আলোচিত ছিল। সাধারণ মানুষ তাকিয়ে ছিলেন বিশেষজ্ঞদের মুখের দিকে, উত্কণ্ঠায়। Covid-19 নিয়ন্ত্রণে আসার প্রশ্নে বিশেষজ্ঞদের কথাতেই ভরসা। বিশেষজ্ঞরা বারবারই বলেছেন, এই রোগ দীর্ঘ দিন স্থায়ী হবে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে লকডাউন হয়তো কাল থেকেই, কড়া বিধি কেরলেও
এরপর ফোকাস গেল ঢেউয়ের দিকে। করোনা অতিমারির ঢেউ। বর্তমানে ভারত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাচ্ছে। দেশের কিছু রাজ্য একাধিক ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাচ্ছে। কয়েক দিন আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, গোটা দেশে যখন দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে, তখন করোনা অতিমারির চতুর্থ ঢেউ সামলাচ্ছে দিল্লি। দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই আবহে ফের প্রশ্নটা উঠল, কবে ভারতে করোনা অতিমারি শেষ হবে?
একটি ব্যর্থ ভবিষ্যদ্বাণী
গত বছর যখন গোটা দেশে করোনা অতিমারি আছড়ে পড়ল, কেন্দ্র তখন আইআইটি, আইএসআই, আইআইএস-এর মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি গঠন করে। ভারতের পরিস্থিতি মাফিক একটি সুপার মডেল তৈরি করে এই কমিটি। সেই সুপার মডেলের গণনা অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে করোনা অতিমারি ভারতে থামতে পারে, কারণ ততদিনে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে যাবে। সেই মডেলে আরও জানা যায়, প্রতিটি গবেষণাগারে করোনা টেস্টে দেখা যাচ্ছে, ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ করোনা ভাইরাস বহনকারী রয়েছে ভারতে, যাদের কোনও উপসর্গ নেই।
ICMR-এর অনুমান অবশ্য একেবারেই অন্য রকম ছিল। ICMR-এর সেরো সার্ভে বলছে, প্রতিটি গবেষণাগারে করোনা টেস্টে পজিটিভ আসা ২৬ থেকে ৩২টি কেসের ক্ষেত্রে উপসর্গহীন।
কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দেয় গত অক্টোবরে। যখন ভারতে করোনা আক্রান্ত প্রায় ৭৫ লক্ষের কাছে। সেই নম্বরের ভিত্তিতে অনুমাণ, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত হতে পারে। অর্থাত্ প্রায় ৫০ কোটি। ফেব্রুয়ারির মধ্যে অতিমারি বন্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ভারত দেখল, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যার নির্যাস, অ্যাক্টিভ কেস ছাড়িয়ে গেল ৯ লক্ষ। যদিও সেই সুপার মডেল যার নাম 'সূত্র', সেটিও মিথ্যে হয়েছে বলা যায় না। কারণ সেপ্টেম্বরে যেখানে দৈনিক কেস ছিল ৯৭ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে তা কমে হয় ৯ হাজার।
দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে প্রেডিকশন
IIT-কানপুরের বিজ্ঞানীরা করোনা অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের নয়া গণনায় একই মডেল অ্যাপ্লাই করছেন। তাঁদের প্রেডিকশন বলছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এপ্রিলের মাঝামাঝি সর্বোচ্চ পর্যায়ে, তারপর আস্তে আস্তে গ্রাফ নীচের দিকে নামবে। তার মানে দাঁড়ায়, এপ্রিলের শেষের দিক থেকেই করোনা আক্রান্তের গ্রাফ কমতে শুরু করে দেবে। মে-র শেষের দিকে অনকেটাই কমে যাবে আক্রান্তের সংখ্যা।
তবে বিশেষজ্ঞ কমিটি কোভিড আক্রান্ত কমার প্রেডিকশনের পাশাপাশি একটি সতর্কবার্তাও দিয়েছে। সেটি হল, 'এই নম্বর আবার বাড়তে পারে, যদি মাস্ক, দূরত্ববিধি, ঠিক মতো টেস্ট না করা হয়। করোনা আক্রান্তের গ্রাফ তখনই নামবে, যখন এইগুলি মানা হবে।'