ট্রলি-কাণ্ডে পরতে পরতে রহস্য। ক্রমাগত উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মধ্যমগ্রাম থেকে ট্রলি ব্যাগে দেহ পুরে মঙ্গলবার সকালে কুমোরটুলিতে আসেন মা ও মেয়ে। আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষ ঠান্ডা মাথার খুনী বলে দাবি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ইট দিয়ে পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষের মাথা, মুখ এবং ঘাড়ে আঘাত করেছিলেন ফাল্গুনী, সেটি উদ্ধার করা গিয়েছে। ওই ইট বাড়ির বাইরে বাগানে ফেলেন ফাল্গুনী। দেহ থেকে যাতে পচ গন্ধ না বের হয় তাই স্প্রে কিনেছিলেন তাঁরা।
ছুরি- কাঁচি চালাতে পারদর্শী মা আরতি ঘোষ
জানা যায়, ছুরি- কাঁচি চালাতে পারদর্শী ছিলেন মা আরতি ঘোষ। এক সময়ে হাসপাতালে কাজ করতেন তিনি। ট্রলিতে দেহ ঢোকাতে গিয়ে তা ছোট পড়ায় দেহ দুই পায়ের নীচের অংশ বঁটি দিয়ে কেটে ফেলে। দুই পায়ের গোড়ালিও কেটে ফেলা হয়। সেই বঁটি ফেলা হয় পুকুরে। এরপর দেহ কোথায় ফেলা হবে, তা রেইকি করতে বেরোন মা-মেয়ে। এরপরই কলকাতায় আসেন।
কুমোরটুলি ঘাটে কেন?
পুলিশ সূত্রে খবর, আরতি ঘোষের স্বামী আগে আহিরীটোলা অঞ্চলে থাকতেন। এই অঞ্চলটি তার পরিচিত। যে জন্য কুমোরটুলি ঘাটেই তারা দেহ ফেলতে আসেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। খুনের পর মধ্যমগ্রাম থেকে ১৩০ টাকা দিয়ে ভ্যান ভাড়া করে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দু’জনে প্রথমে বারাসাত দোলতলা মোড়ে আসে। সেখান থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে এসে পৌঁছয় কুমোরটুলিতে।
ভাড়াবাড়িতে রক্তের দাগ
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত ফাল্গুনীকে নিয়ে মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লীতে তাঁর ভাড়াবাড়িতে গিয়েছিল কলকাতার নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ। ফরেন্সিক দলও ছিল। বাড়ি থেকে ২০টি জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ভাড়াবাড়ির অন্তত পাঁচটি জায়গা থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। মৃতের মোবাইল, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং ভ্যানিটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। মা ও মেয়ের মোবাইলও উদ্ধার হয়েছে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে কোথায় কোথায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে?
কুমোরটুলি কাণ্ডে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মৃতদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ডান ঘাড়, ডান বাহু, ডান হাত, বাম হাত এবং বাহুতে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। মাথার বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। উভয় পায়ের গোড়ালিতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাথার খুলি এলাকায় রক্ত জমাট বাঁধার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের সময় থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান।