ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার তালুর গ্রামে এক অদ্ভুত জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কংগ্রেস নেতার পরিবারের তিনজন মহিলার পাশাপাশি বলিউড অভিনেত্রী ও প্রাক্তন পর্ন তারকা সানি লিওনির নামেও ‘মাহতারি বন্দন যোজনা’র টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই যোজনা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল বিবাহিত মহিলাদের জন্য, অথচ সানি লিওনির মতো ধনী এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব কীভাবে এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেন, তা রীতিমতো হতবাক করেছে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষকে।
প্রথমে কীভাবে বিষয়টি সামনে এল
বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে যখন অভিযোগ পাওয়া যায় যে সানি লিওনির নামে মাহতারি বন্দন যোজনার অধীনে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা তোলা হচ্ছে। অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, এই টাকা তালুর গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বেদমতি যোশীর আইডি ব্যবহার করে তোলা হয়েছে। তবে আরও তদন্তে প্রকাশ পায় যে বীরেন্দ্র যোশী নামে এক ব্যক্তি এই জালিয়াতি করেছেন।
জালিয়াতির পদ্ধতি
বীরেন্দ্র যোশী জালিয়াতি করে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করেছেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কর্মী এবং তৎকালীন সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে। তাদের অবহেলা এবং দুর্নীতির কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রশাসন ধারণা করছে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঘটনা জানার পরই বস্তারের কালেক্টর হারিস এস সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দেন। তিনি নির্দেশ দেন:
জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করতে।
অভিযুক্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ।
কর্মী ও সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
জেলা প্রোগ্রাম অফিসার জানিয়েছেন, বীরেন্দ্র যোশীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মাহতারি বন্দন যোজনার উদ্দেশ্য
২০২৪ সালে ছত্তিশগড় সরকার এই প্রকল্পটি চালু করে। এই যোজনার মাধ্যমে দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা, ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা এবং ২১ বছরের ঊর্ধ্বে বিবাহিত মহিলাদের প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। তবে এই ধরনের প্রকল্পে জালিয়াতির ঘটনা প্রকল্পটির বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
জালিয়াতির প্রভাব
এই ঘটনাটি শুধু একটি প্রকল্পের অপব্যবহার নয়, বরং সরকারের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলোকেও সামনে এনেছে। এমন একটি প্রকল্প, যার উদ্দেশ্য দুর্বল মহিলাদের আর্থিক সহায়তা করা, তা যদি দুর্নীতির শিকার হয়, তাহলে প্রকৃত উপকারভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।