Advertisement

Cyber Fraud Case: সিম কার্ড হারিয়েছে, হেয়ার স্ট্রিট থানায় ভুয়ো অভিযোগ, গায়েব সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা, কীরকম?

ফের শহর কলকাতায় সিম জালিয়াতির অভিযোগ। আর তাতেই উধাও হল প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা। সম্প্রতি এই নিয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আর তাতেই পুরো ঘটনাটি সামনে এসেছে। অভিনব বিষয় হল জালিয়াতরা এবার নতুন এক পন্থা অবলম্বন করেছিল। গ্রাহক জানতেনই না যে, তাঁর নামে মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ড হারিয়ে যাওয়ার জেনারেল ডায়েরি করা হয়েছে থানায়। সেই জিডি-র কাগজ দেখিয়েই তুলে নেওয়া হয়েছিল গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ফোন নম্বরের ‘ডুপ্লিকেট সিম কার্ড’।

আপনার সিম কার্ড হারিয়েছে পুলিশে জানিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা গায়েব, শহরে জালিয়াতির নতুন পন্থা
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 16 Mar 2023,
  • अपडेटेड 10:47 AM IST

ফের শহর কলকাতায় সিম জালিয়াতির অভিযোগ। আর তাতেই উধাও হল প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা। সম্প্রতি এই নিয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আর তাতেই পুরো ঘটনাটি সামনে এসেছে। অভিনব বিষয় হল জালিয়াতরা এবার নতুন এক পন্থা অবলম্বন করেছিল। গ্রাহক জানতেনই না যে, তাঁর নামে মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ড হারিয়ে যাওয়ার জেনারেল ডায়েরি করা হয়েছে থানায়। সেই জিডি-র কাগজ দেখিয়েই তুলে নেওয়া হয়েছিল গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ফোন নম্বরের ‘ডুপ্লিকেট সিম কার্ড’। হাতিয়ে নেওয়া হয় গ্রাহকের ইমেল আইডি-ও।  এর পরে ফোন নম্বর এবং ইমেল আইডি ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া হয়  গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নতুন ডেবিট কার্ড। তারপরেই হাতিয়ে নেওয়া হয় প্রায় সাত লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা।

হেয়ার স্ট্রিট থানায় দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছে কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখা। গত ২২ ফেব্রুয়ারি এই  নিয়ে অভিযোগ দেবরাজ দত্ত নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় পুলিশ বিশ্বজিৎ মজুমদার ও দীপঙ্কর ঘোষাল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। বিশ্বজিতের বাড়ি বনগাঁয়। দীপঙ্কর মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা। 


জানা যাচ্ছে তুলে নেওয়া  টাকার মধ্যে চার লক্ষ ২০ হাজার গিয়েছিল বিশ্বজিতের অ্যাকাউন্টে। তবে দীপঙ্কর ঘোষাল  ডেবিট কার্ড ডেলিভারি নিয়েছিল। ধৃত দু’জন ছাড়াও এই চক্রে আরও কয়েক জন জড়িত বলে তদন্তকারী গোয়েন্দাদের অনুমান। লালবাজারের সাইবার শাখার গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে  প্রতারণার এমন ফাঁদ পাততে সমাজের যে কোনও স্তরের মানুষকে নিশানা করা হচ্ছে। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে সতর্ক নন। আর তারই ফল ভুগতে হচ্ছে।

কখনও কোনও দোকান বা মলে গিয়ে নাম, ফোন নম্বর এবং ইমেল আইডি লিখে আসছে জনতা। কখনও ‘ফিডব্যাক ফর্ম’-এপ নামে চাওয়া হয় বাড়ির ঠিকানা থেকে জন্মের তারিখ। এর সঙ্গে রয়েছে রাস্তার কিয়স্ক বা শপিং মল থেকে বিশেষ ছাড়ে সিম কেনার প্রবণতা।তদন্তকারীরা দেখেছেন, এমন কিয়স্কে বা সিম কার্ডের দোকানে কাজ করা অনেকেই সাইবার-প্রতারণায় জড়িত। কেউ সিম কার্ড কেনার জন্য আধার কার্ড নিয়ে এলে সেটির ছবি তুলে রাখা হয়। পরে সেই ছবি বিক্রি করে দেওয়া হয় প্রতারকদের কাছে। তা দিয়েই তোলা হয় ‘প্রি-অ্যাক্টিভেটেড’ সিম কার্ড। এছাড়াও , আরও একটি পদ্ধতিতে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠান বা ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তার নাম এবং ইমেল আইডি জোগাড় করা হচ্ছে। এর পরে সেই ইমেলে হয় ব্যাঙ্কের নাম করে, অথবা কোনও বিমা সংস্থা বা অন্য কোনও ভাবে লাগাতার মেল পাঠানো হচ্ছে। এই ভাবেই জেনে নেওয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তির মোবাইল নম্বর-সহ নানা ব্যক্তিগত তথ্য। এর পরে ওই ব্যক্তির নামে থাকা সিম কার্ড হারিয়ে গিয়েছে বলে থানায় ভুয়ো অভিযোগ করা হচ্ছে।  সেই অভিযোগপত্র এবং একটি আবেদন নিয়ে গিয়ে টেলিকম সংস্থার কাছ থেকে তোলা হচ্ছে ডুপ্লিকেট সিম কার্ড! আসল ব্যক্তি যত ক্ষণে বুঝতে পারছেন, তত ক্ষণে সেই  নম্বর দিয়ে প্রতারণার কাজ সারা হয়ে যাচ্ছে। প্রতারিত ব্যক্তি জানতেই পারছেন না তাঁর ফোন নম্বরটি হঠাৎ কেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement


