
বিয়ে দিতে রাজি ছিল না পরিবার। সেকারণে ছেলেটিকে খুন করে প্রেমিকার পরিবার। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় সেই যুবতী মৃতদেহের সঙ্গেই বিয়ে সারলেন। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নান্দেদের পুরনো গঞ্জ এলাকায়। গোটা ঘটনা সামনে এনেছেন আঁচল নামের ওই যুবতী নিজেই। তিনি জানিয়েছেন, সক্ষম টাটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। পরিবারের সদস্যরা তা জানতেন। তাঁকে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার হুমকিও দেওয়া হয়। তিনি তা মানেননি। সেই কারণেই তাঁর ভাই, সক্ষমকে খুন করে।
এদিকে সক্ষমের মৃত্যুর পর মৃতদেহের শরীরে হলুদ মাখিয়ে প্রতীকী বিয়ে সারেন আঁচল। সক্ষমের নিথর হাত দিয়ে কপালে সিঁদুর পড়ে নেন। বিড়বিড় করে বলেন, 'ও মরে গেলেও আমাদের প্রেম বেঁচে রইল। হেরে গেল আমার বাবা আর ভাইরা। সক্ষম মারা গেলেও আমি ওকেই ভালোবাসি। আমি ওর বাড়িতেই বউ হিসেবে থাকব।'
কেন সক্ষমকে খুন হতে হল? আঁচল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধেয় নান্দেরের পুরনো গঞ্জ এলাকায় সক্ষমের উপর চড়াও হয় তাঁর ভাই হিমেশ। গুলি করার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। সেদিনই সকালে আঁচলকে থানায় নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। আঁচল বলেন, 'সেদিন সকালে আমার ভাই আমাকে জোর করে থানায় নিয়ে গিয়ে সক্ষমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে বলে। আমি তাতে সায় দিইনি। তখন পুলিশ কর্মীরা আমার ভাইকে পরামর্শ দেয়, সক্ষমের বিরুদ্ধে থানায় না এসে মেরে ফেলতে। তাহলেই মুশকিল আসান হয়ে যাবে। আমার ভাই পুলিশের সেই কথা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়। তারপর খুন করে।'
এদিকে ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্য়ে মৃত যুবকের পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ আঁচলের পরিবারের সদস্য সহ আটজনকে গ্রেফতার করে।
আঁচল জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সক্ষমের সম্পর্ক তিন বছরের। তবে সক্ষম তপশিলি জাতির হওয়ায় তাঁর সঙ্গে মেনে নিতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। সেই থেকেই নাকি সক্ষমকে টার্গেট করেছিল যুবতীর বাবা-মা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সক্ষমের সঙ্গে আঁচলের সম্পর্কের কথা এলাকাবাসীরা জানতেন। তা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে আগেও। তবে এই কারণে যে সক্ষমকে খুন করা হবে তা ভাবনার অতীত।
আঁচল বলেন, 'সক্ষমকে আমি ভালোবাসতাম। ও তপসিলি জাতির ছিল। তাই আমার পরিবার আমাদের বিয়েতে রাজি ছিল না। আমার বাড়ির লোক যে ওকে খুন করে দেবে সেটা ভাবিনি। সকালে আমাদের কথা হয়েছিল। পরদিন খবরের কাগজে ওর মৃত্যুর খবর জানতে পারি।'