রমরমিয়ে চলছিল অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা। আর সেই অস্ত্র হাত ঘুরে ঢুকছিল পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে। তদন্তে নেমে একেবারে বাঘের ডেরায় পৌঁছে গেল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। একেবারে হাতেনাতে অস্ত্র 'কারিগর'দের পাকড়াও করলেন কলকাতা পুলিশের দুঁদে অফিসাররা। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি। আপাতত দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অপারেশনের সময় কারখানার ভিতরেই অস্ত্র তৈরি করছিল দুই ধৃত।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২০ জুন ভোররাতে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ও ঝাড়খণ্ড এটিএস যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার গন্ধীনগর থানার জাড়িদিহ উপ্পার বাজার এলাকায় পৌঁছে যান পুলিশ অফিসাররা। সেখানে একটি বাড়ি ও একটি গুদাম ঘরে অভিযান চালানো হয়। পাওয়া যায় একাধিক আধা-তৈরি অস্ত্র এবং অস্ত্র তৈরির যন্ত্রপাতি। এগুলি যে অস্ত্র তৈরির আঁতুড়ঘর, তা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি পুলিশ আধিকারিকদের।
ঘটনাস্থল থেকে যা-যা উদ্ধার হয়েছে, তার লিস্ট রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে
৬টি আধা-সম্পূর্ণ পিস্তল
৯টি পিস্তলের বডি
৬টি পিস্তলের স্লাইডার
১৩টি পিস্তলের ব্যারেল প্লেট
৩টি স্ক্র্যাপ প্লেট
১টি লেদ মেশিন
১টি মিলিং মেশিন
১টি ড্রিল মেশিন
১টি গ্রাইন্ডিং ও পলিশিং মেশিন
বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল
নগদ প্রায় ১,০০,০০০ টাকা
ড্রিল বিট, গ্রুভিং মেশিন, স্কেল, জিরোয়িং মেশিন ইত্যাদি উদ্ধার হয়েছে।
দুই ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরেছে পুলিশ
কেশব কুমার (৩৫) এবং প্রভেন কুমার (৫৩) নামের দুই ব্যক্তিকে কারখানায় অস্ত্র তৈরির সময়ে হাতেনাতে ধরে পুলিশ। দু'জনেই আদতে বিহারের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
চলছে ধারাবাহিক অভিযান
এই নিয়ে এটি কলকাতা পুলিশের এসটিএফ-এর ১৮তম এমন অভিযান। গোপন সূূত্র মারফত খবর পেয়ে, তার ভিত্তিতে এই আন্তঃরাজ্য অভিযান চালানো হয়। গত তিন বছরে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে একের পর এক এমন অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশ। আধিকারিকরা বলছেন, প্রতিবেশী রাজ্যগুলির অস্ত্র কারখানা বন্ধ না হলে তা বাংলার নিরাপত্তাও বিঘ্নিত করছে। আগামিদিনেও এমন অভিযান জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।