উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া জেলা থেকে উঠে এল এক হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। স্ত্রীর মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন এক যুবক। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তি মোহিত যাদব, পেশায় একজন ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার, যিনি একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। আত্মহত্যার আগে মোহিত একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন, যা থেকে তার কষ্ট এবং আত্মহত্যার কারণ স্পষ্টভাবে বোঝা যায়।
স্ত্রীর বিরুদ্ধে হুমকি, জোর করে সম্পত্তি হস্তান্তরের অভিযোগ
মোহিতের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী প্রিয়া যাদব এবং তার পরিবার তার উপর মানসিক নির্যাতন চালাতে শুরু করে। স্ত্রী তাকে জোর করে সম্পত্তি নিজের নামে করে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এমনকি স্ত্রী হুমকি দিয়েছিল, যদি সে না মানে, তাহলে তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌতুক মামলা দায়ের করবে। ভিডিও বার্তায় মোহিত দাবি করেন, প্রিয়ার মা তাদের অনাগত সন্তানের গর্ভপাত করিয়েছেন এবং গয়না ও শাড়িও আত্মসাৎ করেছেন।
ভিডিও বার্তায় হতাশার প্রকাশ
মোহিত তার শেষ ভিডিও বার্তায় বলেন, “যখন তোমরা এই ভিডিও দেখবে, আমি এই পৃথিবীতে থাকব না। হায়! যদি ছেলেদের জন্যও কিছু আইন থাকত, তাহলে আমি এই ভুল পদক্ষেপ নিতাম না। আমি এই মানসিক নির্যাতন আর সহ্য করতে পারছি না। মা-বাবা, আমাকে ক্ষমা করো।”
আত্মহত্যার আগে হোটেলে গিয়ে শেষ সিদ্ধান্ত
ইটাওয়ার জলি হোটেলে ১০৫ নম্বর ঘরে ওঠেন মোহিত। পরদিন অনেকক্ষণ কেটে গেলেও কোনো সাড়া না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পরিবারের অভিযোগ
মোহিতের ভাই তারান প্রতাপ জানান, প্রিয়া বিয়ের পর থেকে তার ভাইকে পরিবারের থেকে আলাদা করে ফেলে এবং সম্পত্তি নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি প্রিয়ার মা ও ভাই একাধিকবার মোহিত ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেয়।
পুলিশ কী বলছে?
এসপি সিটি অভয় নাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন,
“ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে এবং আত্মীয়দের বক্তব্য সংগ্রহ করে বিস্তারিত তদন্ত চালানো হচ্ছে। তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”