লালবাজার সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে মূলত তিনটি প্রয়োজনে এমন জালিয়াতি চালানো হচ্ছে। যে কোনও তদন্তে অন্যতম সূত্র মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান বা কল ডিটেলস রেকর্ড। যা সাধারণত সিম কার্ডের মাধ্যমেই বোঝা সম্ভব। সেটাই যাতে বন্ধ করে দেওয়া যায়, তাই অন্যের নামে সিম কার্ড সক্রিয় করে কাজ সারতে চাইছে প্রতারকেরা। দ্বিতীয়ত, টাকা হাতিয়ে নেওয়া হলে দেখা হয়, সেটি কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা ই-ওয়ালেটে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত থাকে ফোন নম্বর। ই-ওয়ালেট ফোন নম্বর ছাড়া খোলাই সম্ভব নয়। সেই নম্বরের সূত্র ধরে যাতে পুলিশ প্রতারকের নাগাল না পায়, তাই চালানো হচ্ছে অন্যের নামে সিম তোলার জালিয়াতি। তৃতীয় প্রয়োজনটি সব চেয়ে ভয়ঙ্কর। কাউকে ঠকানোর সময়ে সেই ব্যক্তিকে বুঝতেই না দিতে এবং তাঁর ফোনের আগাম দখল পেতে, তাঁর অজানতেই বার করে নেওয়া হচ্ছে তাঁর নামের ডুপ্লিকেট সিম। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে প্রতারকদের পুলিশের জালে পড়তে হয়েছে ডেবিট কার্ডটি নিজেদের ঠিকানায় ডেলিভারি নেওয়ায়।

কীভাবে বাঁচবেন এইসব ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের হাত থেকে? কীভাবে সতর্ক হবেন? রইল টিপস।
বিভিন্ন ভাবে ফাঁদ পাতে ব্যাঙ্ক জালিয়াতরা। কখনও ছলেবলে কৌশলে জানতে চাওয়া হয় এটিএম পিন, কখনও পাঠানো হয় মেসেজ লিঙ্ক। যেখানে একবার ক্লিক করে ফেললেই সর্বনাশ। সেই সব ভুয়ো মেসেজকে দেখতে এতটাই আসলের মতো, যে ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক। 

মেসেজে ফাঁদ
ইদানীং বাড়ছে লিঙ্ক পাঠিয়ে বাড়ছে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি। রাতদিন আমাদের মোবাইলে ঢোকে কতশত মেসেজ। যত বেশি মোবাইল ব্যবহার, যত বেশি মোবাইলে অ্যাপ, ততই মেসেজ উপচে যাবে বিভিন্ন সংস্থা, বিপণীর পাঠানো মেসেজে। তার ফাঁকে কোনটা আসল, কোনটা নকল চেনা খুবই কঠিন। ইদানীং তো ব্যাঙ্কিং থেকে শুরু করে লেনদেন, সমস্ত কিছুই মোবাইল। ফলে মোবাইল নম্বরে ব্যাঙ্ক থেকে মেসেজ আসাটাও খুব স্বাভাবিক। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে জালিয়াতেরা। ব্যাঙ্ক থেকে আসা মেসেজের মতো হুবহু দেখতে জালি মেসেজ তারা পাঠাচ্ছে বিভিন্ন মানুষের লিঙ্ক। তার ফাঁকেই গুঁজে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন লিঙ্ক, যা একবার ক্লিক করলেই শেষ। আপনার ফোনের সমস্ত অ্যাকসেস মুহূর্তের মধ্যে চলে যাবে জালিয়াতদের হাতে। আপনার মোবাইলে থাকা ডেটা, ব্যক্তিগত তথ্য থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত সমস্ত গোপনীয় তথ্য পৌঁছে যাবে তাদের হাতে। যা ব্যবহার কর তারা সরিয়ে নিতে পারে আপনার ব্যাঙ্কে জমানো সমস্ত টাকা। শুধু কি মোবাইবল মেসেজ, ইদানীং হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমেও পাঠানো হচ্ছে এমনই বিপজ্জনক সব লিঙ্ক। তাই মেসেজে ক্লিক করার আগেই সতর্ক হোন।

