ক্যানিংয়ে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিংয়ের ঘটনা। অভিযুক্তরা পলাতক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় এক গৃহবধূকে পিটিয়ে খুন করে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল। স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ওই বধূর নাম প্রীতিলতা সর্দার (২১)।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যানিং থানা এলাকার গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গলাডহরা গ্রামে। তাঁর ওপর নির্যাতন করা হত বলে অভিযোগ। তাই তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিলেন বাপের বাড়িতে। তবে দিন কয়েক আগে তাঁকে ডেকে আনা হয় ফোন করে। আর তারপর এই ঘটনা। দাবি ওই বধূর পরিবারের সদস্যদের।
ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত স্বামী ঝন্টু সর্দার সহ পরিবারের বাকি সদস্যরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিয়ের পর থেকেই অত্যাচার করা হত ওই গৃহবধূর ওপর। এমনই অভিযোগ বধূর পরিবারের সদস্যদের। ঝন্টুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারার কারণেই তাঁর উপর অত্যাচার করা হত বলেই অভিযোগ মৃতার পরিবারের সদস্যদের।
স্বামী-সহ শ্বশুর, শাশুড়ি সকলে মিলেই অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। তারাই মারধর করে, খুন করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ওই গৃহবধূর। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রীতিলতাকে উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে ক্যানিং থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও। এই ঘটনায় এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। পাশাপাশি এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
তাঁর বাবা পরিতোষ সর্দারের অভিযোগ, যৌতুক নিয়ে অসন্তোষ ছিল। কখনও একলক্ষ টাকা চাইত, কখনও ২ লক্ষ টাকা চাইত। মেয়ে বাড়িতে আসত, টাকা চাইত। কিছু টাকা দিয়ে ফেরতে পাঠাতাম। তখন আবার টাকা চাইত। জামাই সেই টাকা নিয়ে চলে যেতন।
তাঁর অভিযোগ, জামাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। টাকাপয়সা নিয়ে জামাই পড়শি এক মহিলার সঙ্গে থাকতেন। বিয়ের সময় অনেক কিছু দিয়েছি। মেয়ে আপত্তি জানালেও কথা শোনা হয়নি। তার মা-বাবা বলতেন, তোমার কী? তবে তারপরও তারা চাইতেন।
নিহতের আত্মীয় আশুতোষ সর্দারের দাবি, মেয়েকে নির্যাতন করা হত। আমাদের জানায়। থানায় জানায়। তাদের মানা করা হয়। তবে আবার মারধর করে। মেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। তখন ওরা ফোন করে ডেকে আনে। বৃহস্পতিবার শুনতে পাই, মেয়ে পুড়ে মারা গিয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, আমরা সেখানে যাই। দেখি, পিটিয়ে মেরে দেওয়া হয়েছে। ঘরের মধ্যে ঢুকলাম কোনও কিছু পোড়েনি, খালি আগুন লাগিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।