গোয়ার চার বছরের শিশুর হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। মৃতের মা সূচনা শেঠের দাবি, সে ছেলেকে খুন করেনি। যদিও পুলিশ সূচনার কথা বিশ্বাস করছে না। এক পুলিশকর্তা জানান, সূচনা হয়তো স্বামীর প্রতি ঘৃণাবশত সন্তানকে খুন করে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংস্থার CEO সূচনাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জেরা শুরু করে। তদন্তকারীরা কার্যত নিশ্চিত ছিল, সূচনাই খুন করেছে তার ছেলেকে। তবে পুলিশি জেরার সূচনা পাল্টি খায়। পুলিশকে সে জানায়, যখন সে জেগে ওঠে তখন দেখে তার ছেলে মারা গেছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'অভিযুক্ত সুচনা শেঠের তত্ত্বের সঙ্গে আমরা একমত নই। আরও তদন্ত করলে ওই শিশুকে হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য জানা যাবে। তদন্তকারীরা মনে করছে, এখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছে অভিযুক্ত মহিলা ও তার স্বামী দুজনেই আলাদা থাকত। সূচনা হয়তো স্বামীর প্রতি ঘৃণাবশত সন্তানের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছে। অভিযুক্তকে পানাজির কাছে মনোরোগ ও মানব আচরণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা চলছে।'
৩৯ বছর বয়সী সূচনা গোয়ার ক্যান্ডোলিমে একটি অ্যাপার্টমেন্টে তার ছেলেকে খুন করে বলে অভিযোগ। সম্ভবত শনিবার থেকে সেই অ্যাপার্টমেন্টে থাকছিল সে। এরপর সোমবার হোটেল ছাড়ে। দেহটি একটি ব্যাগে ভরে ট্যাক্সি করে কর্ণাটকে যায়। সোমবার রাতে কর্ণাটকের চিত্রদুর্গা থেকে তাকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার গোয়ায় আনা হয়। সূচনা এখনও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
গোয়ার সেই অ্য়াপার্টমেন্টে তল্লাশিও চালিয়েছে পুলিশ। সূচনা যে ঘরে ছিল সেখানে দুটি কাশির খালি সিরাপের বোতল মিলেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সেখানেই সূচনা তার ছেলেকে খুন করে। সেই কাফ সিরাফ দিয়েই সূচনা ছেলেকে অচৈতন্য করেছিল।
কিন্তু সূচনা যেহেতু অস্বীকার করছে তাই তার মনস্তাত্ত্বিক গতিবিধির পরীক্ষা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের যে রিপোর্ট তা থেকে কার্যত স্পষ্ট, ওই শিশুকে কোনও বস্তু দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন,শিশুটিকে হয়তো তোয়ালে বা বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়েছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টের কর্মীদের একটি কাফ সিরাফ আনতে বলেছিলেন সূচনা। আর একটি যে বোতল উদ্ধার হয়েছে তা সম্ভবত সূচনাক কাছে আগে থেকেই ছিল। তবে ছেলেকে খুনের পর সূচনা নিজেও আত্মহত্য়ার চেষ্টা করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত মহিলা জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা অস্বীকার করেছ। সূচনা জানিয়েছে, ঘুম থেকে ওঠার পর সে দেখে তার ছেলে মারা গেছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, 'আমরা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। তদন্ত হল নিয়মিত প্রোটোকলের অংশ। সেটাও চলছে। আশা করছি খুব শিগগিরই আমরা একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারব।'
পুলিশ জানিয়েছে, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরে আসেন সূচনার স্বামী রমন। মঙ্গলবার রাতে তিনি চিত্রদুর্গার হিরিউরে পৌঁছে ছেলের মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। সূচনা পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে।