Advertisement

Shocking News: স্বামীর মৃত্যুর পর ভাসুরের সঙ্গে সম্পর্ক, জমির লোভে শাশুড়িকে খুন! গৃহবধূর কীর্তিতে হতবাক পুলিশ

Jhansi Murder Case: সাধারণ, মধ্যবিত্ত বাড়ির গৃহবধূ। সুশ্রী, নম্র, মিষ্টভাষী। এমনই এক মহিলা রীতিমতো প্ল্যান করে শাশুড়িকে খুন করালেন। ঝাঁসির এই ঘটনা কোনও ওয়েব সিরিজের ক্রাইম থ্রিলারকেও হার মানাবে। 

হাড়হিম: শাশুড়িকে খুন করে ৮ লক্ষ টাকার গয়না লুট, গ্রেপ্তার ছোট বউহাড়হিম: শাশুড়িকে খুন করে ৮ লক্ষ টাকার গয়না লুট, গ্রেপ্তার ছোট বউ
Aajtak Bangla
  • ঝাঁসি,
  • 05 Jul 2025,
  • अपडेटेड 3:09 PM IST
  • মহিলা রীতিমতো প্ল্যান করে শাশুড়িকে খুন করালেন।
  • ঝাঁসির এই ঘটনা কোনও ওয়েব সিরিজের ক্রাইম থ্রিলারকেও হার মানাবে।
  • তদন্ত এগোতেই দেখা যায়, কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে।

Jhansi Murder Case: আপাতদৃষ্টিতে ছাপোষা মধ্যবিত্ত বাড়ির গৃহবধূ। সুশ্রী, নম্র, মিষ্টভাষী। এমনই এক মহিলা রীতিমতো প্ল্যান করে শাশুড়িকে খুন করালেন। ঝাঁসির এই ঘটনা কোনও ওয়েব সিরিজের ক্রাইম থ্রিলারকেও হার মানাবে। 

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৪ জুন। ঝাঁসির কুমহারিয়া গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আর সেই সময়েই ডাকাতরা বাড়ির বৃদ্ধা সুশীলাকে হত্যা করে। সমস্ত মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়। জানা যায়, ডাকাতরা বাড়িতে এসে প্রথমে ওই বৃদ্ধাকে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে দেয়। এরপর শ্বাসরোধ করে খুন করে। এরপর আলমারি থেকে সমস্ত দামি জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।

সে সময়ে বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সন্ধ্যায়, বৃদ্ধার স্বামী অজয় রাজপুত বাড়ি ফেরেন। ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। ভিতরে ঢুকে দেখেন বিছানায় তাঁর স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে। প্রাথমিক আকষ্মিকতা কাটিয়ে তিনি পাড়ার লোকদের ডাকেন। খুন ও ডাকাতির কথা মুহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকায় চাউর হয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে।

ঘটনার দিন বাড়ির ছোট বউ বাপেরবাড়িতে গিয়েছিলেন। বড় বউও আট মাস ধরে তাঁর বাপেরবাড়িতে ছিলেন। তাঁর আবার নিজের স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ঝামেলা চলছিল(এর ভয়ানক কারণও আছে, শেষে জানতে পারবেন)।

শ্বশুরের সন্দেহ হয় বড় বউকে

গোটা বিষয়টিতে সন্দেহ হয় বৃদ্ধার স্বামীর। তিনি বুঝতে পারেন, এটি কোনও সাধারণ খুনের ঘটনা নয়।এরপরেই তিনি বড় বউ রাগিনী এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, সুশীলা পারিবারিক কলহ থেকেই এই খুন করিয়েছে। আলমারি খুলে লুটপাটের বিষয়টি নেহাতই চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা মাত্র। ডাকাতি নয়, খুনই এর আসল উদ্দেশ্য ছিল। নয় তো বৃদ্ধাকে বেঁধে রেখেই ডাকাতরা কার্যসিদ্ধি করতেই পারত। 

অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জোরদার তদন্ত শুরু করে। কিন্তু তদন্ত এগোতেই দেখা যায়, কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে।

মামলা হয়েছে শুনে বড় বউ নিজেই থানায় যান। দাবি করেন যে তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। অন্যদিকে ছোট বউ পূজা তার শাশুড়ির মৃত্যুর খবর শুনেও বাড়ি ফিরে আসেননি। আর সেখানেই পুলিশের পূজার প্রতি সন্দেহ তৈরি হয়।

Advertisement

ঝাঁসির পুলিশ গোয়ালিয়রে পূজার বাপের বাড়ি যায়। তাকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে সে পুলিশকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষমেষ জেরার মুখে ভেঙে পড়ে ছোটবউ পূজা।

পুলিশি জেরায় পূজা জানায়, সে-ই তার শাশুড়িকে খুন করিয়েছে। বোন কামিনী এবং কামিনীর প্রেমিক অনিল ভার্মাকে সে এই খুনের 'দায়িত্ব' দিয়েছিল।

কিন্তু কেন? জানলে চমকে উঠবেন

‘৮ বিঘা জমি’র লোভেই খুন?

