বীরভূমের মল্লারপুরে মা ও মেয়েকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ‘সাধুবাবা’ সুনীল দাস ওরফে হরিচরণ দাসকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। এবার তার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের মে মাসে। ১৭মে বীরভূমের মল্লারপুরের বাড়ি থেকে মা ও মেয়ের দেহ। ওই মহিলা খাদ্য দফতরের কর্মী ছিলেন। তাঁর ১৭ বছরের মেয়েকেও খুন কা হয়। জানা যায়, মেয়ের শরীরে পুরনো পোড়ার দাগ সারানোর নাম করে অভিযুক্ত সাধুবাবা ওরফে সুনীল দাস তাঁদের থেকে প্রায় ১.৬১ লক্ষ টাকা নেন। যজ্ঞ করে এই দাগ সারানো হবে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
অভিযুক্ত ওই 'সাধুবাবা' কাজুবাদাম বাটায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা ও মেয়েকে অচৈতন্য করে দেন। এরপর প্রথমে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে মা ও মেয়েকে খুন করেন। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
কোর্টে মামলা রুজু হলে, বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ আইপিসি ৩০২ অনুযায়ী খুনের ধারা দেন। মা ও মেয়ের মেডিক্যাল রিপোর্টে জানা যায়, শ্বাসরোধে তাদের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ মুখ বাঁধা অবস্থায় থাকার কারণে খুন করা হয়। খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এমনকি ঘটনার প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার মামলাও রুজু হয়।
যদিও পোস্টমর্টেম রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের কোনও প্রমাণ মেলেনি। ফলে এই অভিযোগটি খারিজ হয়। খুনের ঘটনায় ট্রায়াল কোর্ট মৃত্যুদণ্ড সাজা দিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট রায়ে জানায়, অপরাধটি যদিও জঘন্য, তবে বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয়। তাই 'সাধুবাবা'র মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ে ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ হয়। খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় অভিযুক্তকে।