ভারতে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (Corona Second Wave)। আর এই মারণ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে টিকাকরণে। তবে দেশ তথা বিদেশেও কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যে টিকা নেওয়ার পরেও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সেই সংখ্যাটা কম হলেও আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোন কোন দিকে বিশেষ নজর রাখা উচিত সেই বিষয়ে নিজেদের মতামত জানালেন বিশেষজ্ঞরা।
ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গেলেও কেন হচ্ছে করোনা?
এই বিষয়ে সিকে বিড়লা হাসপাতালের চিকিৎসক রাজা ধর জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিন (Vaccine) একটি বুস্টার হিসেবে কাজ করে, যা জ্বর বা অন্যান্য উপসর্গ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ এটি সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সচেতন থাকার ক্ষেত্রে কোনওভাবেই ঢিলেমি দেওয়া চলবে না।
পাশাপাশি এই প্রসঙ্গে মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক অভিরাল রায় জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিন শরীরে একটা মাত্রা পর্যন্ত শক্তি দেয়। কিন্তু এটি দ্বিতীয়বার সংক্রমণের একটি কারণ বটে। এর কারণ হিসেবে ওই চিতিৎসক জানাচ্ছেন, ভাইরাস নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। আর বর্তমানে যে সমস্ত ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে সেগুলি নাকে নয়, রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ফলে শরীরে ভাইরাসের প্রবেশ পথ খোলাই থেকে যায়। তবে ভ্যাকসিন নিলে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায় বলেও জানাচ্ছেন তিনি।
ভ্যাকসিন নেওয়া কতটা জরুরি?
কারও কারও মনে প্রশ্ন রয়েছে, করোনা থেকে বাঁচতে কতোটা সাহায্য করছে ভ্যাকসিন? এক্ষেত্রে কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নেওয়ার ২ সপ্তাহ পর সেটি কাজ করতে শুরু করে। এর ফলে ৫০-৬০ শতাংশ সুরক্ষিত হওয়া যায়। আবার কেউ কেউ বলছেন ভ্যাকসিনের নিয়ে প্রায় ৮৫ শতাংশ সুরক্ষিত হওয়া যায়, আর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫ শতাংশে।
তবে ভ্যাকসিনে নেওয়ার পরেও যেহেতু কোনও কোনও জায়গা থেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে তাই টিকা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে অবশ্যে চিকিৎসক অবিরল রায় জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে ভাবনাচিন্তার দরকার নেই। যদি নাম আসে তাহলে নিয়ে নেওয়া উচিত। কারণ ভ্যকাসিন নিলে কোনও ক্ষতি নেই, বরং টিকা নেওয়ার পরেও যদি করোনা হয় তাহলেও শরীরে তার প্রভাব অনেকটাই কম হবে। অন্যদিকে চিকিৎসক রাজা ধর মনে করেন, ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজে যে সুরক্ষা পাওয়া যায় তা সীমিত। সেই সময় অনেকেই ভাবেন যেহেতু ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গিয়েছে তাই আর কোনও সমস্যা নেই। আর তাতেই বিপদ বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কী করা উচিত?
যাঁরা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন তাঁদের অনেককেই দেখা যাচ্ছে আর সঠিক ভাবে মাস্কের ব্যবহার করছেন না। ভ্যাকসনি অ্যান্টিবডি তৈরি করতে ২ সপ্তাহ সময় নেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রত্যেকেরই কোভিড গাইডলাইন মেনে চলা উচিত। আর ভাইরাস প্রবেশও করে নাক দিয়েই। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও মাস্ক ব্যবহারেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।