আজ থেকে ১১ বছর আগে, ওরছার এক ব্যক্তির সঙ্গে পূজার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা শুরু হয়। মামলার জন্য আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েই কুমারিয়ার বাসিন্দা কল্যাণ রাজপুতের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়।

এই কল্যাণের বিরুদ্ধে আবার অনেক ফৌজদারি মামলা ছিল। আলাপ গড়ায় প্রেমে। দু'জনে বিয়ে করে একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। কিন্তু কিছু দিন পরই কল্যাণ একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়।

এর পরে, কল্যাণের বাবা অজয় রাজপুত এবং কল্যাণের দাদা সন্তোষ স্নেহবশত পূজাকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তাঁদের পরিবারের একজন হিসাবে গ্রহণ করে নেন।

স্বামীর মৃত্যুর পর বিবাহিত ভাসুরের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক

কিন্তু এখানেও বিপত্তি। মৃত স্বামীর দাদা সন্তোষের সঙ্গেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পূজা। একটি মেয়েও হয়। বলাই বাহুল্য, বিষয়টি মোটেও মেনে নেননি সন্তোষের স্ত্রী তথা বাড়ির বড় বউ রাগিনী।

তবে এতকিছুর পরও পূজার সঙ্গে তার শ্বশুর অজয়ের সম্পর্ক ভাল ছিল। কিন্তু শাশুড়ি সুশীলা পূজাকে মোটেও পছন্দ করতেন না।

৮ বিঘা জমির লোভ
এসবের মধ্যেই পূজা হঠাৎ তার শ্বশুরবাড়ির জমির অর্ধেক ভাগ দাবি করতে শুরু করে। শাশুড়ি এর তীব্র বিরোধিতা করেন। আর তাতেই পূজার সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে তাঁর উপর।

এরপরেই পূজা প্রথমে বাপেরবাড়িতে যায়। সেখানে বোন কামিনী এবং প্রেমিকের সঙ্গে শাশুড়িকে খুনের প্ল্যান করে। তাদের প্ল্যান ছিল, শাশুড়ির মৃত্যু হলেই আর কোনও সমস্যা থাকবে না। স্নেহপ্রবণ শ্বশুরমশাইকে ভুলিয়ে শ্বশুরবাড়ির ৮ বিঘা জমি লিখিয়ে নেবেন। এরপর সেটা বিক্রি করে তাদের দু'জনকে অর্ধেক করে টাকা ভাগ করে দেবেন। 

মিথ্যা বলে বাড়ি খালি করা!
 

এই বাড়িতেই খুন।

কিন্তু সবাই যদি বাড়িতেই থাকে, তাহলে খুন হবে কী করে? তাই পূজা প্রথমে তার শ্বশুরকে ফোন করে গোয়ালিয়রে আসতে বলে। সে বলেছিল যে আজ তার নাতনির জন্মদিন। অন্যদিকে সে তার প্রেমিক-ভাসুর সন্তোষকে ফোন করে বলে যে সে আবার গর্ভবতী হয়েছে। তাই তাকে বাড়িতে আসতে হবে। এইভাবে, বাবা এবং ছেলে উভয়কেই ২২ এবং ২৩ জুন পূজার গোয়ালিয়রে ডেকে নেয়। অন্যদিকে খুনিরা ঠিক সেই সুযোগেই সুশীলাকে খুন করতে গোয়ালিয়র থেকে ঝাঁসির কুমহারিয়া গ্রামে পৌঁছায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শাশুড়িকে খুন করে। পুলিশকে বোকা বানাতে মিথ্যা লুটপাট চালানো হয়।

তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ পূজা এবং তার বোন কামিনীকে গ্রেফতার করে। কিন্তু কামিনীর প্রেমিক অনিল ভার্মা পলাতক ছিল। মঙ্গলবার রাতে ঝাঁসির বাঘেরা এলাকায় পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। এনকাউন্টারের পর তাকেও গ্রেফতার করা হয়। অনিলের পায়ে গুলি করা হয়। পুলিশ তার কাছ থেকে সুশীলার বাড়ি থেকে লুট করা ৮ লক্ষ টাকার গয়নাও উদ্ধার করে। 

(ঝাঁসি থেকে প্রমোদ কুমার গৌতমের ইনপুট-সহ লেখা)

Read more!
Advertisement
Advertisement