Advertisement

​মেসেজের নাম ও নম্বর
মেসেজ খোলার আগে তার নাম ও নম্বর খেয়াল করুন সবার আগে। সেই মেসেজটি ভুয়ো কিনা বোঝার প্রথম শর্ত কিন্তু সেটাই। ব্যাঙ্ক কখনও কোনও প্রাইভেট নম্বর থেকে মেসেজ করে না। আর এ কথাটা মনে রাখা প্রয়োজন। ফলে পার্সোনাল লুকিং নম্বর থেকে মেসেজ এলেই সতর্ক হোন।

লিঙ্ক হইতে সাবধান
ব্যাঙ্ক সচরাচর লিঙ্ক পাঠিয়ে কোনও কাজ করার নির্দেশ দেয় না। হয় তারা কোনও কন্ট্যাক্ট পার্সনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়, নয়তো স্টেপ বাই স্টেপ ইনস্ট্রাকশন শিট পাঠায়। একমাত্র পেমেন্টের সময় ইউপিআই লিঙ্ক পাঠাতে পারে ব্যাঙ্ক। নতুবা নয়। ফলে কোনও ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করার আগে ভালো করে খতিয়ে দেখুন, আদৌ তা আসল কিনা। প্যানের সঙ্গে আধার যোগ করতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে- এই ধরনের মেসেজের ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে যান আগেভাগেই। 

​বাক্য গঠনে ব্যাকরণ মানা হয় না
ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের ব্যাকরণের দৌড় সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাক্য গঠনে বা ব্যাকরণে ভুল থেকে যায় জালিয়াতদের মেসেজে। আর সেই ভুল যদি আপনি ধরে ফেলতে পারেন, তাহলে সাবধান হয়ে যান। কারণ ভুয়ো মেসেজ চেনার ক্ষেত্রে কিন্তু এটি একটি মোক্ষম অস্ত্র।  

​হুমকিতে ভয় পাবেন না
বহু সময়েই জালিয়াতেরা ব্যাঙ্ককর্মী সেজে ফোন করে, এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হয় গ্রাহকদের। মেসেজ বা মেলের মাধ্যমেও আসে এমন হুমকি। এমনকী গ্রাহকদের রিচার্জ করার জন্যও চাপ দিতে থাকে জালিয়াতেরা। তবে সেইসব মেসেজ বা হুমকি ফোনে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। 

YouTube Fraud: ইউটিউবকে সামনে রেখে চলছে জালিয়াতি
আজকাল সফটওয়্যার বা গ্যাজেট চালাতে না জানলেই ইউটিউবের দ্বারস্থ হই আমরা। বেশিরভাগ লোকজনই এখন ইউটিউবের মাধ্যমে কোনও বিষয় বুঝে নিতে চান। গ্রাহকদের ইউটিউবের প্রতি এই আস্থাকেই কাজে লাগাচ্ছে প্রতারকরা। আপনিও যদি ইউটিউবে প্রচুর টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখে থাকেন, তাহলে এখনই সতর্ক হোন। কারণ হ্যাকাররা এই ভিডিওগুলির অছিলায় আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করছে।  

 কীভাবে ইউটিউবের মাধ্যমে হয় এই জালিয়াতি ?
আপনি যখন একটি টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখেন ,তখন আপনাকে নিচের বিবরণে সেই অ্যাপ বা সফ্টওয়্যারটির একটি লিঙ্ক দেওয়া হয়। যাতে আপনি সহজেই এটি ডাউনলোড করতে পারেন। এই লিঙ্কগুলিতে হ্যাকাররা ম্যালওয়্যার লুকিয়ে রাখে যা আপনার সিস্টেমে ইনস্টল হয়ে যায়।  তারপরে তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ব্যাঙ্কের বিবরণ ইত্যাদি চুরি করে। বিশেষ করে এই ভিডিওগুলির মাধ্যমে কোনও সফ্টওয়্যার বা অ্যাপের ক্র্যাক সংস্করণ খোঁজে ব্যবহারকারীরা। কিছু লোক আসল সফটওয়্যারের দাম বেশি হওয়ায়, তা কিনতে চান না। সেই ক্ষেত্রে তারা ইউটিউব থেকে সফ্টওয়্যারটির ক্র্যাকড সংস্করণ ডাউনলোড করার উপায় খোঁজেন। কৌতূহলীদের এই আগ্রহকেই কাজে লাগায় ঠগবাজরা। এখান থেকেই জালিয়াতি শুরু হয়। 
 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement