দেশের রাজধানী দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মানুষ এখনও ভেলেননি। ফের একবার প্রকাশ্যে এল আরও একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড, যেখানে লিভ-ইন পার্টনার সাহিল গেহলত নিজের গার্লফ্রেন্ড নিক্কি যাদবকে খুন করে তাঁর দেহ ফ্রিজে রেখে বিয়ে করতে যায়।
শ্রদ্ধা ওয়ালকারের হত্যায় অভিযুক্ত দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল। ধীরে ধীরে সেই দেহাংশগুলি লোপাটা করা হয়। এই ঘটনার তদন্তের মাঝেই পুলিশের সামনে আসে অঞ্জন দাসের হত্যাকাণ্ড। তাঁর দেহের টুকরোও ফ্রিজে রেখে তারপর লোপাট করে দেওয়া হয়। হত্যা এবং মৃতদেহ ফ্রিজে রাখার পরপর এই ৩ ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে গোটা দেশ জুড়ে।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, নিক্কি যাদব হত্যা মামলা
দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে, বাবা হরিদাস নগর এলাকায় নিক্কি যাদব নামে এক মহিলাকে খুন করা হয় এবং তাঁর মৃতদেহ একটি ধাবার ফ্রিজে লুকিয়ে রাখা হয়। নিক্কিকে খুন করে তাঁর প্রেমিক সাহিল গেহলত। প্রথমে মোবাইল চার্জিং কেবল দিয়ে নিক্কিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়, পরে তাঁর দেহ লোপাট করা হয়। শুধু তাই নয়, ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই অপর এক মহিলাকে বিয়ে করে সাহিল।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
পুলিশ জানাচ্ছে, সাহিল গেহলত তার বান্ধবী নিক্কি যাদবকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি খুন করে। আসলে নিক্কি জানতে পেরে যান যে সাহিল অন্য মহিলাকে বিয়ে করতে চলেছে। সেই ঘটনাকে ঘিরে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। সেই সময়েই সাহিল মোবাইল চার্জারের কেবল দিয়ে খুন করে নিক্কিকে।
গাড়িতে খুন
সাহিল তার গাড়িতেই পুরো ঘটনাটি ঘটায়। এরপর কয়েক ঘণ্টা ধরে গাড়িতে করে নিক্কির মৃতদেহ নিয়ে ঘোরাঘুরি করে এবং তারপর বাবা হরিদাস থানার কাছে একটি ধাবায় পৌঁছায়। সেইসময় ধাবাটি বন্ধ ছিল। সে ধাবার একটি বড় ফ্রিজে দেহটি রেখে সেখান থেকে চলে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর সাহিল নিজের বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করে। সেই রাতে বিয়েও করে নেয় সে। পর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই ধাবাটি অভিযুক্ত সাহিলেরই।
২৮ নভেম্বর ২০২২, অঞ্জন দাস হত্যাকাণ্ড
দিন কয়েক আগে এই ধরণের আরও একটি ঘটনা রাজধানীজুড়ে ফেলে দেয় চাঞ্চল্য। ঘটনাটি ঘটে পান্ডব নগরে। পুলিশ ক্রমাগত রামলীলা ময়দান থেকে ক্রমাগত মানবদেহের অংশ পাচ্ছিল, যা নিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশায় ছিলেন তদন্তকারীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। প্রায় ৫ মাস তদন্তের পর রহস্যের পর্দা ফাঁস করে পুলিশ।
ঠিক কী হয়েছিল?
পুলিশ জানায়, পাণ্ডব নগরের রামলীলা ময়দানে পাওয়া দেহের টুকরোগুলি অঞ্জন দাস নামে এক ব্যক্তির। তিনি বিহারের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর স্ত্রী পুনম ও ছেলে দীপক এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশ জানায়, দীপকের স্ত্রী ও বোনের ওপর খারাপ নজর ছিল অঞ্জনের। তাই অঞ্জনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে দীপক ও পুনম। প্রথমে অঞ্জনকে ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর তাঁর গলা কেটে হত্যা করা হয়। মৃতদেহ ১০ টুকরো করে রেখে দেওয়া হয় ফ্রিজে। শ্রদ্ধাকাণ্ডের মতো এক্ষেত্রেও প্রতিদিন রাতে দেহাংশগুলি লোপাট করত পুনম ও দীপক।
আরও পড়ুন - একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে প্রেমিককে খুন মহিলার, কীভাবে রহস্য ভেদ?