রাজধানী নয়াদিল্লির 'শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলা' মানুষ এখনও ভুলতে পারেনি। এর মাঝেই ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ থেকে একই রকম হৃদয় বিদারক ঘটনা সামনে এসেছে। জেলার বোরিওতে ২২ বছর বয়সী এক আদিবাসী তরুণীকে কাটার দিয়ে ১২ টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আর কেউ নন, তার স্বামী দিলদার আনসারি। বলা হচ্ছে প্রায় দুই বছর ধরে দুজনে একসঙ্গে থাকছিলেন।
বোরিও থানা পুলিশ জানিয়েছে যে শনিবার সন্ধ্যায় সাঁথালি মোমিন টোলা এলাকার কাছাকাছি একটি মাটির বাড়ি থেকে ১২টিরও বেশি টুকরো করা মহিলার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার গলাসহ শরীরের উপরের ভাগের অনেক অংশ এখনো পাওয়া যায়নি। যার সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
এসপি অনুরঞ্জন কিসপোত্তার মতে, মৃতের নাম রুবিকা পাহাড়িয়া (২২ বছর), বোরিও এলাকার গোন্ডা পাহাড়ের বাসিন্দা। স্বামী দিলদার আনসারি (২৫ বছর) তাকে খুন করেছে। নিহত তরুণী আদিম পাহাড়িয়া উপজাতির, আর অভিযুক্ত একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের। গত দুই বছর ধরে দুজনেই এক ছাতার নীচে বসবাস করছিলেন। অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
দিলদারের দ্বিতীয় স্ত্রী রুবিকা
এসপি আরও জানান, রুবিকা পাহাড়িয়া ছিলেন দিলদার আনসারির দ্বিতীয় স্ত্রী। গত ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা একে অপরকে চেনেন। গত কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন রুবিকা। তার পরিবার নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করতে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করেছিল।
কুকুর পা টানছিল, তখ নজরে আসে
শনিবার সন্ধ্যায়, মমিন টোলার লোকেরা অঙ্গনওয়াড়ি ভবনের পিছনে একটি কুকুরের পাল দেখতে পায়, যারা মাংসের টুকরো আঁচড়াচ্ছিল। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, মাংসের টুকরোগুলো (পা) মানুষের শরীরের। গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেয়। তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ সদস্যরা একটি তালাবদ্ধ বাড়িতে যায়, যেখানে একটি মহিলার বিকৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
কাটার দিয়ে কাটা মৃতদেহ
মহিলার দেহের ১২টিরও বেশি টুকরো পাওয়ার পর পুলিশের সন্দেহ, হত্যার পর লাশটি ইলেকট্রিক কাটারের মতো ধারালো হাতিয়ার দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। নিহতের পরিচয় জানার পর গভীর রাতে তার স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। এখন পুরো বিষয়টি নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
হেমন্ত সোরেন সরকারকে আক্রমণ করেছে বিজেপি
আদিবাসী মহিলা খুনের ঘটনায় উত্তাল ঝাড়খণ্ডের রাজনীতি। হেমন্ত সোরেন সরকারকে দায়ী করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র প্রতুল শাহদেব বলেছেন, দিলদার আনসারি সম্প্রতি এই নিরীহ আদিবাসী মেয়েটিকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছিলেন। হেমন্ত সরকারের আমলে মেয়েদের প্রতি অত্যাচার বেড়েছে। সংখ্যালঘু সমাজের কিছু হতাশ মানুষ প্রতিনিয়ত মেয়েদের টার্গেট করছে। কিন্তু সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সরকার সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নিলে আমরা রাজপথে নেমে সরকারকে যোগ্য জবাব দেব।