অনেকে বলে থাকেন, প্রেমের পরিণতি বিয়ে। কিন্তু এক্ষেত্রে যা হল তা হাড়হিম করে দেবে। ৫২ বছরের মহিলা নিজের বয়স লুকিয়ে তার সঙ্গে প্রেম করছে, জানার পর প্রেমিকাকে খুনই করে দিল যুবক। ঘটনার নৃশংসতায় অবাক খোদ পুলিশকর্তারাও। যদিও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
ঘটনা উত্তরপ্রদেশের মেনপুরীর। সেখানকার ৫২ বছর বয়সী এক মহিলার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে আলাপ হয় ২৬ বছরের এক তরুণের। সেই মহিলা নিজের বয়স লুকোনোর জন্য ইনস্টাগ্রামের ফিল্টার ব্যবহার করত। ফলে সেই যুবক মহিলার বয়স বুঝতে পারেনি। এভাবে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ বাড়তে থাকে। প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু দুজনের মধ্যে সাক্ষাৎ হওয়ার পরই সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। যুবক বুঝতে পারে, তার কাছে বয়স লুকিয়ে প্রেম করেছে রানি নামের ওই মহিলা।
যদিও এই খুনের নেপথ্যে যে প্রেমের গল্প আছে তা পুলিশ জানতে পারে রানির দেহ উদ্ধারের প্রায় মাসখানেক পরে। মেনপুরীর এক পরিত্যক্ত জায়গা থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাকে। তার চার সন্তান রয়েছে। মৃতার ইনস্টাগ্রাম ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অরুণ রাজপুতের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল রানির।
পুলিশ জানিয়েছে, অরুণ রানিকে অপছন্দ করতে শুরু করে তার বয়স জানতে পারার পরই। তবে সেই অসন্তোষ সে চেপে রেখেছিল। বুঝতে দেয়নি। দুজনে নিয়মিত দেখা করত। শারীরিক সম্পর্কও হত। একে অপরকে টাকা ধার দিত। আর সেই টাকায় খুনের কারণ হয়ে ওঠে।
জেরায় অরুণ জানিয়েছে, ইনস্টাগ্রামে আলাপ হওয়ার পর তাদের মধ্যে ঘন ঘন কথা হত। একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করে তারা। তবে রানিকে সামনে দেখার পর ভুল ভাঙে তার। বুঝতে পারে, রানির বয়স অনেক। তখন সে কিছু বলেনি। পরে রানি তাকে দেড় লক্ষ টাকা ধার দেয়। শারীরিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ বারবার তুলে বিয়ে করার জন্য জোর করতে শুরু করে। কিন্তু সে তাতে রাজি হয়নি। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে।
১০ অগাস্ট বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অরুণ রানিকে ডাকে মেনপুরীর এক নির্জন জায়গায়। অরুণ পুলিশকে জানায়, সেখানে আসার পর থেকে তার কাছে দেড় লাখ টাকা ফেরত চায় রানি। তবে তার কাছে টাকা ছিল না। সেজন্য দুজনের মধ্যে খুব ঝামেলা হয়। এরপরই সে রানির গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে খুন করে। তারপর পালিয়ে যায়।
এরপর অরুণকে ঘটনার প্রায় এক মাস পরে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, একাধিক টিমে ভাগ হয়ে অরুণকে খোঁজার পরই সাফল্য মিলেছে। খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সে।